আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ষৎ লুকের দলের ব্যাঙ্কের কান্ডারিদের নামে এইসব কি লিখালিখি হয়? সুবহানাল্লাহ!



প্রথমালুর দুষ্টুরা ষৎ লুকজনের নামে এইসব কি লেখে? কেয়ামত নজদিক! সূর্য কালকেই পচ্চিম দিকে উঠবে। মাটি ফাইটা পানি আর আসমান ফাইটা আগুন পড়বে। খোদার আরশ কাপিতেছে রে ভাইডি কাপিতেছে!!! ইসলামী ব্যাংকে পরিচালকদের নানা অনিয়ম নানা অজুহাতে আমানতের টাকায় বিদেশ ভ্রমণ মনজুর আহমেদ নানা উপলক্ষ বের করে ব্যাংক আমানতের টাকায় অনৈতিকভাবে বিদেশ ভ্রমণ করেছেন ইসলামী ব্যাংকের পরিচালকেরা। রেমিট্যান্স বা প্রবাসী-আয় বাড়ানোর তৎপরতা, সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, পুরস্কার নেওয়ার জন্য বছরের পর বছর ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে পরিচালকেরা ঘুরে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন দেশে। ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু নাসের মোহাম্মদ আব্দুজ যাহের ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম ফরিদউদ্দিন আহমদ নিউইয়র্কভিত্তিক ‘গ্লোবাল ফাইন্যান্স পুরস্কার-২০০৮’ আনতে গত বছরের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য যান।

এক দিনের এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে এমডি বিদেশে থাকেন ১১ দিন, আর চেয়ারম্যান ২১ দিন। দুজনের ভ্রমণে ব্যয় হয়েছে ১৯ লাখ টাকা। পরিচালনা পর্ষদের যে সভায় এই ভ্রমণ অনুমোদিত হয়, সেখানে চেয়ারম্যানকে বাংলাদেশিদের সঙ্গে আলোচনার জন্য কানাডায় যাওয়ারও অনুমোদন দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১ ও ২ মার্চ ব্যাংকটিতে এই বিশেষ পরিদর্শনকাজ চালায় বলে জানা গেছে।

যোগাযোগ করা হলে আব্দুজ যাহের দাবি করেন, ইসলামী ব্যাংক কোনো দিন তদারকি সংস্থার কোনো নির্দেশ অমান্য করেনি। গ্লোবাল ফাইন্যান্স পুরস্কার নিতে তাঁরা গিয়েছিলেন ব্যাংকের পর্ষদ সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডির সার্কুলারের কোথাও ব্যাংকের পরিচালকেরা ব্যাংকের টাকায় বিদেশ যেতে পারবেন না, এমন কথা নেই। এর আগেও আমানতের টাকায় ব্যাংকের পরিচালকদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০০৮ সালের প্রথম দিকে এমডিকে ডেকে এনে সতর্ক করে দিয়েছিল। সুত্র জানায়, ২০০২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে ব্যাংকটিতে বিদেশ ভ্রমণে পরিচালকদের ব্যয় ছিল প্রায় দুই কোটি টাকা।

সে সময় বিদেশি পরিচালকেরাও বাংলাদেশে পর্ষদের সভায় যোগ দিতে প্রচুর পরিমাণে অর্থ খরচ করেন। সে সময় নয়জন সাবেক বিদেশি পরিচালক পর্ষদের সভায় যোগ দিতে এসে খরচ করেন এক কোটি ১৫ লাখ টাকারও বেশি অর্থ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক বিশেষ তদন্ত প্রতিবেদনে ১১ জন পরিচালকের সবাই ব্যাংকের খরচে সময় সময় বিদেশ ভ্রমণ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বেশি অর্থ খরচ করেছেন আব্দুজ যাহের, মমিনুল ইসলাম পাটওয়ারী, কাজী হারুন-অর-রশিদ, শহিদুল ইসলাম ও এ কে এম সদরুল ইসলাম। বিশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, আব্দুজ যাহের ব্যাংকটিতে চেয়ারম্যান ও পরিচালক থাকাকালে ২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিদেশ ভ্রমণ খাতে খরচ করেছেন প্রায় ৫০ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও প্রধান নির্বাহীদের দায়দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা সম্পর্কে বিধি আরোপ করে ২০০৩ সালে। সেখানে পর্ষদ, চেয়ারম্যান ও ব্যাংক ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এমডি) দায়িত্ব ও কর্তব্য সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে। এই বিধি অনুসারে ব্যাংকের ব্যয়ে প্রবাসী-আয় দেশে আনতে সংগঠিত করা, শাখা স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাইসংক্রান্ত বিষয়ে বিদেশ ভ্রমণ করার কোনো সুযোগ ব্যাংকের চেয়ারম্যান বা পরিচালকদের দেওয়া হয়নি। কিন্তু চেয়ারম্যান ও এমডিকে গ্লোবাল ফাইন্যান্স পুরস্কার আনতে গিয়ে পর্ষদ আরও যে তিনটি দায়িত্ব দেয়, সেগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত এক্সচেঞ্জ হাউস বা ব্যাংকের সঙ্গে প্রবাসী-আয় আনার ব্যবসার চুক্তি করা, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংকের সঙ্গে সভা করা এবং নিউইয়র্কে ইসলামী ব্যাংকের শাখা স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা। এ ছাড়া ব্যাংকটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধি লঙ্ঘন করে বিশেষ কমিটি গঠন, ব্যাংকের গাড়ি কয়েকজন পরিচালক নিজস্ব সম্পত্তির মতো করে ব্যবহার করার তথ্য-উপাত্ত পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শকদল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধি অনুসারে, জরুরি বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য কোনো ব্যাংকের পর্ষদের পরিচালকদের সমন্বয়ে নির্বাহী কমিটি গঠন করা যায়। এই নির্বাহী ও অডিট কমিটি ছাড়া পর্ষদ কর্তৃক অন্য কোনো কমিটি বা সাব-কমিটি গঠন করা যায় না। কিন্তু ইসলামী ব্যাংকে এই বিধান লঙ্ঘন করে ‘স্পেশাল কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির কার্যপরিধি ঠিক করা হয়েছে এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট ও তাঁর দুই ধাপ নিচের এক্সিকিউটিভ নিয়োগ এবং ডেপুটি এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে পদোন্নতি দেওয়ার জন্য। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধি অনুসারে, ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর অব্যবহিত দুই স্তর নিচ পর্যন্ত নিয়োগ ও পদোন্নতি পর্ষদের ওপর ন্যস্ত।

অন্য সব পদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের হাতে। পর্ষদ এসব ক্ষেত্রে কেবল নীতি প্রণয়ন করতে পারে; কোনো কমিটি গঠন ও নিয়োগ, পদোন্নতি বা বদলির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে না। কিন্তু ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের নিয়ে গঠিত স্পেশাল কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট স্তরের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির বিষয়টি রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধান অনুসারে কোনো ব্যাংকের পর্ষদে সিদ্ধান্ত নিয়ে চেয়ারম্যানের জন্য ব্যবসায়িক স্বার্থে অফিস কক্ষ, একজন ব্যক্তিগত সচিব বা সহকারী, অফিসে একটি ফোন ও একটি গাড়ি দেওয়া যাবে। কিন্তু ইসলামী ব্যাংকে এই নির্দেশ ভঙ্গ করে চেয়ারম্যান, নির্বাহী, অডিট কমিটির চেয়ারম্যানসহ সাতজন পরিচালকের ব্যবহারের জন্য গাড়ি দেওয়া হয়েছে।

ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান মওলানা জয়নুল আবেদিন, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম পাটওয়ারী, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান কাজী হারুন-অর-রশিদ, পরিচালক এ কে এম সদরুল ইসলাম, এসকান্দার আলী খান ও শামসুল হুদা প্রায় সার্বক্ষণিকভাবে ব্যাংকের গাড়ি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখেন। এ ছাড়া নির্বাহী কমিটি, অডিট কমিটি ও স্পেশাল কমিটির চেয়ারম্যানের পৃথক অফিস কক্ষ ও অফিস স্টাফ, ফোন সুবিধা দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধান অনুসারে, এসব কমিটির চেয়ারম্যানের অফিস কক্ষ, স্টাফ ও ফোন সুবিধা থাকার কোনো সুযোগ নেই। ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুজ যাহের সামগ্রিক বিষয়ে বলেন, ইসলামী ব্যাংক বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য। ফলে এসব সংস্থার বিভিন্ন কর্মসুচিতে নির্বাহীদের সঙ্গে পরিচালকদেরও বিদেশে যেতে হয়েছে।

ব্যাংকের পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুসারে পরিচালকেরা বিদেশে গেছেন; কেউ নিজের খুশিমতো যাননি। ব্যাংকের একাধিক পরিচালকের গাড়ি ব্যবহার সম্পর্কে তিনি বলেন, কয়েকজন পরিচালক গাড়ি ব্যবহার করলেও তাঁরা নিজের টাকায় জ্বালানি কিনে থাকেন। চেয়ারম্যান ছাড়া অন্যান্য কমিটিপ্রধানের অফিস কক্ষ সম্পর্কে আব্দুজ যাহের বলেন, নির্বাহী কমিটি ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যানরা অফিস কক্ষ ব্যবহার করেন, এটা ঠিক; তবে ব্যাংকের ওপরে অতিথি কক্ষ আছে, যেগুলো কমিটির চেয়ারম্যানরা প্রয়োজনে ব্যবহার করেন। বিশেষ কমিটির বিষয়ে তিনি বলেন, জরুরি কাজের জন্য এই কমিটি করা হয়েছে। কিন্তু কোনোভাবেই বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধানের বাইরে নিয়োগ, বদলি বা পদোন্নতির বিষয়ে এই কমিটি কোনো কাজ করে না; এগুলো ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষই করে থাকে বলে তিনি দাবি করেন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।