ওই খসড়ার বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযানের জন্য ৬০ দিন সময় বেঁধে দেয়ার পাশাপাশি স্থলপথে সেনাবাহিনী ব্যবহার না করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ওবামার প্রস্তাবে।
প্রস্তাবটি আগামী সপ্তাহে ভোটাভুটির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে তোলা হবে। গ্রীষ্মকালীন অবকাশের পর ৯ সেপ্টেম্বর বসছে কংগ্রেস বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকার যেভাবে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে, তাতে আমেরিকাকে এখন ব্যবস্থা নিতেই হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির দুজন কংগ্রেস সদস্যও ইতোমধ্যে ওবামার প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন।
দামেস্কে গত ২১ অড়াস্ট সারিন গ্যাস হামলা চালিয়ে ১৪০০ মানুষকে হত্যার জন্য প্রেসিডেন্ট আসাদ ও তার বাহিনীকে দায়ী করে সিরিয়ায় এই সামরিক অভিযান চালাতে চান ওবামা, যিনি ইরাকযুদ্ধের সময় তখনকার যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অবস্থানের একজন কড়া সমালোচক ছিলেন।
এদিকে জাতিসংঘের সমর্থন ছাড়া সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের একক অভিযান ন্যায়সঙ্গত হবে কি না- এই প্রশ্ন ওঠার পর জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন বলেছেন, তখনই একটি দেশের শক্তিপ্রয়োগকে ন্যায়সঙ্গত বলা যেতে পারে, যখন দেশটি নিজে আক্রান্ত হয়েছে, অথবা নিরাপত্তা পরিষদ তাদের শক্তিপ্রয়োগের সিদ্ধান্তকে সমর্থন দিয়েছে।
মহাসচিব বলেন, সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকরা যদি নিশ্চিত হতে পারেন, সেক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা হয়তো সিরিয়া অভিযানের বিষয়ে মতদ্বৈততা দূর করতে পারবে।
নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্যের মধ্যে কেবল ফ্রান্সেই যুক্তরাষ্ট্রকে এই অভিযানে সমর্থন দেবে বলেছে। তবে ফ্রান্স এককভাবে এই অভিযানে আগ্রহী নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন জাতিসংঘে এই অভিযানের প্রস্তাব তুললেও নিজের দেশের পার্লামেন্টে এ প্রস্তাব পাস করাতে পারেননি। এছাড়া নিরাপত্তা পরিষদের অপর দুই সদস্য রাশিয়া ও চীন বলে আসছে, আসাদ বাহিনীই যে সারিন হামলা চালিয়েছে, তা নিশ্চিত না হয়ে অভিযানে যাওয়া উচিৎ হবে না।
জাতিসংঘ ইতোমধ্যে জানিয়েছে, আড়াই বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের কারণে ২০ লাখেরও বেশি সিরীয় আশেপাশের দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।
ওবামা জানিয়েছেন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আশার আল আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে আসা সংগঠনগুলোকে সরাসরি সাহায্য দেওয়ার পরিকল্পনা আছে তার। হোয়াইট হাউসে কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে মঙ্গলবার তিনি এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন।
সিরিয়া যুদ্ধ ইরাক বা আফগানিস্তানের মতো দীর্ঘ হবে না- এমন আশ্বাস দিয়ে কংগ্রেস সদস্যদের প্রতি দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকান পার্টিই সংখ্যাগরিষ্ঠ, যে দলটি ক্ষমতায় থাকার সময় যুক্তরাষ্ট্র ইরাক যুদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
আর প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার জন বোয়েনার ও হাউসে রিপাবলিকান দলের প্রধান এরিক ক্যান্টর মঙ্গলবার সিরিয়া অভিযানের বিষেয়ে তাদের সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছেন।
অন্যদিকে সিরিয়া সরকার বলছে, সরকারি বাহিনী রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে এমন কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র দেখাতে পারেনি। এরপরও যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালালে তা পুরো অঞ্চলকে যুদ্ধে জড়াবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।