বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
কবি শিরাইশি কাজুকো। জন্ম কানাডার ভ্যানক্যুভারে; ১৯৩১ সালে। শিরাইশি কাজুকোর পরিবারটি ২য় বিশ্বযুদ্ধের আগে জাপানে চলে আসে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত জাপানে শিরাইশি কাজুকোর কিশোরীকাল কেটেছিল। তাঁর কবিতাপাঠে অনুমিত হয়-কিশোরীকালেই বিচিত্র যৌনঅভিজ্ঞতা লাভ হয়েছিল কবির। যা হোক। কবিতা ছাড়াও সুগভীর বোধের অধিকারী এই নারীর অচলা ভক্তি সঙ্গীতেও, সময় পেলেই ছুটে যেতেন নিকটস্থ জ্যাজক্লাবে। জ্যাজ এর জন্য লিরিকস লিখতেন কখনও কখনও।
যে কারণে কাজুকোর কবিতাকে বলা হয়- ‘ভাসমান শব্দ’-যা সত্যি সত্যিই উদ্দাম। শিরাইশি কাজুকো আজ জাপানের প্রথমদিককার আধুনিক কবি বলে গন্য । সচেতনভাবে কবিতায় পরাবাস্তবতার প্রয়োগ করেছেন কাজুকো। অতি বন্য ধরনের কবিতা লেখেন কাজুকো- যে-কবিতায় যৌনতার অবস্থান বিস্ময়কর। ‘পুরুষ-শিকড়’ কবিতাটি তেমনই একটি কবিতা।
এরকম পরবাস্তব, যৌনগন্ধী ও একই সঙ্গে তুমুল গভীর দার্শনিক ভাবনায় সমৃদ্ধ কবিতা বিশ্বসাহিত্যে খুব বিরল বলেই অন্তত আমার কাছে মনে হয়। নারী হয়েও ঈশ্বরকে পুরুষ হিসেবে বিবেচনা ও সৃষ্টি ঈশ্বরের পুরুষাঙ্গ কল্পনা করা বিস্ময়কর বৈ কী। অনুবাদে আমার দক্ষতা অতি সীমিত। তারপরও ‘পুরুষ-শিকড়’ উপস্থাপন করছি শিরাইশি কাজুকোর মনের বিচিত্র গতিপ্রকৃতি নিয়ে সামান্য ভাববেন- এই আশায়।
পুরুষ-শিকড়
সুমিকোর জন্মদিনের জন্য
ঈশ্বর, যদি থাকেন
কিংবা, নাও থাকেন
তারপরও কোনও কোনও পুরুষের জন্য
আছে রসবোধ
কাজেই এখন সে পিকনিকে
বড় একটা শিকড় আনে
আমার স্বপ্নের আকাশের শেষপ্রান্তের উপরে
এরইমধ্যে
আমি দুঃখিত
আমি সুমিকোর জন্মদিনে কিছুই দিইনি
এখন আমার দিতে ইচ্ছে হচ্ছে
ঈশ্বর প্রদত্ত পুরুষাঙ্গের বীজ
সুমিকোর পাতলা, ছোট্ট মধুময় কন্ঠস্বরে
রেখার শেষ প্রান্তে
সুমিকো, আমি দুঃখিত
অথচ পুরুষাঙ্গটি দিনের পর দিন ফুলে উঠছে
নক্ষত্রপুঞ্জের হৃদয়ে ছড়াচ্ছে
পুরনো বাসের মতন ভাঙ্গাচোরা
কাজেই
যদি তুমি দেখতে চাও
ঝলমলে নক্ষত্রসহ চমৎকার আকাশ
কিংবা ঈশ্বর প্রদত্ত লিঙ্গের বদলে নিছকই এক পুরুষ
পুরুষটি হাইওয়েতে দ্রুত ধাবমান
পাশেই তৃষ্ণার্ত বালিকা
তোমাকে সারাটা পথ বাসের জানালায় ঝুলে থাকতে হবে
তোমার উপড়ানো চোখে দ্যাখো -কী চমৎকার
লিঙ্গটি মহাবিশ্বের কিনারায় দুলছে
এই সময়ে
প্রিয় সুমিকো
রাতের ঝলমলে নিঃসঙ্গ তারারা
আর দুপুরের কৌতূহলী শীতলতা
আমার সত্ত্বার ভিতরে ঢোকে
পুরোটাই দেখা
অথবা তুমি যদি না-দেখতে চাও
উন্মাদ হয়ে যাবে
কেননা তুমি নামহীন নির্লিপ্ত আর সময়হীন লিঙ্গের
চিহ্ন পাবে
সমাধিসৌধের দিকে ধাবমান
পথচারীদের
দুষিত পরিবেশে
জনতার গুঞ্জনে
শুনতে পাবে ক্রমবর্ধমান পাশবিক বিদ্রোহে
পৌত্তলিকতাবাদের অভিশাপে
কখনও
ঈশ্বরের সভায় কি মধ্যাহ্নভোজনে
ঈশ্বর চলে গেছেন
লিঙ্গটি রেখে কৃতকর্ম থেকে পালিয়েছেন
কাজেই এখন
লিঙ্গটি ঈশ্বর কর্তৃক পরিত্যক্ত
ক্রমশ
যুবক আর সমকামীরা
অনভিজ্ঞ দৃঢ়তায়
ছায়ার মতন বিস্ময়কর ভাবে
কিংবা বিনম্র হাসিতে
লিঙ্গটি
পরিমাপের অতীত
দিগন্ত থেকে বিস্ফারিত হয়ে
এখানে পৌঁছেছে
সত্যিই অসাধারণ আর সম্পূর্ন নিঃসঙ্গ
যে কোনও দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা
এর মুখহীন আর ভাষাহীন
আমি তোমাকে দিতে চাই, সুমিকো
এইরকমই কিছু তোমার জন্মদিনে
এটি যখন তোমার সমস্ত জীবনকে ঘিরে ফেলবে
তখন তুমি নিজেকে আর খুঁজে পাবে না
কেবলি পুরুষাঙ্গের আকাঙ্খায় পরিনত হবে তুমি
এই পুরুষাঙ্গের
বিস্মিত হয়ে ভাববে
আমিও ছুঁতে চাই তোমার মতো কিছু
চিরদিনের মতো
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।