আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাধ্যমিক/উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বর্তমানে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার আবর্তে কিছু কথা



২০০৪ সালে জিপিএ-৫-এর সংখ্যা যেখানে নয় হাজার ৮৮৬ ছিল, তা বৃদ্ধি পেয়ে পরবর্তী বছরগুলোয় ১৭ হাজার ২৯৪, ৩০ হাজার ৪৯০, ৩২ হাজার ৬৪৬ এবং এ বছর তা ৫২ হাজার ৫০০। পত্রিকান্তরে প্রকাশ একশ্রেণীর কোচিং সেন্টারের প্রতারণা থেকে মুক্তি, অভিভাবকদের আর্থিক চাপমুক্ত করতে এবং উচ্চশিক্ষায় ভর্তি-ইচ্ছুদের দুর্ভোগ ও হয়রানি লাঘবকে আমলে রেখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে ভর্তি নীতিমালা তৈরি করছে। যে কোচিং সেন্টারগুলোয় পড়ালেখা করে ছাত্ররা বুয়েট, মেডিকেল কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে হিরো হচ্ছে, সেই কোচিং সেন্টারগুলোই নাকি ভিলেন। কোনো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলের মাধ্যমে আমরা এখনো প্রমাণ করতে পারিনি যে কোচিং সেন্টারে পড়ার সঙ্গে লোভনীয় বিষয়গুলোতে ভর্তি হওয়ার কোনো ইতিবাচক সম্পর্ক নেই। এটা প্রমাণ করতে পারলে ছাত্র কিংবা অভিভাবক কেউই কোচিং সেন্টারের আঙ্গিনায়ও প্রবেশ করত না।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রকে বলতে শুনেছি তাদের ভর্তিতে কোচিং সেন্টারের অবদান সুবিশাল অথচ কলেজের অবদান অনুল্লেখ্য। অর্থাৎ আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা যেখানে অকার্যকর হচ্ছে, সেখানে কোচিং সেন্টারগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেও স্কুলের ফলাফল নয়, স্যাটের মতো প্রতিযোগিতাপূর্ণ টেস্টের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয়। আবার সে পরীক্ষার ফলাফলও কিন্তু নম্বরভিত্তিক, জিপিএভিত্তিক নয়। যার ফলে দুজন শিক্ষার্থীর মধ্যে সহজেই ব্যবধান বের করা যায়।

আমাদের মতো ৫২ হাজার ৫০০ ছাত্র-ছাত্রীরই সমান হওয়ার সুযোগ নেই। এর অর্ধেক ছাত্র-ছাত্রীই সবচেয়ে ভালো কলেজগুলোয় ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে না, সর্বোচ্চ জিপিএধারী হয়েও। ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি করলেও কিন্তু প্রকারান্তরে কোচিং সেন্টারের অবদানকেই প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং কোচিং সেন্টার থেকে রেহাই পেতে পাবলিক পরীক্ষাও বাদ দিতে হবে। আমাদের বর্তমান পরীক্ষাপদ্ধতি বহাল রেখে কোচিং সেন্টারকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।

কারণ, বেশির ভাগ স্কুল-কলেজে পড়ালেখা হয় না। শুধু তা-ই নয়, এমনকি যেসব স্কুল-কলেজে হয়, তাদের ছাত্র-শিক্ষক উভয়ই কোচিংয়ের সঙ্গে যথেষ্ট সম্পর্কযুক্ত। আশ্চর্যের বিষয়, এমনকি অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত দেশেও এই কোচিং-সংস্কৃতি চালু হয়েছে। আমার এ লেখাটুকু পড়ে আমাকে কোচিং সেন্টারের প্রবক্তা মনে করাটা সঠিক হবে না। ১০ লাখ ছাত্রছাত্রীকে মূল্যায়নের জন্য প্রশ্নপত্র, পরীক্ষাপদ্ধতি এবং মূল্যায়ন এমন হওয়া উচিত যে তোতা পাখির মতো সেখানে বুলি আওড়িয়ে পরীক্ষার বৈতরণী পার হওয়া যাবে না।

প্রকৃতপক্ষে স্যাট এবং জিআরই পরীক্ষার মাধ্যমে সারা পৃথিবীর মেধাবী শিক্ষার্থীদের যেখানে বাছাই করা যাচ্ছে, সেখানে শুধু আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের মেধা ও দক্ষতা যাচাই করার মতো পাবলিক পরীক্ষা এবং মূল্যায়নপদ্ধতি তৈরি করতে ব্যর্থ হয়ে কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে অবস্থান কোনো অবস্থাতেই কার্যকর হতে পারে না। যে মূল্যায়ন পদ্ধতিতে ৫২ হাজার ৫০০ ছাত্র-ছাত্রীকে জ্ঞানে, বিদ্যায়, মেধায় ও দক্ষতায় পার্থক্য করতে পারে না, তার অকার্যকারিতার জন্য আর বড় কোনো উদাহরণের প্রয়োজন নেই। যাঁরা ভেবেছিলেন গ্রেডিং পদ্ধতি প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা উন্নত বিশ্বের সঙ্গে এক কাতারে উঠে গেছে, তাঁদের নিশ্চয়ই ইতিমধ্যে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। আর এ পদ্ধতির মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি ভর্তি করতে হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে শুধু জ্ন তারিখ নয়, নামের আদ্যাক্ষর দিয়েও টাই ব্রেক করতে হবে। উল্লেখ করা যেতে পারে, শিক্ষার মানে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশের অনেক সুনাম থাকলেও তারা গ্রেডিং পদ্ধতিতে যায়নি।

এখনো তারা শ্রেষ্ঠ ছাত্রদের স্কুলের তালিকা পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে প্রকাশ করে যাচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, ভর্তি পরীক্ষা সেখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যত দিন পাবলিক পরীক্ষার জন্য একটি কার্যকর পরীক্ষা ও মূল্যায়নপদ্ধতি আমরা প্রবর্তন করতে না পারি, তত দিন হাস্যকর নতুন নতুন টাই ব্রেকিং পদ্ধতি আবিষ্কার না করে ভর্তি পরীক্ষা চালু রাখাটাও শ্রেয়; যদিও তাতে বেসরকারি অনানুষ্ঠানিক কোচিং সেন্টারগুলোর কার্যকারিতা এবং আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থার অকার্যকারিতা বারবার প্রতিষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া একজন পরীক্ষার্থী যদি জানে এসএসসি কিংবা এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল তার পরবর্তী পর্যায়ের ভর্তিকে সুনিশ্চিত করবে, তাহলে পরীক্ষা-পরবর্তী চ্যালেঞ্জবিহীন দীর্ঘ সময় তাকে উচ্ছন্নে প্রেরণ করতে যথেষ্ট হবে। উন্নত বিশ্বে ছাত্রদের মেধাকে চ্যালেঞ্জ করে কত রকম প্রতিযোগিতা রয়েছে।

আর আমাদের দেশে যৎকিঞ্চিত ছিল, তাকে বন্ধ করে গোটা তরুণ প্রজ্নকে অতীব সাধারণ্যে পরিণত করা হচ্ছে। এখন আবার শোনা যাচ্ছে, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে কীভাবে বিভিন্ন বিষয়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা যায়, তার নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। জিপিএ-৫-এর সংখ্যা পাঁচ বছরে পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় শিক্ষাব্যবস্থা পাঁচ গুণ উন্নত হয়েছে; এটা যতটা বিশ্বাসযোগ্য, তার থেকে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার পাঁচ গুণ অবনতি হয়েছে। স্কুল-কলেজের পরীক্ষা এবং পরবর্তী পর্যায়ে ভর্তি হওয়ার মধ্যে যে দীর্ঘ সময় তাকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করার কোনো বিকল্প খুঁজে না পেলে অবশ্যই ভর্তি পরীক্ষার মতো চ্যালেঞ্জিং একটি ঘটনা সামনে রাখতে হবেই। একটি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা বিভাগে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই যুক্তিনির্ভর হবে না।

এ অবস্থায় বর্তমানের ঘটনাবিবর্জিত শিক্ষাব্যবস্থাকে কীভাবে ঘটনাসমৃদ্ধ করে আমাদের তরুণ সম্প্রদায়কে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির জ্ঞানে ও দক্ষতায় একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে-সেটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ। একমাত্র উদ্বৃত্ত মানুষের দেশে উন্নতমানের শিক্ষার মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। বৃহত্তর এবং সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত না করে গৃহীত কোনো সিদ্ধান্তই যে জনকল্যাণমুখী হতে পারে না, তা আমাদের বিশ্বাস করতে হবে। এ অবস্থায় একবিংশ শতাব্দীর প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে আমাদের টিকে থাকতে হলে ক্ষয়িষ্ণু শিক্ষাব্যবস্থার পরিপূরক কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, তার একটি প্রস্তাব করা হলো। ১· শিক্ষাকে ঘটনাসমৃদ্ধ করার জন্য বর্তমান গ্রেডিং পদ্ধতির তুলনায় অনেক বেশি ধাপসম্পন্ন মূল্যায়ন পদ্ধতিতে ফিরে যেতে হবে।

২· পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়নে পরীক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার মূল্যায়নকে লক্ষ রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্যাট-জাতীয় পরীক্ষাপদ্ধতিকে কীভাবে আমাদের দেশের উপযোগী করা যায়, তা নিয়ে গবেষণা করা যেতে পারে। ৩· তরুণ ছাত্রছাত্রীদের সামনে অধিকতর সংখ্যায় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার সূচনা করতে হবে। সারা দেশে যথাযোগ্য ও যোগ্যসংখ্যক শিক্ষক দিয়ে স্কুল-কলেজ সমৃদ্ধ করাটা সহজসাধ্য নয়, তবে অফুরন্ত প্রাণশক্তির অধিকারী তরুণ-তরুণীর সামনে সুস্থ ও জনপ্রিয় প্রতিযোগিতার আয়োজন করলে আমাদের তরুণেরা যে দক্ষতা অর্জনের পথ নিজেরাই খুঁজে পায়, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো আমাদের কম্পিউটারের শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামিংয়ের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের তুলনায় শ্রেয়তর সফলতা অর্জন। ৪· তুলনামূলকভাবে অবহেলিত অঞ্চলের দুর্বল অবকাঠামোসম্পন্ন এবং অনুল্লেখ্যমানের শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত স্কুল-কলেজগুলোয় কম্পিউটার এইডেড লার্নিং প্যাকেজ সরবরাহে অগ্রাধিকার দিয়ে তাদের যোগ্যমানের শিক্ষায় উৎসাহিত করা।

৫· স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির জন্য স্যাট-জাতীয় প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরীক্ষা আমাদের দেশের উপযোগী করে তার ফলাফলকে ব্যবহার করা। ৬· পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে উৎকর্ষ অর্জনের জন্য একটি সুস্থ প্রতিযোগিতা গড়ে তোলা। পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে স্কুল-কলেজগুলোর উপজেলা, জেলা, বিভাগ কিংবা দেশভিত্তিক র‌্যাংক ঘটা করে গণমাধ্যমের সাহায্যে প্রকাশ করা এবং এসব পরীক্ষায় স্কুল-কলেজের অর্জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য পুরস্কৃত করা। মনে রাখতে হবে, উৎকর্ষ অর্জনের জন্য প্রতিযোগিতা এবং যোগ্য পুরস্কার থেকে ব্যয়-সাশ্রয়ী আর কোনো পদ্ধতি নেই। ৭· মহাপরাধীন আমাদের ভূখণ্ডে জগদীশ বসু, সত্যেন বোস কিংবা মেঘনাদ সাহার মতো বিশ্বমানের বিজ্ঞানীর জ্ন হয়েছিল।

অথচ স্বাধীনতা অর্জনের পর এমন মাপের বিজ্ঞানী বের হয়ে যে আসছে না তার কারণ হলো আমাদের উচ্চতর শিক্ষার মানও নি্নগামী। উচ্চশিক্ষাকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতেও চাই প্রতিযোগিতাপূর্ণ একটি পরিবেশ সৃষ্টি, যা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের পাঁচ শতাংশ মানুষের দেশে জ্ঞান-বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির এমন জয়জয়কার। সুতরাং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কিংবা অন্যান্য উন্নত দেশের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও অর্জনের ভিত্তিতে র‌্যাংক দিতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময় পরপর নিয়মিত তা আপডেট করতে হবে। ৮· অধিকতর যোগ্য স্মাতকদের শিক্ষকতার পেশায় উৎসাহিত করার জন্য শিক্ষকদের উচ্চতর বেতন স্কেল দিতে হবে। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে শিক্ষকদের শুধু সামাজিক মর্যাদাই হ্রাস পায়নি, আর্থিক সংগতিও হ্রাস পেয়েছে।

ফলে যোগ্য স্মাতকেরা অধিকতর আকর্ষণীয় চাকরিতে যোগ্য দিচ্ছে, এমনকি শ্রেণীর শ্রেষ্ঠতম ছাত্ররাও কোচিংমুখী হচ্ছে। ৯· কোচিং সেন্টারগুলোর যেকোনো অনৈতিক কাজকে নিরুৎসাহিত করতে কঠোর হওয়া যেতে পারে, তবে দুর্বল প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতাকে কাটিয়ে উঠতে যদি কোচিং সেন্টারগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা অপ্রয়োজনীয়। ১০· এমন ঘনবসতিপূর্ণ ক্ষদ্র আয়তনের দেশটিকে প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে টিকে থাকতে হলে মানবসম্পদ উন্নয়নের বিকল্প নেই। আর মানবসম্পদ উন্নয়নের চাবিকাঠি হলো শিক্ষা- উন্নতমানের শিক্ষা। আমাদের নীতিনির্ধারকেরা শিক্ষার মানকে উন্নত করতে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নেবেন-এটা আমাদের প্রত্যাশা।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।