ফ্রন্ট সাইডে ছিল বাংলা ভাইয়ের ১৫ ক্যাডার
কামরুজ্জামান খান : জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমবি)’র প্রধান সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইয়ের পোষ্য ১৫ জঙ্গি পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত। তারাও বিডিআর জওয়ান। রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় এসব জঙ্গি কথিত ইসলাম প্রচারের নামে ২০০৪ সালে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। অনেকে জড়িয়ে পড়েছিল সরাসরি হত্যাকাণ্ডে। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় জঙ্গি বিরোধী ইস্যুতে আন্দোলন দানা বাঁধলে এসব জঙ্গি বাংলা ভাইয়ের সঙ্গে বেশ কিছুদিন গাঢাকা দিয়ে থাকার পর ২০০৫ সালে বিডিআরে চাকরি নেয়।
জোট সরকারের শিক্ষা উপমন্ত্রী, ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার কারাবন্দী আসামি আব্দুস সালাম পিন্টু ও বিএনপির রাজশাহীর একজন সাংসদের সুপারিশে এসব জঙ্গি বিডিআরে চাকরি পায়। এসব জঙ্গিই ২৫ ফেব্র“য়ারি পিলখানা হত্যাকাণ্ডের দিন অস্ত্রাগার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কিলিং মিশনে ফ্রন্ট সাইডে ছিল। ঘটনার পর থেকে এরা পলাতক রয়েছে। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ও গোয়েন্দারা খোঁজখবর করে হত্যাকাণ্ডে বাংলা ভাইয়ের প্রশিক্ষিত জঙ্গিদের জড়িত থাকার তথ্য মিলেছে।
সূত্র মতে, ২০০৪ সাল জুড়ে রাজশাহীর বাগমারা, রানীনগর , আত্রাই, দুর্গাপুর, পুঠিয়া ও নাটোরের নলডাঙ্গায় বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে জঙ্গিরা তাণ্ডব চালায়।
জোট সরকারের দুজন মন্ত্রীর সহায়তায় পুলিশ প্রহরায় প্রকাশ্যে শোডাউন করে। চলে হত্যাযজ্ঞের মিশন। এক পর্যায়ে তৎকালীন বিরোধী দলসহ মানবাধিকার সংগঠন ও দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সরকারের টনক নড়ে। জঙ্গিরা গা ঢাকা দেয়। এরই মধ্যে সুযোগ পেয়ে কয়েকজন জঙ্গি গা বাঁচাতে বিডিআরে চাকরিতে যোগ দেয়।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গাইবান্ধার গোবিন্দপুর রামপুরা গ্রামের বাসিন্দা ল্যান্স নায়েক গাউসুল আজম, রাজশাহীর সাকোয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন, জয়পুরহাটের পাঁচবিবির সিপাহি মাসুদুর রহমান, বাগমারার কামারবাড়ি গ্রামের কাউসার, দুর্গাপুরের উজান খালাসী গ্রামের গোলাম রব্বানী, গোয়লকান্দি গ্রামের ইসমাইল হোসেন, পাবনার কোমরপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম সরাসরি জেএমরি সঙ্গে জড়িত ছিল। এদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন জেএমবির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াছিন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত। জোট সরকারের সময় বিএনপির রাজশাহীর এক সাংসদের সুপারিশে তার চাকরি হয়। এছাড়া টাঙ্গাইলে গ্রেপ্তার ২২ বিডিআর জওয়ানের মধ্যে ১১ জনের চাকরি হয় জোট সরকারের উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর সুপারিশে। পিন্টু বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট জঙ্গি গ্রেনেড হামলার নেপথ্য মদদদাতা হিসেবে এখন কারাবন্দী।
সূত্র জানায়, জেএমবির জঙ্গিরা সাধারণ জওয়ানদের পাওয়া না পাওয়ার ইস্যু তুলে বিডিআরে কর্মরত সেনা কর্মকর্তাদের ব্যাপারে মগজ ধোলাই করে বিষিয়ে তুলে। পিলখানার সদর দপ্তরে সব কর্মকর্তাদের বিডিআর সপ্তাহে একসঙ্গে পাওয়ার সুযোগকে তারা কিলিং স্পট হিসেবে নির্বাচন করে। আর অপারেশন ডাল-ভাত ইস্যুতে সাধারণ জওয়ানদের অফিসারদের ওপর ক্ষুব্ধ করে তারা নামে হত্যাযজ্ঞে। এই সুযোগে তারা জঙ্গি বিরোধী অভিযানে সফল র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল গুলজার উদ্দিনসহ ৬২ জন সেনা কর্মকর্তাকে একসঙ্গে হত্যা করে বাংলা ভাই ও শায়খ আব্দুর রহমানসহ ৬ জঙ্গি নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের প্রতিশোধ নেয় বলে ধারনা করা হচ্ছে!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।