দু-মাস তিন সপ্তাহের মধ্যে ৫০টি পোস্ট দিয়েছি। অধিকাংশই গল্প এবং সাইজে খুব ছোটো নয়। কয়েকটি কবিতাও আছে। সাধারণত: এত অল্প সময়ে এত লেখা আমার স্বভাব নয়। সময়ও হয়ে ওঠে না।
তবু এই ব্লগে কি করে এত লেখা লিখলাম! ভালো লাগছিল নিশ্চয়ই কোনো না কোনো কারণে। প্রথম প্রথম খুব একটা মতামত পেতাম না। ধীরে ধীরে পাঠক তথা সতীর্থ ব্লগার-লেখকদের দৃষ্টি পড়তে শুরু করেছিল। নিয়মিত পাঠকদের সংখ্যা দেখে ভালো লাগতো। মতামত থাকলে তো আরো ভালো লাগতো।
হয়তো এইসব কারণেই লিখতে ভালো লাগতো। তবে একটা কথা স্বীকার করতেই হবে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এখানে প্রায় সকলেই চুটিয়ে উপভোগ করছেন, কেউ কেউ সেই স্বাধীনতার সীমা সম্পর্কেও সচেতন থাকছেন না--এমনটাও লক্ষ্য করেছি। কখনো কখনো ব্যবহৃত ভাষার শালীনতার অভাব একই সঙ্গে বিস্মিত এবং ব্যথিত করেছে। বিস্মিত হয়েছি, যে কোনো অঘটনের পেছনে ভারতের ষড়যন্ত্র প্রতিষ্ঠার উগ্রতায়। জানি না, হয়তো এক নিয়তি তাড়িত অসহায়তাই এই মানসিকতার অন্যতম কারণ।
ভারত সব সময়েই চায় বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ গণপ্রজাতন্ত্রী একটি আদর্শ স্থিতিশীল দেশ হিসেবে বিশ্বে নিজেদের অবস্থানকে দৃঢ় করুক--এতে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের লাভ ছাড়া কোনো ক্ষতি নেই। বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার হানি ঘটলে ভারতের কোনো লাভ হয় বলে মনে করা কতটা কঠিন তা আমরা যারা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটতে দেখি এবং মানবিক বিচারবোধ দিয়ে বিষয়গুলো বোঝার চেষ্টা করি তারা জানি। ১২০ কোটি লোকের দেশ ভারত ১৫ কোটি লোকের দেশ বাংলাদেশকে নিশ্চয়ই শোষণ করে সমৃদ্ধ হবার মতো বেওকুফি করতে পারে না। বাংলাদেশের নিজস্ব যা সম্পদ আছে তাতে ১৫ কোটি মানুষের সিংহভাগেরই ন্যূনতম প্রয়োজন মেটার পক্ষে যথেষ্ট যে নয় তা একদিন শুধুমাত্র বেনাপোল সীমান্তে গিয়ে দাঁড়ালেই বোঝা সহজ। প্রতিদিন কয়েকহাজার ট্রাক পচনশীল দ্রব্যাদি নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে।
যেকোনো মিত্রভাবাপন্ন দেশ থেকে এ ধরণের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ভীষণভাবে জরুরি। ভারত থেকে অবশ্যই বিনামূল্যে এসব জিনিস পাঠানো হয় না। কিন্তু সময়-অসময়ে নিকটস্থ প্রতিবেশী দেশ যা পারে তা অতি দূরের 'মিত্র'দেশ পারে না। বিশেষ করে পাকিস্তান তো পারেই না। তারা যা পারে তাতো বাংলাদেশের ইতিহাসেই চিরকাল লেখা থাকবে।
ভারত অনেক বড় দেশ--তার সামগ্রিকতার বিচার না করে আমরা যারা বাংলা ভাষায় কথা বলি, বাংলাভাষা যাদের মাতৃভাষা তারা অন্তত: বাংলাদেশের কোনোরকম বিপর্যয় আশা করে না। কোনো অঘটন ঘটলেই মানসিক প্রতিক্রিয়া ঘটে--এটা শেকড়ের সংস্কারজাত বিষয় হতে পারে, হতে পারে জিনগত নৈকট্যের কারণেও।
সে যাই হোক না কেন, এরকম মনখারাপের মতো দু'চারটে পোস্ট থাকলেও ভালো লাগার মতো অজস্র লেখা পড়ার সুযোগ আমি পেয়েছি। অনেক কবিতা, প্রবন্ধ এবং ফীচার আমাকে মুগ্ধ করেছে। অবাক হয়েছি বেশ উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় মহিলাদের যথেষ্ট বলিষ্ঠ লেখা দেখেও।
অধিকাংশেরই লেকনীশক্তি সত্যি তারিফ করার মতো। সময় সুযোগ পেলেই আমি নিয়মিত সতীর্থ ব্লগারদের লেখা পড়ি। ইতমধ্যেই ২০০টি মন্তব্য করেছি। মন্তব্য পেয়েছিও ২২৬টি! কিন্তু হঠাৎ করে কয়েকদিন লক্ষ্য করছি আমার পাতায় দৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেক কমে গেছে। কারণটা কি সেটা অবশ্য জানি না।
না, তার জন্যে খারাপ লাগছে না। হাফ-সেঞ্চুরী করার পর মনে হল আমার অভিজ্ঞতা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করি। অনেকেরই হয়তো এই কচকচি ভালো লাগবে না, তবে একটা কথা কিন্তু পরিষ্কার করে জানাই, কাউকে কোনোভাবে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই লেখা নয়। সবাই ভালো থাকুন, আনন্দে থাকুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।