"You may like a situation which is not good for you And You may dislike a situation which is good for you." (Al- Quran)
(- চিহ্নটি ছেলে এবং = চিহ্নটি মেয়ে নির্দেশক)
ছেলে - আজ তো ৮ই মার্চ!
মেয়ে = তো !
- আজ পুরুষের দুঃখের দিন !
= কেন ?
- তুমি জাননা!
= না ৭ই মার্চ বিখ্যাত জানি... ৮ই মার্চ এ আবার কী হল?
- তুমি সত্যিই জান না!
= না ... আসলেই জানি না ... বল না কেন পুরুষদের দুঃখের দিন।
- আজ বিশ্ব নারী দিবস। তোমার জেনারেল নলেজ এত কম কেন?
= গত বছর নারী দিবসের সময় দেখেছিলাম নারীরা রাস্তায় বেরিয়েছিল। দাবী-দাওয়া বলছিল। ... অনেকদিন টিভি দেখা হয় না .. পত্রিকাও পড়া হয় না ... তাই মিস করে গেছি...
- জানলে কী সমাবেশ টমাবেশে যেতে না কী ?
= নাহ্...প্রশ্নই আসে না!
- বছরের এই একটা দিন নারীরা এমন সব দাবী দাওয়া তুলে যে আমার মাঝে মাঝে হাসিই পায়
= কেন? নারীরা কী এমন অযৌক্তিক দাবী তোলে?
- যৌক্তিক-অযৌক্তিক বোঝাতে গেলে তোমার সাথে তুমুল ঝগড়া বেধে যাবে !
= ঝগড়া হলে হোক! তোমাকে বলতেই হবে মেয়েরা কী এমন অযৌক্তিক দাবী তোলে...
- এ কী মসিবতে পড়লাম ! সাধে কী আর বলি নারী দিবস মানেই মসিবত!
= মসিবত হলে মসিবত... তাড়াতাড়ি বল অযৌক্তিক দাবীগুলো কী কী ?
- দ্যাখ আমার জ্ঞান সীমিত।
আমি কী আর অত বুঝি !!
= দ্যাখ পাশ কাটানোর চেষ্টা কোর না... আজকে তোমাকে বলতেই হবে অযৌক্তিক দাবী কোনগুলো ?
- আচ্ছা এই যে ধর সম্পত্তিতে সমান অধিকার , তারপর কর্মক্ষেত্রে ... মানে ধর যে সবকিছুতে সমান অধিকার চাচ্ছে এটা কী ঠিক হল !
= কেন ঠিক হল না কেন?
- দ্যাখ আমাদের ইসলামও নারী-পুরুষের সমতার নীতি সমর্থন করে না। কিছু ক্ষেত্রে পুরুষকে বেশি আর কিছু ক্ষেত্রে নারীকে বেশি অধিকার দেয়া হয়েছে। ইসলাম যে নীতি অনুসরণ করে সেটা হল কল্যাণের নীতি। যেখানে যেটায় কল্যাণ ইসলাম সেটাই করেছে।
= নারীকে যে সম্পত্তি কম দেয়া হল এতে কল্যাণ কোথায় ?
- আচ্ছা ঠিক আছে... যেমন মনে কর ইসলামের বিয়ের পদ্ধতি কী? একজন পুরুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবার সময় সে তার হবু স্ত্রী কে দেনমোহর পরিশোধ করবে।
এই দেনমোহর দেয়া এতই অপরিহার্য যে বলা হয়েছে সামর্থ্য না থাকলে বিয়ে কোর না ।
এখন বেশিরভাগ লোক দেনমোহর দেয় না এটা তাদের দোষ। এবং এজন্য তাদের কঠিন শাস্তি পেতে হবে। এমন কী এমনও বলা আছে যে দেনমোহর পরিশোধ না করে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে বসবাস করলে সেটা যিনা বলে বিবেচিত হবে। বিয়েই সিদ্ধ হবে না।
এই তো গেল দেনমোহরের কথা। তার মানে কী দাঁড়াল ? যে ছেলেটি তার পিতার সম্পত্তি থেকে বেশি পেয়েছিল সে দেনমোহরস্বরুপ বেশকিছু টাকা একজন মেয়ে কে দিচ্ছে যে কী না তার পিতার সম্পত্তি থেকে কম পেল। এছাড়াও এই স্ত্রীর ভরণ-পোষণ হতে শুরু করে সন্তানের লালন পালনের সমস্ত দায়িত্বও ছেলেটির। আবার পিতামাতা বৃদ্ধ হলে দেখাশোনা করার দায়িত্ব ও ছেলেটির। নারী তার ব্যক্তিগত সম্পত্তি থেকে এসবখাতে অর্থ ব্যয়ে মোটেও বাধ্য নয়।
তাহলে দেখা গেল নারী পিতার অধীন থেকে স্বামীর অধীনে চলে গেল। তার তো আর্থিক বা সম্পত্তিগত নিরাপত্তা প্রকৃতিগতভাবেই সমাধান হয়ে যায়। আমি জানি ব্যতিক্রম ও আছে কিছু। যেমন অনেক নারী অসহায় হয়ে পড়ে , স্বামী পরিত্যক্তা বা বিধাব হয়ে পড়ে... এইসকল ক্ষেত্রেও ইসলামের নিয়ম-কানুন দারুণ কাজে লাগে। যেমন- অসহায় নারীটির যদি কোন ভাই থাকে তাহলে ইসলাম বলে সে ভাইয়ের দায়িত্ব হল তার বোনের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেয়া।
আমি জানি অনেক ভাইয়েরা এই দায়িত্ব পালন করে না কিন্তু এটা তো ইসলামের দোষ নয় বরং ওদরই দোষ... শাস্তিও হবে এজন্য।
ইসলামে বহুবিবাহ প্রবর্তন করার এটাও একটা কারণ যে অসহায় কোন নারীকে কোন সচ্ছল ব্যক্তি বিয়ে করে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। আচ্ছা এবার ধর কোন মহিলার কোন ভাইও নাই বা ভাই দায়িত্ব পালন করছে না এবং কোন সচ্ছল ব্যক্তি তাকে বিয়েও করছে না... সেক্ষেত্রেও ইসলাম তার বিষয়ে রাষ্ট্রকে দায়িত্ব দিয়েছে যে সে মহিলার ব্যবস্থা বায়তুল মাল অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে করা হবে। তাহলে এ বিষয়টি পরিষ্কার যে নারীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা প্রকৃতিগতভাবেই অনেক বেশী। যদিও কলুষিত সমাজব্যবস্থার নিষ্ঠুরতার দোষ ইসলামের উপর চাপানো হচ্ছে।
যৌক্তিকভাবেই সম্পত্তি পুরুষেরই বেশি দরকার... স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি , বৃদ্ধ পিতামাতা এবং যদি কোন বোন অসহায় হয়ে পড়ে... তাদের ভরণ-পোষণের জন্য।
পুরুষকে তুমি যদি শুরুতেই মানে সম্পত্তি হতে কম দাও তাহলে তার বৃদ্ধ পিতামাতা অথবা অসহায় বোনের ভরণ-পোষনের কী ব্যবস্থা হবে। বেশী পাওয়া সত্ত্বেও যেখানে অনেকেই করছে না। তবে এটাও ঠিক অনেকে করছেও... কিন্তু খবরের শিরোনাম হয় দু’একটি ব্যতিক্রম নির্যাতনের কাহিনী। যুগের পর যুগ যেসব পুরুষরা তাদের স্ত্রী ,বৃদ্ধ পিতামাতা এবং অসহায় বোনের দেখাশোনা করেছে এরকম কোটি কোটি উদাহরণ পাওয়া যাবে।
সেই সকল মহান কাহিনী তো শিরোনাম হয় না।
সুতরাং ইসলাম যে নারীর সম্পত্তি পুরুষের অর্ধেক করেছে এতে দোষের কিছু হয় নি। দোষ আমাদেরই । আমাদের মায়া-মমতা উঠে গেছে আমরা লোভী হয়ে গেছি বর্বর হয়েছি সর্বোপরি কৃপণ হয়েছি ... অথচ এই সকল নৈতিক স্খলন আড়াল করার জন্য আমরা সৃষ্টিকর্তার বিধানের দোষ দেই। কীভাবে নৈতিক স্খলন রোধ করা যাবে সেই কথা কেউ বলবে না খালি অধিকার নিয়ে ঝগড়া করবে।
ইসলাম ভাল করে অধ্যয়ন করে দ্যাখ দেখবে ইসলামে সবকিছু মিলিয়ে নারীকে অগ্রাধিকারই দেয়া হয়েছে।
= আচ্ছা সম্পত্তির ব্যাপারটা না হয় কিছুটা বোঝা গেল। কিন্তু সব নারীরা তোমার যুক্তি মানবে না।
- হুুঁ যেসব নারী রাস্তায় বের হয়েছে আজকে এরা আমার কথা শুনলে আমার শ্লীলতাহানি ঘটিয়ে দিতে পারে! তোমাকেই বললাম । তুমি আর কাউকে বোল না।
যে যুগ পড়েছে! আমেরিকান কংগ্রেসের স্পীকার ন্যান্সি পোলেসি কী বলেছেন জানো ?
= না ... কী ?
- তিনি বলেছেন আমেরিকার সরকারী বিভিন্ন পদে আরো নারীর প্রয়োজন। তো তার কথা শুনে আমার একটি ভাবনা মাথায় এলো যে ভবিষ্যতে যদি আমেরিকায় নারীর প্রতিনিধিত্ব বেড়েই যায় তখন ওদের পুরুষরা তো অস্তিত্ব সংকটে পড়ে যাবে!
= কেন?
- না মনে কর যে আমেরিকার নারীরা যদি দাবি করে বসে যে আমেরিকায় আর পুরুষের কোন প্রয়োজন নাই! তখন ??
= হা হা হা ..আচ্ছা বাদ দাও ... সম্পত্তির ব্যাপারটা না হয় বোঝা গেল কিন্তু তুমি অন্য দাবীগুলোকে অযৌক্তিক বলছ কেন? নারীরা এখন কী যোগ্যতায় তোমাদের চাইতে কম যায়! প্রতি বছর এস এস সি ও এইচ এস সি পরীক্ষায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেয়েরাই ভাল করে...নারী সবধরণের চাকরিতে তার অবদান রাখছে... সেনাবাহিনীতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করছে... আমাদের দেশ তো দুজন নারীই চালিয়েছে... একেবারে খারাপ তো চালায় নি... অন্যান্য দেশেও চালাচ্ছে ...আমাদের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীও তো নারী। এছাড়া অন্যান্য রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রেও অবদান রাখছে।
আর আমেরিকাতে অল্পের জন্য নারী প্রেসিডেন্ট তো হয়েই গিয়েছিল....তারপর তাদের স্পীকার ন্যান্সি পোলেসি... তারপর ধর নারীরা এখন সব খেলাধূলাতেও অংশ নিচ্ছে... এমন কী রেসলিং ও খেলছে! তারপর মহাশ ুন্যেও যাচ্ছে.... নারীরা কী করছে না... নারী সব ক্ষেত্রে তার অবদান রাখছে তাহলে তুমি তাদের যুক্তিগুলো অযৌক্তিক বলছ কেন ?
- এ বিষয়ে প্লীজ আর কথা বাড়াবো না !
= না তুমিই বল নারীরা কী সব ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করছে না ! তারা এখন কী নয় !
- হু ুঁ(দীর্ঘশ্বাস) নারীরা কী নয় !! বিশ্ব নারী দিবস ঃ নারীরাও পুরুষ !!!!!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।