আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই মূহুর্তের ভাবনা....

"কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরিয়া গেছে.। "

বিদ্রোহের নামে বিডিআর জোয়ানরা যা করেছে তা কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এক কথায় এটা গুরুতর অন্যায়। দাবি দাওয়া আদায়ের জন্য সহিংস পথ বেছে নিতে হবে সভ্য সমাজে এমন কথা কেউ মেনে নিবেনা। নৃশংস এই হত্যাকান্ডে সারাদেশ স্তম্ভিত ও হতবিহ্বল।

কয়েক ঘন্টার মধ্যে দেশ ও জাতির যে ক্ষতি হয়ে গেল তা অপূরণীয়। সে যাই হোক ঘটনা যা ঘটার তা ঘটে গেছে। এই মুহুর্তে সরকারকে সর্বোচ্চ দক্ষতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। সকল রাজনৈতিক দলসহ দেশের জনগনকে সকল বিতর্কের উর্ধে উঠে সরকার কে সহযোগিতা করতে হবে। সেনাবাহিনী যাতে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে আইন নিজেদের হাতে তুলে না নেয় সে ব্যাপারে সরকার কে সতর্ক থাকতে হবে।

গ্রেফতারকৃত বিডিআর সদস্যদের ব্যাপারে সরকারকে সজাগ থাকতে হবে যাতে সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাতে নতুন করে কোন রকমের মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা না ঘটে। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার পূনরাবৃত্তি না ঘটে সরকার কে সেই ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। দেশের সশস্ত্র বাহিনীসমূহ পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রনের ব্যাপারে আরো কৌশলী হতে হবে। অন্য কোন পক্ষ বা প্রতিবেশী কোন রাষ্টের প্রচারণায় বিভ্রান্ত হয়ে হুট করে কোন ব্যাক্তি বা গোষ্টিকে দোষী সাব্যস্ত না করে এই ঘটনার সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে।

জনগনকে তদন্তের ফলাফল জানাতে হবে। দোষী ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সরকার কে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার পরিচয় দিতে হবে যাতে করে এই ঘটনা নিয়ে কোন প্রকারের রাজনৈতিক কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির সুযোগ না থাকে। পুলিশ,বিডিআর, আনসারসহ দেশের অতি প্রয়োজনীয় বাহিনীসমূহের জীবন ও জীবিকার মান উন্নয়নে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। এসব বাহিনীর সদস্যগন যাতে দুর্মূল্যের বাজারে পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে পরে বাঁচতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।

এই কথা সত্য যে আর্থিক টানাফোঁড়েন মানুষকে বিভ্রান্ত করে এবং সীমালংঘন করতে প্ররোচনা দেয়। দেশের বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে(সামরিক,আধাসামরিক,বেসামরিক)সুযোগ সুবিধা কেন্দ্রিক দৃশ্যমান বৈষম্য সমূহ যথাসম্ভব কমিয়ে আনতে হবে। দেশের বিভিন্ন প্রশাসনে সামরিক বাহিনী থেকে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিয়োগের প্রচলিত ধারা থেকে কৌশলে বেরিয়ে আসতে হবে। কেননা সেনাবাহিনীর অতি ক্ষমতায়ন একটা রাজনৈতিক সরকারের জন্য শুভ নয়। ভবিষ্যতে অপারেশন ডাল-ভাতের মত বাণিজ্যিক ও নিজস্ব পেশা বর্হিভূত কাজে শৃঙ্খলা বাহিনী সমুহকে জড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা দেশের গোয়েন্দা সংস্থা গুলোর চরম ব্যর্থতা কে ফুটিয়ে তুলেছে। এই ব্যাপারে গোয়েন্দা প্রধানদের ডেকে ব্যর্থতার কারন জানতে হবে। প্রয়োজনে সংস্কারের মাধ্যমে গোয়েন্দা সংস্থা সমূহকে ঢেলে সাজাতে হবে। দক্ষ জনবল নিয়োগ ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত উন্নয়ের মাধ্যমে গোয়েন্দা সংস্থা সমূহের আধুনিকায়ন করতে হবে। সংস্থার কর্মকান্ডের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

ভবিষ্যতে এই ধরনের কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনায় সাধারণ জনগনের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি যাতে না হয় সেই জন্য সশস্ত্র বাহিনী সমুহের সদর দফতর ও ক্যাম্প জাতীয় যে কোন প্রতিষ্ঠান আবাসিক এলাকা থেকে দুরে সরিয়ে নেওয়ার পরিককল্পনা গ্রহন করতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে তা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হতে হবে। সর্বোপরি দুদিন আগে ঘটে যাওয়া তিক্ত ঘটনা যাতে এই দুটি পরস্পর সহযোগী বাহিনীর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী অনৈক্য সৃস্টি না করে সে ব্যাপারে সকল কে সজাগ ও আন্তরিক থাকতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।