আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই অপরাধ কি ক্ষমার যোগ্য???

সকল অন্ধকারের হোক অবসান

প্রথম দিন সকলেই ঘটনার ভয়াবহতা তেমনভাবে বুঝতে পারেননি। বিডিআর জওয়ানরা দুপুরের মধ্যেই নিজেদের সাধারণ ক্ষমতার আওতায় নিয়ে আসার জন্য আবেদন করতে থাকে। তখনো আমরা জানি না- অর্ধশতাধিক প্রাণ চলে গেছে। শুধু তাই নয়, লাশ ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে পয়ঃনিষ্কাশনের পথে। আমরা তখনো জানি না, অফিসারদের ঘরে ছোড়া হয়েছে বৃষ্টির মতো বুলেট আর ব্যবহার করা হয়েছে ভারী অস্ত্র যাতে বারান্দার দেয়াল পর্যন্ত উড়ে গেছে।

তখনো আমরা জানি না, গুটি কয়েক জওয়ান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের খুন করেই ক্ষান্ত হয় নি, লুট করেছে তাদের ঘরবাড়ি। আগুন লাগিয়ে দিয়েছে ঘরে। তখনো আমাদের অজানা, দুটি গর্ত খুড়ে গণকবর দেয়া হয়েছে চৌকস ও তরুণ সেনা কর্মকর্তাদের। কিন্তু যখন আমরা জানলাম, আমাদের অনুভূতি বিস্মিত হয়। আমাদের মন বেদনায় ভারাক্রান্ত হতে থাকে।

আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে, সাধারণ বেতন-ভাতার জন্য এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ?? বাড়তি ডিউটির টাকার জন্য লাশ ফেলে দেয়া হবে নর্দমার ড্রেনে?? ডাল-ভাত অপারেশনের জন্য গুম করে ফেলা হবে আপন দেশের সেনাদের?? এতোটাই ক্ষোভ?? কেমন যেন মেলে না। কোথায় যেন একটা শুভঙ্করের ফাঁকি। জওয়ানদের যে দাবী আর তা অনাদায়ে যে পাশবিক আচরণ, কোথায় যেন একটা গরমিল দেখা যায়। না, সাধারণ বেতন-ভাতার জন্য জওয়ানদের এমন আচরণ করার কথা নয়। তাও আবার সকলে নয়।

গুটি কয়েক জওয়ান করেছে ঐসব কাজ। তাহলে??? আমরা এখন জানি, সেদিন সকাল থেকে কী কী ঘটেছিলো। প্রত্যক্ষদর্শীর মুখ থেকে আমরা জানি, কি দুর্বিসহ রাত ও দিন কেটেছে, গুটি কয়েক জওয়ানের কারণে। তাই, আমরা বলতে চাই, মৃত্যুর যে তাণ্ডব আমরা দেখলাম, মানুষের পৈশাচিকতার যে নমুনা আমরা পেলাম, তাতে একটা দাবীই সামনে চলে আসে। বিচার চাই।

সাধারণ ক্ষমা হলো তাদের জন্য, যারা ঘটনার দিন ঘটনাক্রমে ও দুর্ঘটনাবশত ফেসে গেছে। কিন্তু যারা সরাসরি খুনের সঙ্গে জড়িত, যারা মাস্টার মাইন্ড, তাদের ছেড়ে দেয়া হলে, আরো বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারি আমরা। তাই যত দ্রুত সম্ভব তাদের সনাক্ত করে জাতির সামনে হাজির করা হোক। জবানবন্দী প্রকাশ করা হোক। আমরা জানতে চাই, খুব কি অ-সুখে ছিলেন, যেখানে কোটি কোটি মানুষ চাকুরী হারাচ্ছে? যার জন্য এতো এতো তাজা প্রাণকে পাখির মতো গুলি করে মারতে হবে? যার জন্য রাস্তায় বন্দুক তাক করে সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালাতে হবে? খুব কি বিপদে পড়ে গিয়েছিলেন, যেটা হলে কর্মকর্তাদের পরিবারের ওপর হামলে পড়তে হবে? এগুলো কি ক্ষমা করা যায়?? উত্তর পাওয়া যাবে, প্রিয়জনহারা মানুষের চোখের পানিতে।

উত্তর পাওয়া যাবে, এ দেশের কোটি কোটি মানুষের দীর্ঘশ্বাসে। বাংলাদেশের আকাশটা এখন বাইরে গিয়ে দেখেন, আক্ষরিক অর্থেই কালো মেঘ জমেছে সেখানে। কষ্টের কান্নাগুলোই যেন বৃষ্টি হয়ে জমেছে মেঘের ভেতর। থেকে থেকে বিজলি চমকাচ্ছে, যেন গুমড়ে গুমড়ে উঠছে সমগ্র জাতির শোক।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।