আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ মেয়েটির জন্মদিন

জ্বলে উঠার অপেক্ষায় নিভু নিভু প্রদীপ।

জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে ২১শে ফেব্রুয়ারীর সকালে ছেলেটি মেয়েটিকে ফোন করে। > হ্যাপি বার্থডে। সে হাসে। এমন নয় যে মেয়েটি এর আগে কখনো হাসেনি।

মেয়েটা সবসময় হাসিখুশি। যেন পৃথিবীর সব সুখ তার ঐ দুটো ঠোটে। এমনকি মেয়েটার যখন কোন অজানা কারণে খুব কষ্ট হয়, কাঁদতে ইচ্ছে করে খুব। তখনও তার চেহারাতে উচ্ছলতা থাকে। মেয়েটাকে হাসিখুশি দেখতেই ছেলেটার ভালো লাগে।

প্রায় দশবছরের বেশি সময় ধরে ছেলেটা মেয়েটাকে চেনে। কিন্তু মেয়েটাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর সময় ছেলেটার কোনদিন ই ছিল না। আজকে কিনা সে ভুল দিনে শুভেচ্ছা জানাতে ফোন করে। ছেলেটি অবাক হয়ে জিগেস করে: > আজ তোমার জন্মদিন না? মেয়েটি হ্যা না কিছু বলে না। মেয়েরা সবসময় রহস্য করতে পছন্দ করে।

ছেলেটার এসব একদম পছন্দ না। কিন্তু ছেলেটা এখন চট করে ফোন রাখে কিভাবে? মেয়েটা রহস্য করুক আর যা-ই করুক ছেলেটা কথা চালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে সে আবার জিগেস করে: > আচ্ছা, তোমার জন্মদিন তাহলে আজকে না? মেয়েটা এবারও কিছু বলে না,শুধু হাসে। কি যন্ত্রণা! > শোন মেয়ে তোমার জন্মদিন কবে বলতে এতো ভণিতা করছ কেন? >> থাক না। আপনি এতোদিন যখন আমার জন্মদিন মনে রাখেন নি।

আজ জেনে কি করবেন? কোন এক অজানা কারণে মেয়েটা ছেলেটাকে আপনি করেই বলে। > তুমি কি বলবে না? >> না। আপনি আমাকে উইশ করার জন্য ফোন করেছেন আমি অনেক খুশি হয়েছি। হোক না একদিন আগে কিংবা পরে। আমি কোন কিছু মনে করিনি।

মেয়েটার সহজ সরল উত্তর। > হুমম। আমি স্যরি। তুমি আমাকে একটিবার মনে করিয়ে দাও। তারপর আমি আর কোনদিন ভুলব না।

প্রমিজ। >> মনে করিয়ে দেবার দরকার কি? আপনি চাইলে তো বের করতে পারেন। জন্মদিনের উইশ পাবো এই আশায় আমি কাউকে জন্মদিন বলে বেড়ায় না। ওরেরে। > শোন, তোমার জন্মদিন কবে সেটা জানার জন্য তুমি কি চাও আমি তোমার বাবা মার সাথে কথা বলি? এটা তোমার কাছে কি খুব শোভনীয় মনে হবে? >> তা করতে হবে না।

আপনি আমাকে এতোদিন ধরে চিনেন কোনদিন উইশ করেন নি। আজকে ফোন করেছেন ভুল দিনে। পরেরবার হয়ত দেখা যাবে আপনি খুবই ব্যস্ত, ফোন করার সময় থাকবে না। অথবা এমন ও তো হতে পারে আপনি আবার ভুলে যাবেন! তারচে আপনি আমাকে ভুল দিনে উইশ করুন। আমি কিছু মনে করব না বরং অনেক খুশি হব।

> আচ্ছা, ঠিকাছে। তুমি বলতে না চাইলে তো কিছু করার নেই। ছেলেটা এবার চুপ হয়ে যায়। কি বলে বুঝতে পারছে না। >> হ্যালো, আছেন? > হুম।

>> কথা বলেন না কেন? > তুমি বল। আমি শুনছি। >> আমি ছোট মানুষ। বলার মত আমার তেমন কিছু নেই। আপনি বরং আপনার রঙিন জীবনের গল্প শোনান।

> রঙিন! যাপিত জীবনের কথা আর কি বলব। >> রঙিন ই তো। আপনি অনেক ব্যস্ত মানুষ। আপনি কষ্ট করে আমাকে ফোন করেছেন। এটা আমার জন্য অনেক কিছু।

আপনার কাছ থেকে যা ই শুনব আমার কাছে সেটা রঙিন। হোক না যাপিত জীবনের কাহিনী। > কিচ্ছু ভাল্লাগে না। সব ই জাগতিক চাহিদা। বুঝছো? আচ্ছা তোমার জন্মদিনটা কবে বলে ফেল না প্লিজ।

>> বলে দিলে তো আপনি ফোন রেখে দিবেন। মাসে কিংবা কয়েক মাসে আপনার একটা ফোনের আশায় তীর্থের কাকের মত অপেক্ষা করি। আপনার সাথে যেদিন আমি কথা বলে দিনের শুরু করি সে দিনটা আমার অনেক ভালো কাটে। সেটা তো আর আপনি বুঝবেন না। > হুম।

তোমার সাথে কথা বলতে আমার ও অনেক ভালো লাগে। মেয়েটি হয়ত মনে মনে বলে তাইলে সপ্তাহে অন্তত একদিন কি আমার সাথে কথা বলতে পারেন না! > তারপর তোমার ইউনিভার্সিটি জীবন কেমন যাচ্ছে? >> সেটা চলে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে খুব খারাপ লাগে। > কেন? >> জানিনা। আচ্ছা, আপনি কি জানেন আমার ছোট্ট পৃথিবীতে আপনি আমার সবচে প্রিয় একজন মানুষ? ছেলেটি কিছু বলে না।

এ ধরণের প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া ছেলেটির পুরনো অভ্যাস। হয়ত সে মনে মনে কিছু একটা বলতে চায়। > শোন আমি এখন ফোন রাখব। আমার খুব ঘুম পাচ্ছে। >> আপনি সকাল সকাল একটি মেয়ের ঘুম ভাঙিয়ে নিজে ঘুমুতে যাবেন এটা কেমন কথা।

> তো কি করব সারাদিন বকবক করে যাব? >> না আপনাকে বকবক করতে হবে না। একটু মজা করলাম। আর হ্যা আমার জন্মদিন ২২শে ফেব্রুয়ারী। মেয়েটা এবার ও হাসে। > ঠিকাছে আমি কালকে আবার ফোন করব।

>> সত্যি ফোন করবেন? > হ্যা করব। এখন বাই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।