প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেই মুরাদপুর-অক্সিজেন সড়কের সম্প্রসারিত অংশ দখলে চলে গেছে। সড়কজুড়ে ফুটপাত ও সম্প্রসারিত অংশে নানা রকম পণ্যের পসরা সাজিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছেন দখলদারেরা। এ ছাড়া সড়কের বিভিন্ন অংশে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত।
ফলে যাত্রীদের সাড়ে তিন কিলোমিটারের এ সড়ক পাড়ি দিতে সময় লাগছে স্বাভাবিকের তুলনায় দুই-তিন গুণ। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গাড়িচালকেরা।
সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে প্রায় সময় তাঁদের গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাসগুলো এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে। এ ছাড়া উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া, দুই পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির বাসিন্দারা এলাকায় যাওয়ার জন্য এ সড়ক ব্যবহার করে থাকেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক হেলাল উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে জানান, সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে প্রতিদিনই যানজট লেগে থাকে। ১০ মিনিটের এ সড়ক পাড়ি দিতে লাগে ২০ থেকে ৩০ মিনিট।
এতে দুর্ভোগের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সময়ও নষ্ট হচ্ছে। আবদুস সাত্তার নামের একজন চালক জানান, সড়কের দুরবস্থার কারণে গাড়ি চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। রাস্তায় বড় বড় গর্তের কারণে গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গত জানুয়ারিতে মুরাদপুর থেকে অক্সিজেন পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কের সম্প্রসারণ ও সংস্কার প্রকল্প হাতে নেয়। এ প্রকল্পে প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
গত জুনে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি বলে চউক সূত্রে জানা গেছে।
প্রকল্প পরিচালক ও চউকের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহাবুদ্দিন খালেদ প্রথম আলোকে বলেন, ছয় মাসে সড়কের ফুটপাত ও সম্প্রসারিত অংশ দখলমুক্ত করতে দুইবার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। দখলদারদের জরিমানাও করা হয়। কিন্তু সপ্তাহের ব্যবধানে পুনরায় দখল হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার আবারও অভিযান চালানো হবে বলে জানান তিনি।
সোমবার সকালে সরেজমিন পরিদর্শনে তাঁর কথার সত্যতা পাওয়া গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, শতাধিক গাড়ির যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ী তাঁদের দোকানের মালামাল রেখেছেন মুরাদপুর থেকে বিবির হাট পর্যন্ত সড়কের ফুটপাত ও সম্প্রসারিত অংশে। রাস্তার ওপর মেরামত করা হচ্ছে পুরোনো ও নষ্ট গাড়ি।
এ প্রসঙ্গে চিটাগং মোটরসের স্বত্বাধিকারী তাহের মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংস্কার শেষ না হওয়ায় সড়কজুড়ে এলোমেলো অবস্থা। তাই দোকানের জিনিসপত্র ওখানে রেখেছি।
তবে রাস্তার কাজ শেষ হয়ে গেলে ফুটপাত ছেড়ে দেব। ’
সড়কের মুরাদপুর, বিবিরহাটের কাঁচাবাজার ও হামজারবাগ এলাকায় রাস্তার পাশে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন ভবন। এসব ভবনের নির্মাণসামগ্রী রাখা হয়েছে রাস্তার ওপরেই। অক্সিজেন, হামজারবাগ, রৌফাবাদ ও আতুরার ডিপো এলাকায় ফুটপাত ও রাস্তার ওপর গড়ে উঠেছে ভাসমান দোকান। মুরাদপুর থেকে আতুরার ডিপো পর্যন্ত বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
অনেক জায়গায় রাস্তার কার্পেটিং উঠে গেছে।
সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্প শেষ হতে আর কত দিন সময় লাগবে, এমন প্রশ্ন করলে প্রকল্প পরিচালক শাহাবুদ্দিন খালেদ জানান, প্রকল্পের কাজ প্রায় ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে পুরোপুরি কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।