সত্য একদিন প্রকাশ পাবেই, আমি না করলে আপনি করবেন, না হলে আরেকজন করবে। প্রকাশ হবেই প্রথম পর্ব লেখার পর মনে বড় ভয় কাজ করছিল। কিন্তু সকলের অনুপ্রেরনায় ২য় পর্বে আরও কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করলাম। যাই হোক ঐ লেখা অনেকের কাছেই চক্ষূশূল হয়ে দারিয়েছে তাতে আমার মাথাব্যথা নেই। কারন আমার উদ্দেশ্য সফল।
বেশ কয়েকজন তাদের প্রশ্নের জবাব পেয়েছে, যা ঐ লেখার মন্তব্যে বুঝলাম। ১ম লেখা মিস করলে Click This Link পড়ে আসুন।
আরো অনেক প্রশ্ন পেলাম যার উত্তর দেওয়াকে নৈতিক দায়িত্ব মনে করলাম। যাই হোক মূল লেখাতে যাইঃ
তোমাদের ভ্রান্ত চিন্তা/ধারনাঃ
ট্রাইবুনালের রায়ের পর আসামীর ফাসির জন্য রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করতে পারেন না। আপিল শুধুমাত্র শাস্তি কমানোর জন্য করা যাবে।
তাই কাদের মোল্লার রায়ের বিরোদ্ধে আইন অনুসারে রাষ্ট্র আপিল করলে তা হবে আইনবিরোধী ও একনায়কতান্ত্রীক, যা গনতন্ত্রের চেতনা বিরোধী…
আমাদের উত্তরঃ
আইনের ছাত্র হিসেবে প্রশ্নটি আমার কাছে খুব আজব লেগেছে। আরে ভাই তোরা আইন না জেনেই ছাগলের বাচ্চার মত লাফালাফি করলে আমরা আইন পড়ে কি ঘোড়ার ঘাস কাটব??
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত হল বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এর আপিল বিভাগ (অনুচ্ছেদ-৯৪) । আর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন হল বাংলাদেশ সংবিধান। সুতরাং অন্যান্য আইন এর উপর প্রাধান্য পাবে বাংলাদেশ সংবিধান(অনুচ্ছেদ-৭)।
বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১০৪ অনুযায়ী, আপিল বিভাগ রিট বা ডিগ্রী জারী করতে পারে।
সুতরাং আপিল বিভাগ স্বপ্রনোদিত হয়ে রীট জারী করলে কাদের মোল্লার মামলা পুনরায় বিচার করা যাবে। তাই বলছি তোমাদের আব্বাজানদের বিচার আপিল বিভাগ ইচ্ছা করলেই করতে পারবে, বাচার রাস্তা বন্ধ।
আরেকটি উপায় আছে, যেহেতু ট্রাইবুনাল আইনে বলা আছে্ যদি কোন আসামী মামলায় খালাস পায় তার বিরোদ্ধে আপিল করা যাবে। কাদের মোল্লার মামলায় ৬টি অভিযোগের ৫টি নিঃসন্দেহে প্রমানিত হয়েছে আর একটি প্রমানিত হয় নাই। তাই যে একটি বিষয়ে কসাই সাবেব খালাস পেয়েছেন সেই বিষয়ে ট্রাইবুনালে আপিল করা যেতে পারে।
আমার জানা মতে এই দু’ভাবে তার বিচার পুনরায় করা যেতে পারে। সুতরাং তোমাদের আব্বাজানদের এখনও মুক্তি মেলেনি। বাছাধনেরা সাবধান, আজ জেগেছে এই জনতা।
তোমাদের ভ্রান্ত চিন্তা/ধারনাঃ
সায়দী সাহেবের মত মানুষকে বিচারের সম্মুখীন করা হলে বাংলাদেশের কেউ নেই যার বিচার দরকার নেই। যিনিই ইসলামের পথে চলেন তাকেই এরকম পরিক্ষার সম্মুখীন হতে হয়।
তাই বলছি, উনার বিরোদ্ধে যা চলছে তা ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছু না। সায়দী সাহেবের ফাসি হলে বাংলাদেশে ইসলাম টিকে থাকবে না।
আমাদের উত্তরঃ
আল্লাহতালা পৃথিবীতে এমন কাউকে (নবী ও রাসুলগ্ন ব্যতিত) সৃষ্টি করেন নাই যে কোন ভূল বা পাপ করে নাই । যেহেতু সায়দী নবী বা রাসুল নন সেহেতু তিনি ভুল বা পাপ করবেন এটা স্বাভাবিক। আর যিনি পাপ করবেন তার বিচার হওয়া দরকার।
কারন মানুষ বিধায় উনি ভুল করেছেন। আর সেই ভুলটি যদি হয় মানুষ হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ, তাহলে তার বিচার করা অনিবার্য । সুতরাং ইসলামের স্বার্থেই সায়দীর বিচার হওয়া দরকার।
দিত্বীয়ত, সায়দী ও ইসলামের মধ্যে আমি কোন সম্পর্ক দেখি না। ।
যদি রাজাকার সায়দীর মৃত্যুদন্ড হয় তবে ইসলামের কোন ক্ষতি হবে না। বরং উপকার হবে। কারন ইসলাম হত্যাকারীর বিচারের বিধান করেছে। তাই হত্যাকারীর বিচার হওয়া মানে ইসলামের শাষন কায়েম হওয়া। তাই আপনি যদি সত্যিকার ইসলামের শাষন কায়েম করতে চান তাহলে তাদের বিচারে সহযোগীতা করুন।
তাদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার হোন।
অন্যান্যঃ
এছাড়াও তাদের যুক্তি তাদের সমাবেশের অনুমতি দিলে তারা শাহবাগের থেকেও বেশী মানুষ মিলিত হবে। ভাল কথা। প্রশাষনের অনুমতি নেওয়া ভাল। কিন্তু আমার মনে প্রশ্ন জাগে, কাদের মোল্লার বিচার বানচাল করতে বা আপনাদের বাবাদের বাচাতে হরতাল দিয়েছিলেন, সেদিন কোন প্রশাষনের অনুমতি নিয়ে বাসে আগুন দিয়েছিলেন?? কোন প্রসাষনের অনুমতি নিয়ে পুলিশের উপর হামলা করেছিলে???
ও রে ভাই, তোর বিবেক, বুদ্ধি কি মারা গেছে?? কেন তুই বুঝিস না, যে অপরাধ তারা করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য।
তোর মা-বোন এর ইজ্জত বা তোর বাবা-ভাই-আত্মীয় স্বজনের বিপদে যেভাবে এগিয়ে আসিস। সেইভাবে কেন এগিয়ে আসছিস না তাদের সাহায্য করতে যারা তাদের মা-বাবা-ভাই-বোন-আত্মীয়দের কে হারিয়েছে?? তাই চল তাদের বিচারের দাবিতে শাহবাগে যাই…
জানি তার উত্তর নেই তোমাদের কাছে। কারন তোমাদের আব্বাজানদের সত্য ও ন্যায় বিচার হলে ফাসি নিশ্চিত। তাই তোমাদের আব্বাজানেরা তোমাদের লেলিয়ে দিয়ে ফায়দা নিতে চায়।
আল্লাহ তোমাদের বুঝার জন্য তওফিক দান করুন।
সবাইকে হেদায়েত দান করুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।