কানাকে কানা, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না, ইহাতে উহারা কষ্ট পায়
এদেশের মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সম্ভবতঃ বৃটিশ আমল থেকে এটা চালু হয়েছে। মাদ্রাসাগুলো চলে মাহফিলে আগত ধর্মপ্রাণ মানুষদের দান খয়রাতের উপর। দান খয়রাত আর কিছু ধর্মীয় উপদেশ বাণী শুনে সাধারণ মানুষ জ্ঞান লাভ করে। এতে রাজনৈতিক বা অন্যকোন মতাদর্শ তেমন একটা প্রচার পায় না।
স্বভাবতঃ রাজনৈতিক দলের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে উক্ত মাহফিলে দাওয়াত করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানগণ দাওয়াত পান। এটা একটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। গ্রামীণ এলাকার এই প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের শীত কালীন সময়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কারণ কৃষকের ঘরে ফসল আসে, সেই সাথে আবহাওয়াও অনুকুলে থাকে।
নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার মাড়িয়া মাহমুদিয়া মাদরাসা, হাবিবাবাদ (তারানগর) মাদরাসা, ও কুমারখালী মাদরাসার বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই মাদ্রাসাগুলো ১০ কিঃমিঃ বর্গ এলাকা সীমানা প্রান্তে প্রতিষ্ঠিত।
কেন বন্ধ করা হয়েছে? কারণ এই মাদরাসা গুলোতে ওয়াজ মাহফিল ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের পছন্দ হয়নি। মাড়িয়া মাদরাসায় একই সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস ও বিএনপি সমর্থিত সদ্য নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবুকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। জনাব আঃ কুদ্দুস-এর নির্দেশেই মাদরাসা কমিটি ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করতে বাধ্য হয়।
একই কারণে কুমারখালী মাদরাসার ওয়াজ মাহফিলও বন্ধ করা হয়েছে। উল্লেখ যে, জনাব আঃ কুদ্দুস নির্বাচনের পরেই তার নানা উদ্ভট কর্মকান্ডের জন্য পত্রিকার শিরোনাম হয়েছেন।
গতকাল হাবিবাবাদ (তারানগর) মাদরাসায় মাহফিল শুরু হওয়ার পর আগত অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবু বক্তৃতা শেষ করতেই স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতারা প্রধান বক্তার হাত থেকে মাইক কেড়ে নিয়ে মাহফিল বন্ধ ঘোষণা করে এবং হাজার হাজার মানুষের সামনে প্রধান ব্ক্তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালজ করে তাড়িয়ে দেয়। সম্ভাব্য গোলোযোগের আশংকায় মাহফিল পরিচালনাকারী কমিটি তাৎক্ষনিক মাহফিল বন্ধ করে দেয়।
মাহফিল শুনতে আসা হাজার হাজার সাধারণ মুসল্লী এধরণে ন্যাক্কারজনক হস্তক্ষেপে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
নানা কথার গুঞ্জন শোনা যায়, তাহলে কি সরকার মাদরাসাগুলোতে আর ওয়াজ মাহফিল করতে দিবে না? সাধারণ ইসলামপ্রিয় মানুষ আতংকিত হয়ে পড়েছে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, উক্ত মাদরাসাগুলোতে আওয়ামীলীগের নেতারাই পরিচালনা কমিটিতে আছেন। অথচ তারাই মাহফিল পরিচালনা করতে পারলেন না।
বিষয়টি স্বাভাবিক নয়। মাদরাসা শিক্ষার যারা বিরোধীতা করেন তারা এই পোষ্টে সজোরে মাইনাস বসাবেন।
সমস্যা নাই। জনগণের বিপক্ষে গিয়ে তাদের আবেগে আঘাতকারী ক্ষমতাসীন দলের চামচাদের এহেন কর্মকান্ড নিয়ে এখনই ভাবার সময় এসেছে। যদি তা করতে ব্যর্থ হয় তবে তাদের অবশ্যই চরম মূল্যদিতে হতে পারে। এই খবরগুলো কোন পত্রিকায় আসেনি যে লিংক দিব। তাই যাচাই করার সুযোগ কম।
তবে যারা বড়াইগ্রাম উপজেলায় বসবাস করেন এবং আত্নীয় স্বজন আছেন তাদের নিকট থেকে সত্যতা যাচাই করতে পারেন।
পরবর্তী এক পোষ্টে আমাদের সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসকে নিয়ে লেখার ইচ্ছা রইল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।