আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক অযোগ্য মামা ও তার অংকন প্রতিভার গল্প

মনটা সাদা , ভবিষ্যত কালো , দুনিয়া রংগিন -----> সাদাকালোরংগিন

আমি আর্টের টেকনিক্যাল খুঁটিনাটি কিছুই বুঝি না। এমনকি এবিষয়ে কোনো পড়াশুনাও নাই। তারপরও শিল্পের এই দিকটা আমাকে খুব টানে। একটা মুগ্ধতা ছিল সব সময়ই। নিজে যেমন কলস আঁকলে ড্রয়িং টিচার খাতা নিয়ে হাসতে হাসতে বলত " তুই কিছু আঁকলে নিচে নাম লিখে দিস, না হলে কলস কে বদনা মনে হয় " ।

আমার হাতি সবসময়ই ছাগলের কাছাকাছি হতো, পেঁপেঁ হতো লিচুর মতো। আমার গোলাপফুল আঁকা দেখলে দুনিয়ার কোন প্রেমিকই তার প্রেমিকাকে ভুলেও কোনদিন গোলাপফুল দিতে চাইবে না । ক্যাডেট কলেজের আর্টের শিক্ষক আরিফুর রহমান স্যারের কিছু শর্ট লিস্টেড তালিকায় আমার নাম ছিল যাদেরকে শুধু অন্য বিষয়ের রেজাল্টের জোরে আর্টে পাশ করতে হতো। আর্টের জোরে আর্ট পরীক্ষায় জীবনেও পাশ করতে পারতাম না । এমনকি আর্টের খাতা দেয়ার পরে প্রাপ্ত নম্বরটা না দেখেই স্যারের কাছে হাজির হতাম পাশ মার্ক আদায়ের জন্য।

এহেন আমি বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার সময় কি মনে করে বুঝি ইন্জ্ঞিয়ারিং এর পাশাপাশি আর্কিটেকচারে ভর্তির ফরমও কিনেছিলাম । ভেবেছিলাম ইন্জ্ঞিয়ারিং এর পরীক্ষা খারাপ হলেও হয়ত আর্কিতে চান্স পাওয়ার একটা চান্স থাকবে। কিন্তু আর্কির পরীক্ষা দিতে বসেই বুঝতে পারলাম যে এখানে যদি আমাকে বিশেষ বিবেচনাও ভর্তি করায় আমি এর ক্লাস টেস্টেই কোন দিন পাস করতে পারব না। মনে আছে আর্কির ভর্তি পরীক্ষার দিনে আমার খাতা দেখে পাহারারত পরীক্ষক আরেকজনকে ডেকে গম্ভীর মুখে আমার খাতা দেখালেন । আমার নাম ও কলেজ জিজ্ঞাসা করলেন ।

আমি ভাবলাম বুঝি একেবারে খারাপ হচ্ছে না। কলেজের মুখ হয়ত বুয়েটেও আমি আলোকিত করব। কিন্তু আমার সব বিশ্বাস ভেন্গে দিয়ে অপর শিক্ষকের হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ার দশা। নিজের এই অপারগতার কারনেই আরো আর্টের প্রতি টানটা বেশি। তবু এর ধারে কাছে কোনদিন যাইনা পাছে।

অথচ আমার ১০ বছরের ভাগ্নী আমার মোবাইলের টাচস্ক্রিনে স্টাইলাস দিয়ে এমন সব ছবি আঁকে যে আমার মাথায় পিস্তল ধরলেও জীবন বাঁচানোর তাগিদেও এর ধারে কাছে এমন ছবি আমি কোনদিনই আঁকতে পারব না। আপনারাই দেখেন ছবিগুলো , আর দেখেন এমন গুনীভাগ্নির মামা হিসাবে পরিচয় দিতে কেন আমি লজ্জা পাই :

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।