আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গাজরের জ্যুস আর ব্যাচেলর চা খাওয়ার অভিজ্ঞতা !!

এই ব্লগের সব লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
আমরা ৪ - ৫ জন কয়েকদিন আগে গিয়েছিলাম শপিং এ ... সুপারমার্কেট থেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় সব জিনিস কিনে যে যে যার যার বাসায় রওনা দেয়ার জন্য বিদায় জানাতেই আমাদের মধ্যে একজন (নতুন প্রবাসী ভদ্রলোক) বললেন -- আরে ভাই এখন বাসায় গিয়ে কি করবেন, পাশেই আমার বাসা, এক কাপ চা খেয়ে যান ... আমি আজকাল বেশ ভাল রান্না করতে পারি ... রাতে না হয় খেয়ে ও যাবেন ... রাতে খাবনা কিন্তু চা খাওয়া যেতে পারে শুনে উনার চোখে এমন আনন্দের ঝিলিক দেখা গেল যে মনটা ভাল হয়ে গেল, কিন্তু কে জানতো একটু পরেই অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য অবিস্মরনীয় অভিজ্ঞতা .... উনার বাসায় পৌছে , ঘরে ঢুকতেই সামনে এনে রাখলেন কুকিজ, চিপস আরো হাবি জাবি অনেক কিছু... আমরা বললাম না রে ভাই শুধু চা খাব আজকে ... চলেন আপনার কিচেনে গিয়ে একসাথে চা বানিয়ে আনি ... উনি রিতিমতো হুংকার দিয়ে বললেন আরে আপনারা আমার মেহমান আমার বাসায় এসে নিজেরা কেন চা বানাবেন ? .... আমরা বললাম আরে ভাই , আমরা এখানে সবাই ব্যাচেলর ... এখানে সবাই আমরা যে বাসাতেই যাই একসাথে রান্না করি ... এটা কোন ব্যাপার না .... কিন্তু তিনি তার কথায় অনড় ... উনি নাকি এক মাস এখানে থেকে অনেক কিছু রান্না করা শিখেছেন ... তাই আজকে কোনভাবেই আমাদের সাহাজ্য নিবেন না ... আমরাও আর জোরাজুরি না করে বললাম -- ঠিকাছে , আজকের চা আপনিই বানান ... আমরা ড্রইংরুমে বসি ... চায়ের পানি চড়িয়ে দিয়ে উনি বললেন -- ভাই আপনাদের একটা স্পেশাল জ্যুস খাওয়াই, .... নিজের হাতে বানানো... শপিং এ যাওয়ার আগে এটা বানিয়েছি বলতে বলতে দেখি এক জগ গাজরের জ্যুস আমাদের সামনে এনে হাজির করলেন ... বললেন -- আজকেই জ্যুস বানানোর ম্যাশিনটায় প্রথম জ্যুস বানালাম ... ফ্রেস জ্যুস খাওয়ার মজাই অন্যরকম ... বলতে বলতে তিনি আমাদের সবার জন্য গ্লাসে জ্যুস ঢেলে দিলেন ... ঐ দিকে তার চা প্রায় হয়ে গেছে বলে আমাদেরকে গাজরের জ্যুস খেতে বলে উনি কিচেনে চলে গেলেন .... প্রথম চুমুকে আমরা কেউই বুঝিনি আসল কাহিনী কি ... আরেকটু খাওয়ার পরে সবাই বুঝতে পারলাম -- এই জ্যুসের ভিতরে আদা দেয়া হয়েছে ... আর চিনির কোন নাম গন্ধ নাই ... একটু পরে উনি চা নিয়ে ঘরে ঢুকে জিজ্ঞেস করলেন -- কেমন লাগলো আপনাদের ? আমরা সবাই বললাম -- জিনিস তো ভাল তবে একটু অন্য রকম ! ঘটনা বুঝতে পেরে উনি গর্বিত হাসি উপহার দিয়ে বললেন -- আসলে হয়েছে কি জানেন , চিনি আমাদের সাস্হ্যের পক্ষে খারাপ, এ জন্য চিনি দেইনি ... আমাদের একজন বললো -- আর আদা ??? উনি বললেন -- গাজর মূলত ঠান্ডা জিনিস, শীতের দেশে এভাবে গাজর খেলে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা আছে ... এ জন্যই এর সাথে আদা দিয়েছি যাতে এই জ্যুস খাওয়ার ফলে কারো ঠান্ডা না লাগে ... উনার বক্তব্যে কি যে বুঝলাম তা নিজেই বুঝলাম না বলে বললাম -- ভাই চা দেন (মনে মনে বলছি এই জ্যুসের টেষ্ট অন্তঃত গরম চা দিয়ে মুখ থেকে মুছে ফেলা যাবে) ধুমায়িত রং চা সামনে আসতেই মনটা আনচান করে উঠলো এক চুমুক চায়ের জন্য ... কিন্তু যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয় টাইপ অবস্হা সেদিন আমাদের ... চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে আমরা সবাই একে অপরের দিকে তাকাচ্ছি আর চিন্তা করছি চায়ের স্বাদ তো এমন হওয়ার কথা না .... আমাদের মুখের অবস্হা দেখে হো হো করে হেসে উঠে ঐ লোক বললেন --- ঠান্ডার দিনে খেলে ভাল লাগবে বলে উপকার হবে ভেবেই রং চা বানিয়েছি , আর একে আরেক্টু টেষ্টি করার জন্য এর মধ্যে -- লবঙ্গ, দারুচিনি, এলাচ, ধনিয়া আর জিরা দিয়েছি .... আমরা একসাথেই বলে উঠলাম -- তাহলে মরিচ আর লবন কি দোষ করেছিলো ওগুলো বাদ দিলেন ক্যান ?
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।