যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরানী প্রকাশ্য পথে হত্যার প্রতিশোধ চায়না আমি তাদের ঘৃণা করি
নিয়মমেনে যে একঘেয়ে ঢেউগুলো আসছিল, মেয়েটির পা স্পর্শ না করেই ফিরে যাচ্ছিল। এবার তাই মেয়টি আরো একটু এগিয়ে দাঁড়াল। এবার জল উঠে এল হাঁটু পর্যন্ত। ঠান্ডা স্পর্শ। একটু যেন শির শির করে ওঠে।
একটা বড়মাপের ঢেউ এসে হাঁটুরও ওপর উঠে গেল। সাথে যে কুঁচো শামুকগুলো ভেসে এসেছিল তাদের অনেকেই হয়ত আর ফিরতে পারবে না জলে। বালিতে একদিন পরেই মৃত্যু ঘটবে।
তখন সন্ধ্যা নামছে খুব ধীরে। নববধুর দুই ভ্রুর মাঝখানে লাল টিপের মত সূর্যটা টুপ করে ডুবে গেল।
লাল কিছু আভা তখনো মেঘের গায়ে লেপ্টে আছে। নীল জলরাশী মুহূর্তে মনে হলো যেন বিশাল একটা দোয়াত উপুড় করে সমুদ্রে ঢেলে দেওয়া কালির মত। কৃষ্ণপক্ষ তাই চাঁদ উঠবে না। সেই কালো তির তির করে নড়তে থাকা জলরাশীর দিকে অনেকক্ষণ চেয়ে থাকল মেয়েটি। একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো নিজের অজান্তেই।
এরও সাত দিন পর আর একটি কিশোরী দাঁড়িয়েছিল বেলে ভূমিতে। একা। নিয়মমেনে যে একঘেয়ে ঢেউগুলো আসছিল মেয়েটির পা স্পর্শ না করেই ফিরে যাচ্ছিল। এবার তাই মেয়টি আরো একটু এগিয়ে দাঁড়াল। এবার জল উঠে এল হাঁটু পর্যন্ত।
ঠান্ডা স্পর্শ। একটু যেন শির শির করে ওঠে। একটা বড়মাপের ঢেউ এসে হাঁটুরও ওপরে উঠে গেল।
দরিদ্র ঘরের অনাদরে বেড়ে ওঠা মেয়েটি দুটি চোখ হারিয়ে কতকাল যে অন্ধ ছিল, সে মৃত কারো, যে কখনো সমুদ্র দেখেনি তার দান করা একজোড়া চোখ পেয়ে হাসপাতাল ছাড়ার পরদিনই বলেছিল....... ‘সমুদ্র দেখতে কি অনেক টাকা লাগে বাবা!’ দিনমজুর বাপ মেয়েটির এই আব্দার মেটানোর জন্য সেই রাতেই ঘরের খুঁটিতে জমানো পয়সা দিয়ে মেয়েকে নিয়ে চলে গেছিল সমুদ্রে। কেন তা নিজেও যানে না।
একটা জামা কিনে দিতে পারে না যে বাবা সে কেন এলো কেউ জানতে পারল না। বড় বড় দুটো চোখ দিয়ে মেয়েটি অবাক বিস্ময়ে অপার মমতায় সমুদ্র দেখতে থাকল। নিজের অজান্তেই জলের ধারা গন্ড বেয়ে নোনা জলে মিশে গেল!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।