আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই গন আন্দোলন এবং এর চেতনা ছিনতাই রুখতে হবে সকল আন্দোলনকারীদের।

আমি বিশ্বাস করি একজন খাঁটি ইমানদার মুসলিম আস্তিক হয়েও রাজাকারদের মানবতাবিরধিদের ফাঁসি চাওয়া যায়। গত ০৫-০২-২০১৩ তারিখে বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সংগ্রাম ১৯৭১ সনের মুক্তিযুদ্ধ বা জনজুদ্ধের সময়ে মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার বিচারের রায় ঘোষণা করা হয়। মহামান্ন আদালত কাদের মোল্লা কে ফাঁসি না দিয়ে এই রায়ে সমগ্র দেসবাসিকে হতাশ করে, এরই প্রতিবাদে ব্লগার, সাংস্কৃতিককর্মী ও সচেতন দেশবাসী শাহবাগ মোড়ের “প্রজন্ম চত্বর” এ গন আন্দোলনের ডাক দেয় যা পরবর্তীতে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারন মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী রা এতে একাত্মতা ঘোষণা করে এবং একটাই দাবি উঠে তা হল কাদের মোল্লা সহ সকল যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড। আমার মনে হয় জাতি হিশেবে এই আন্দলন আমাদের ইতিহাসের একটা অংশ কিন্তু বিচ্ছিন্ন ভাবে বিবেচনা করলে এর তাৎপর্য বিবেচনার বিষয় কিন্তু যদি আমরা এটাকে এর মুলে টেনে নিয়ে গিয়ে ভাবি অর্থাৎ ৭১ এর ঘটনার সাথে যুক্ত করি তাহলে এর গুরুত্ত অপরিসীম যা পরবর্তীতে ইতিহাসের অংশ হিশেবে গৃহীত হওয়ার দাবি রাখে।

একটি জাতি বা রাষ্ট্রের অস্তিত্তের পড়তে পড়তে ইতিহাস ছড়িয়ে থাকে, একিভাবে ইতিহাসের পড়তে পড়তে থাকে জাতি কিংবা রাষ্ট্রের বয়ান। আমরা জানি ইতিহাস রচিত হয় ইতিহাসের নিয়ন্ত্রণকর্তার ইচ্ছা অনুযায়ী ,এখন আমাদের দেখার বিষয় প্রত্যেকটি পূর্ববর্তী ক্রান্তিকালীন, সংকটকালিন মুহূর্ত আমাদের ইতিহাসের অংশ হতে পেরেছে কিনা । বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে এই দেশের শাসকশ্রেণী আমাদের ইতিহাসটাকে তাদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিশেবে ব্যাবহার করেছে বিভিন্নভাবে। স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি বা বিপক্ষ শক্তি ( যদিও রাজনৈতিক দল হিশেবে মুক্তিযুদ্ধে তাদের কোন বিশেষ ভুমিকা ছিলনা কেননা মুক্তিযুদ্ধ ছিল সাধারন জনগনের, এ দেশের কৃষক, শ্রমিক এবং মেহেনতি মানুষের ) যখন যে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসিন ছিল মুক্তি যুদ্ধের সঠিক ইতিহাস রচনার প্রয়োজনীয়তা টাকে এড়িয়ে গেছে যার কারনে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক চেতনা আমাদের বিশেষত যুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে ধরা দেয়নি, সেদিক থেকে দেখলে আজকের এই গনজাগরন আমরা কততুকু ঐতিহাসিক করে তুলতে পারব তার দায়িত্ব আমাদের উপরই। এ বিষয়ে আমরা হেগেলের কথা স্মরণ করতে পারি তার মতে “মানবের মুক্তি চেতনার যে বিকাশ বা অগ্রগতি তাইই হল ইতিহাস” সে হিশেবে আজকের এই গনজাগরন আমাদের ইতিহাস এবং ইতিহাসের অংশ।

এখন আমাদের দেখার এবং সচেতন থাকার বিষয় এই যে আমাদের এই ইতিহাস যেন কেউ চুরি বা ছিনতাই করতে না পারে এবং তা নির্ভর করছে আন্দোলনের নিয়ন্ত্রণকর্তাদের উপর যদি এই জাগরন “গনআন্দোলন” বা সাধারন আন্দোলন থেকে কোন রাজনৈতিক ফায়দা বা কোন দলবাজির জায়গায় চলে যায় তবে আবার এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় রুপান্তরিত হতে বাধ্য। আন্দোলন সংগ্রাম দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজের কবিতা এখানে স্মরণযোগ্য “মিছিলে সবাই এক স্বরে কথা বললেও তাদের ভিন্ন টান থাকে, রাজপথে কেউ আসে সংসার গোড়তে আবার কেউ আসে সংসার ভাঙতে” ঠিক তেমনি আজকের এই আন্দোলনে বেক্তিগত বা সমষ্টিগত ভাবে মানুষ এসেছে যাদের কেউ এসেছে শুধু চেতনার জায়গা থেকে, কেউ আপোষের জাগা থেকে,কেউ এসেছে দর্শনার্থী হয়ে , আবার কেউ এসেছে সামগ্রিক জনগনের সম্মিলিত প্রয়াসকে ছিনতাই করতে। এখনি আমাদের সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এই আন্দোলনের গতিপথ কে নিয়ন্ত্রণ করবে, কোনদিকে যাবে, আমাদের লক্ষ্য কি, লক্ষ্য পুরনের জন্য আমরা আরও কি কি করব। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল মুক্তিকামী জনগনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান আমরা যেন সজাগ থাকি আমাদের চেতনা, আমাদের আদর্শ যেন কেউ রাজনৈতিক বেড়াজালে কুক্ষিগত করতে না পারে। অতন্দ্র প্রহরীর মত আমাদের দিবারাত্রি সজাগ থাকতে হবে তাহলেই আমরা সৃষ্টি করতে পারব নতুন এক ইতিহাস!!!! কৃতজ্ঞতায় ঃ সায়েম খান, ঢাবি ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।