ক্রমানুসারে লেখার চেষ্টা করব। পাঠ্যবই ছাড়া যা পড়েছি, সব। স্মৃতি খুড়ে তো অবশ্যই। স্মৃতির ব্যাড সেক্টর কিংবা যাপিত সময়ের বহুমাত্রিক অত্যাচারের ফলে ট্র্যাক ওল্টা-পাল্টা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবুও চেষ্টা থাকবে যথাযথ।
বয়স যখন ১০ পেরুয়নি..
১. পথের দাবী- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
(সেই বয়সে যখন সবেমাত্র পড়তে শিখেছি। প্রথম পৃষ্ঠা যে কতবার পড়েছি ইয়ত্তা নেই। ভাববেননা আমি পান্ডিত্য জাহির করছি। আসলে তখন আমার হাতের নাগালে যে বইগুলো ছিল এর মধ্যে শরৎবাবুর ছবিসহ বইটা বেশ ভাললেগে গিয়েছিল। )
২. মেঘনাদ বধকাব্য- মাইকেল মধুসুধন দত্ত
( ওই একই সময়ে।
কিছুই বুঝিনি। তবে এতে একটা লাভ হয়েছিল। আব্বা মেঘনাদ পড়ে পড়ে রাবনের গল্প শোনাতেন। মনে আছে মেঘনাদের মৃত্যুতে শুধু রাবণ নয় আমিও কেঁদেছিলাম। পরবর্তীতে আব্বা আমার পড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে কিছু কমিকস ও ঈশপ কিনে দিয়েছিলেন।
)
৩. বিষাদ সিন্ধু- মীর মোশাররফ হোসেন
( যোদ্ধা কাশেম এর প্রতি বীর-ভক্তি জন্মেছিল এই বই পড়ে। কারবালার গগণ বিদারী হাহাকার আমার হৃদয় বিদীর্ণ করেছিল। অসংখ্যবার আমার চোখ ভিজেছিল সখিনাদের চোখের জলে। পরে আর কোন বই পড়ে এমনটি হয়নি। )
৪. মকছুদুল মোমেনীন (লেখকের নাম মনে নেই)
(অনেকের ঘরে যেমন থাকে, আমাদের ঘরেও ছিল।
কিছু দোয়া-দুরুদ শিখেছিলাম। এটা ছিল প্রাথমিক শিক্ষা। আরও পরে যখন 'অপ্রাপ্তবয়স্কদের পড়া নিষিদ্ধ' কথাটার মানে হৃদয় দিয়ে শিখেছিলাম তখন ওই চ্যাপ্টারটাই পড়তাম মাঝেমধ্যে। ভীষণ গোনাহের কাজের কথা আরবী লেখা বইয়ে আছে ভেবে অস্থির থাকতাম। কাউকে কিছু জিজ্ঞাস করারও উপায় ছিলনা।
ততদিনে অবশ্য বয়স ৮/৯ পেরিয়ে গেছে। )
৫. কুরআন ( )
(কিছু না বুঝে এবং অবশ্যই আরবীতে। মুখস্তও করেছিলাম গোটা ১৫ সুরা। প্রতিযোগীতা ছিল প্রাতঃকালীন মক্তবে সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়া। সফল হয়েছিলাম বেশ ভালভাবে।
সাথে বদবায়ু জনিত ওযু ভাঙ্গা ও ঢিলা-কুলুক জাতিয় ছোওয়াব হাসিলের শিক্ষাতো ছিলই। )
৬. রাক্ষস-খোক্কস ও দেও-দানোর গল্প (সংকলন, লেখকের নাম মনে নেই)
(মাঠের পারের দূরের দেশ ছিল তখন কল্পনার মহাবিশ্ব। বাজারের নাম শুনে শুনে সেখানে যাবার লোভ হত খুব। একদিন গেলামও। আবিস্কার করলাম বইয়ের দোকান।
আব্বা ছিলেন সাথে। তার অবমূল্যায়নে আবিস্কার আর জার্নালে গেলনা। পরে একা গেলাম। দোকানদারকে গল্পের বই আছে কিনা জানতে চাইলে ওইসব ধরিয়ে দিলেন (অতি ক্ষুদে ছিলাম বলে হয়ত)। দেও-দানোর রঙ্গিন ছবি দেখেতো আমার জার্নাল সম্পাদকের চক্ষু চড়কগাছ! বাড়ি ফেরার রসদ অবশিষ্ট থাকবে কি থাকবেনা এইসব মামুলী ব্যপার নিয়ে তার কোন মাথাব্যাথা নেই।
পকেট শূন্য করে তিনি পাবলিশ করে দিলেন গোটা তিন চটি টাইপের সংকলন। সেই প্রথম আমার বই কেনা। )
চলবে...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।