বাংলাদেশ ব্লগারস এসোসিয়েশন সদস্য নং: ১০ । facebook.com/milton3d
পূর্বে প্রকাশের পর
...........................
হ্যালো কে বলছেন?
উত্তর পেলাম, "আমি"
আমি বুঝতে পারলাম এটাতো সেই চির চেনা শ্রাবণীর কন্ঠ। শ্রাবণী কেমন আছো তুমি? কোন উত্তর পেলাম না। বলল, কি করছো?
কি আর করবো? আজ অফিস থেকে ছুটি নিয়েছি। বেশ কয়েকদিন একটানা কাজ করে খুব ক্লান্ত।
তুমি কি করছো? শ্রাবণী কোন উত্তর না দিয়ে বলল, তোমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম, আমারই মনে নেই যে আজ ১১ই জুলাই। আজ আমার জন্মদিন। বললাম, ধন্যবাদ তোমাকে। আমাকে চমকিয়ে দিয়ে শ্রাবণী বলল, "আজ শনিবার তাই আমার অফিস ছুটি।
তোমার যদি সময় হয় আমি তোমার সাথে দেখা করতে চাই। "
আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে আমি ঘুমিয়ে আছি না স্বপ্ন দেখছি? ও পাশ থেকে শুনলাম কথা বলছো না কেন? ব্যাস্ত থাকলে প্রয়োজন নেই।
বললাম, না আজ আমি ফ্রি আছি। বল কোথায় আসতে হবে। শ্রাবণী কন্ঠ শুনে মনে হচ্ছে ও আমার সাথে ফ্রি ভাবে কথা বলছে না।
বলল, পাবলিক লাইব্রেরীর সামনে আমি সকাল ১০টার সময় থাকবো। তুমি এসো। বললাম, ঠিক আছে? খোদা হাফেজ বলে ও লাইনটি কেটে দিলো।
আমি ভেবে পাচ্ছিলাম না এতদিন পরে কি কথা বলবো ওর সাথে। খানিকটা নার্ভাস লাগছিল।
যাইহোক তাড়াতাড়ি গোসল করে, রেডি হয়ে বের হলাম ৯টার মধ্যে।
পৌঁছে গেলাম ৯ টা বাজার ১৩ মিনিট আগে। সিড়িতে বসে আছি। অপেক্ষা করছি শ্রাবণীর জন্য। খানিকটা খারাপ লাগছে, কেউ যদি দেখে ফেলে।
একটা দৈনিক পত্রিকা কিনে পড়তে লাগলাম সময় কাটানোর জন্য।
মিনিট পাঁচে পরে শ্রাবণীকে আমার পাশে আবিষ্কার করলাম দাঁড়িয়ে। ও যে কখন এসে দাঁড়িয়েছে তা বুঝতে পারিনি। উঠে দাঁড়ালাম। দেখলাম ওর মুখটা মলিন।
আমি বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম। শ্রাবণী এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছে। এমন সময় নিরবতা ভাঙ্গতে হঠাৎ দুজনেই একসাথে বলে উঠলাম, কেমন আছো? দুজনেই আবার হেসে ফেললাম। খুব ভাল লাগছিল অনেক দিন পর শ্রাবণীকে হাসতে দেখে।
ও বসলো আমার পাশে।
আজ শ্রাবণীকে গতদিনের চেয়ে ভাল লাগছে। হালকা আকাশী সুতি শাড়ী পড়েছে। কপালে ছোট একটা কালো টিপ। হালকা লিপষ্টিক। ব্যাস এতুটুকুই।
আর কোন সাজ নেই। আগে ওর অনেক বড় চুল ছিল, এখন কেটে ছোট করে ফেলেছে। মনে মনে বললাম, শ্রাবণী তোমাকে অপূর্ব লাগছে। কিন্তু তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারলাম না।
বললাম, শ্রাবণী তুমি নিঃশ্চই আমাকে ভুল বুঝে আছো? তুমি যদি সব জানতে তবে আমার উপর রাগ করতে না।
ও একটু রাগ করেই বললো, "আমি সবই জানি"। আমি বললাম না জানো না তুমি। তবে তোমাকে শুনতেই হবে। সবকিছু তোমাকে শুনতেই হবে। লক্ষ্য করলাম এ পর্যায়ে আমি বেশ উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম।
নিজেকে সামলে নিলাম। দেখলাম, শ্রাবণী একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। শুধু বললো, "এসব শুনে এখন আর কি হবে?"
বললাম, আমার জীবন থেকে টানা দুই বছর হারিয়ে গেছে। সে সময় আমার সঙ্গী ছিল শুধু বুকফাটা নীল কষ্ট। দুইটা বছর আমাকে জেলখানায় পচে মরতে হয়েছে।
তাও আবার অস্ত্র মামলায়। যেটা ছিল সম্পূর্ণ সাজানো। পরে যখন আদালতে প্রমান হলো আমি নির্দোষ, দেখলাম তখন আর সময় নেই। ততদিনে তোমার সাথে রবিনের বিয়ে হয়ে গেছে।
শ্রাবণী বললো, আমরা এগুলো সবই জেনেছি।
বাবা তোমার এই মামলা হয়েছে জেনে আর কখনই চাননি আমার সাথে তোমার ভবিষ্যতের সম্পর্ক গড়াক। অথচ উনি তোমাকে খুবই ভাল জানতেন। আর রবিন আমাকে বিয়ে করেছিল জোর করেই। এ বিয়েতে আমাদের কারোরই মত ছিল না।
বললাম, "তোমাকে আজ একটি সত্যি কথা বলি, যা জানার পর তুমি সত্যিই আশ্চর্য হবে।
"
শ্রাবণী আমার দিকে তাকিয়ে বললো, কি, কি কথা?
চলবে...........
১ম পর্ব ২য় পর্ব
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।