স্বপ্ন যে শুধুই মিথ্যা আশা জাগায়
ডেথনোট একটি জ়াপানী এনিম। জ়ানি অনেকেই এনিম এর কথা শুনলেই নাক শিটকান "এনিম সেতো বাচ্চাদের জিনিস "। প্রথম প্রথম আমিও বলতাম আপনাদের মত করেই । কিন্তু আমার ভুল ভেঙ্গে দিয়েছে ডেথনোট। ডেথনোট দেখলেই বুঝতে পারবেন সব এনিম ই আসলে বাচ্চাদের জিনিস নয়।
আমার মতে এই এনিম টি সবার এ দেখা উচিত। তাই ডেথনোট সম্বন্ধে কয়েকটি বিষয় তুলে আনার চেষ্টা করছি।
পটভূমিঃ
ডেথনোট এর কাহিনী নির্মিত হয়েছে উচ্চাভিলাষী এক ছাত্রকে কেন্দ্র করে। অতিপ্রাকৃত একটি ডেথ নোটের সাহায্যে সে পৃথিবীর সকল অপরাধীর বিচার করতে শুরু করে এবং নিজেকে ভবিষ্যৎ পৃথিবীর ঈশ্বর হিসাবে মনে করতে থাকে। ডেথ নোট মৃত্যুর দেবতাদের ব্যবহৃত একধরনের ডাইরি।
এই ডাইরিতে যদি কোন মানুষের নাম লেখা হয় তাহলে সে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মারা যায়।
কাহিনীঃ
মেধাবী ছাত্র ইয়াগামি লাইট। একটা সময় জীবন তার কাছে বিরক্তিকর হয়ে দেখা দেয়। যেমনটা দেখা দেয় মৃত্যর দেবতা বা শিনিগামি রিউকের কাছে। বিরক্তি কাটাবার জন্য সে মানুষের জগতে ফেলে দেয় একটা ডেথ নোট।
ইচ্ছা মানুষের কর্মকান্ড দেখার। কে ডেথ নোটটা পাবে তার ঠিক না থাকায় ব্যবহারের নিয়মাবলি লিখে দেয়া হয় ইংরেজিতে। আর এই ডেথ নোটটাই পায় লাইট । সে প্রথমে বিশ্বাস না করলেও মজা করার জন্য খবরে প্রচারিত এক খুনীর নাম তাতে লিখে রাখে। নিয়ম অনুযায়ী লোকটির মারা যাবার কথা ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে।
যেহেতু সে কোন কারণ লিখেনি তাই মৃত্যু হবে হৃদ যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে। পরের দিন সকালে পত্রিকায় লোকটির মৃত্যুর খবর দেখে লাইতো ডেথ নোটটা নিয়ে ভাবা শুরু করল। তার ইচ্ছাকৃত দ্বিতীয় পরীক্ষার শিকার হয় সেদিন রাস্তায় এক কিশোরীকে উত্যক্তকারী একদল গুণ্ডার দলনেতা। সেই থেকে লাইট তার পরিকল্পনা শুরু করে। সে ভাবতে থাকে এভাবেই একদিন সে পৃথিবীর সকল পাপী মানুষদের মেরে ফেলবে।
নতুন পৃথিবীতে থাকবে তার পছন্দ করা মানুষেরা। সে হবে সেই পৃথিবী ঈশ্বর। বাবা পুলিশের বড় কর্মকর্তা হবার সুবাদে সে হাতের কাছেই পেতো অপরাধীদের সকল তথ্যাবলী। ডেথ নোট দিয়ে মানুষ মারার জন্য দরকার দুটি জিনিসের। প্রথমটি হলো যাকে মারা হবে তার নাম অপরটি তার চেহারা ।
কারো চেহারা মনে করে যদি তার নাম ডেথ নোটে লেখা হয় তাহলেই সে মৃত্য বরণ করবে। একই নাম বিশিষ্ট অন্য কেউ তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেনা। এদিকে অপরাধীদের হঠাৎ করে এই মৃত্যুর হার জাপানী পুলিশ বাহিনীর টনক নড়িয়ে দেয়। তারা এই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোন কুল কিনারা করতে পারেনা। তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসে বিখ্যাত গোয়েন্দা "এল "।
শুরু হয় এল আর লাইট এর বুদ্ধির খেলা।
প্রধান চরিত্রসমূহঃ
ইয়াগামি লাইটঃ
স্কুল ছাত্র। তার মেধার চেয়ে সবচেয়ে বড় যে ব্যাপার তা হলো তার বুদ্ধি। ডেথ নোট এর আগেও অনেকবার মানুষের হাতে পরেছিল। কিন্তু লাইটের মত এত পরিকল্পনা মাফিক কেউ এটাকে ব্যাবহার করতে পারেনি।
লাইট নোটটি পেয়ে প্রথমেই বিশ্বের সব সন্ত্রাসীদের মারা শুরু করে। কিন্তু তাদের মৃত্যু আইনের মাধ্যমেই হওয়া উচিত বলে আইসিপিও ও জাপান পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তাকে খুঁজে বের কারার চেষ্টা শুরু করে। পুলিশের সাহায্যে এগিয়ে আসে বিশ্বসেরা গোয়েন্দা এল। এল এবং লাইটের মধ্যে লড়াই শুরু হয়ে যায়। কখনও এল-এর ফাঁদে পড়ে যেতে থাকে লাইট, আবার কখনওবা লাইটের কাছে হেরে যায় এল।
এমনভাবেই এগিয়ে চলে কাহিনী।
এল:
পৃথিবীর সেরা গোয়েন্দা। সে কখনো নিজের চেহারা কারো সামনে প্রকাশ করেনি। সব কাজ করে তার সহকারী ওয়াতারীর মাধ্যমে। সে সবার সাথে যখন যোগাযোগ করে তখন টিভি পর্দায় তার নাম সম্বলিত একটি লোগো ভাসে এবং পর্দার আড়াল থেকে কথা বলে।
তার এবং ইয়াগামি লাইট এর বুদ্ধি সমমানের। তাই তাদের লড়াইটাই এই এনিমের মূল আকর্ষণ।
ডেথ নোটের নিয়মাবলী:
* যে মানুষের নাম ডেথ নোটে লেখা হবে সে মারা যাবে।
* যার নাম ডেথ নোটে লেখা হবে তার চেহারা মনে থাকতে হবে। এর ফলে একই নাম ধারণকারী একাধিক ব্যক্তি আক্রান্ত হবেনা।
* কারও নাম লেখার পরবর্তী ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে তার মৃত্যুর কারণ লিখা হলে, উক্ত ব্যক্তি সেই কারণেই মারা যাবে।
* কোন কারণ না লেখা হলে সে কেবল হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যাবে।
* কারণ লিখা হলে লিখার পরবর্তী ৬ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে মৃত্যুর আগে সে কি করবে তা লিখতে হবে। তাহলে সে ঐ কাজগুলো করে তারপরই মারা যাবে।
* এই নোটটি যখনই পৃথিবীর মাটি স্পর্শ করবে বা পৃথিবীতে পৌঁছাবে তখন থেকে এটি মানুষের পৃথিবীর সম্পত্তি বলে বিবেচিত হবে।
* পৃথিবীতে ডেথ নোটের মালিক মূল মালিক তথা শিনিগামির অবয়ব ও কণ্ঠ চিহ্নিত করতে পারবে।
* যে মানুষ ডেথ নোট ব্যবহার করবে সে স্বর্গ বা নরক কোথাও যেতে পারবেনা। মৃত্যুর পর সে কেবল শূন্য দেখবে।
ট্রেইলারঃ
নিম্নলিখিত লিঙ্ক এ চাইলে আপনি ডেথনোট এর ট্রেইলার দেখতে পাবেনঃ
http://www.youtube.com/watch?v=lknmgByFquQ
কেউ যদি এই এনিমটি দেখতে আগ্রহী হোন তাহলে নিম্নলিখিত লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন টরেন্ট ব্যবহার করেঃ
যদি জাপানী ডাবিং ও ইংরেজী সাবটাইটেল ডাউনলোড করতে চান তবে এখানে
Click This Link
যদি ইংরেজী ডাবিং ও ইংরেজী সাব টাইটেল ডাউনলোড করতে চান তবে এখানে
Click This Link).html
ডেথনোট নিয়ে মুভিও বের হয়েছে। তবে মুভির চেয়ে আমার কাছে এনিমটাই বেশী ভাল লেগেছে।
আমি চেষ্টা করেছি ডেথনোট এর কাহিনী সম্বন্ধে যতটা সম্ভব কম তথ্য দিতে কারন তা নাহলে দেখার মজা নষ্ট হয়ে যাবে। যদি ডেথনোট দেখে ভালো লাগে আপনার অনুভূতি জানাবেন।
সাহায্যঃ wikipidea থেকে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।