বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত হামাস সদস্যদের কুচকাওয়াজ। ১৯৮৭ সালে ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে এক নির্মম ইজরাইলী গনহত্যার প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল হামাস। তার পর থেকে সংগঠনটি ক্রমেই জঙ্গি হয়ে উঠেছে সমগ্র ফিলিস্তিনজুড়ে।
হামাসের জঙ্গি হয়ে ওঠার কারণও আছে-ইজরাইলের একচ্ছত্র স্বৈরাচার। এবং, এই দিক থেকে বিশ্বের সকল বিবেকবান মানবতাবাদী মানুষের অবস্থান আরব গেরিলাদের পক্ষেই। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে হামাসের সামরিক strategy পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ন কি না- সে প্রশ্ন আজ ইজরাইল কর্তৃক গাজা উপত্যকা ধ্বংসের প্রেক্ষাপটে উঠতেই পারে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে ফিলিস্তিনিদের অন্য একটি রাজনৈতিক সংগঠন রয়েছে -ফাতাহ। এবং আমরা এও জানি যে, ফাতাহ ইজরাইলবিরোধী হওয়া সত্ত্বেও হামাসের মত অত উগ্র নয়।
তারা ইজরাইলকে বাস্তব বলেই মেনে নিয়েছে।
আজ যখন ইজরাইল তার সমস্ত সামরিক শক্তি নিয়ে হামাস নিশ্চিহ্ন করতে গাজায় অনুপ্রবেশ করেছে তখন হামাসের ভূমিকা নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠতেই পারে। প্রথমত, যখন ফিলিস্তিনের মাটি থেকে রকেট ছুঁড়ে ইজরাইল রাষ্ট্রটিকে সর্ম্পূনত ধ্বংস করা যাবেই না- তখন ইজরাইলের উদ্দেশে রকেট ছোঁড়ারই-বা কি মানে? হামাস তো ভালো করেই জানে যে-ইজরাইলের সামরিক শক্তি সম্মিলিত আরব বিশ্বের সামরিক শক্তির চেয়েও বেশি। তা হলে কেন তার হিংস্র বাঘের লেজে অহেতুক পা দেওয়া? যখন আমরা সবাই জানি যে গুহায় একটি মানুষখেকো বাঘ রয়েছে তখন সেটিকে বর্শা দিয়ে খোঁচানোর কি মানে?
হামাসের হঠকারী ভূমিকায় অস্টাদশ শতকের বাংলার সৈয়দ মীর নিসার আলী ওরফে তিতুমীরের কথা মনে পড়ে যেতেই পারে। ইংরেজদের বিরুদ্ধে তিতুমীরের বিদ্রোহের কথা আমরা জানি।
বারাসাত নগরের কাছে নারকেলবেড়িয়ায় তিতুমীর একটি বাঁশের দূর্গ নির্মান করেছিলেন যখন ইংরেজরা যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করত দূরপাল্লার কামান! ১৪ নভেম্বর ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দ। কামান থেকে গোলা বর্ষন করে নারকেলবেড়িয়ায় তিতুমীর বাঁশের কেল্লাটি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয় ইংরেজ সৈন্যরা। প্রশ্ন এই -তিতুমীর কি জানতেন না যে বাঁশ দিয়ে কেল্লা তৈরি করে ব্রিটিশ সৈন্যদের সস্মুখে দাঁড়ানো যাবে না? হামাস কি জানে না যে ফিলিস্তিনের মাটি থেকে মাঝে মাঝে ইজরাইলেল উদ্দেশে রকেট ছুঁড়ে ইজরাইল রাষ্ট্রটিকে সর্ম্পূনত ধ্বংস করা যাবেই না বরং তাতে গুহার ঘুমন্ত বাঘটি জেগে উঠে ছুটে এসে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে?
মাঝেমাঝে ভাবি, তিতুমীরের strategy ছিল সম্পূর্নত ভুল;তিতুমীর যদি বাঁশের কেল্লা না তুলে অরণ্যযুদ্ধের পথ বেছে নিতেন- তা হলে হয়তো বাংলার ইতিহাস অন্যরকম হত। ইজরাইলী সৈন্যরা কয়েকদিন ধরে গাজায় সাদা ফসফরাস ছিটাচ্ছে। তাতে দগ্ধ হচ্ছে শিশুদের মুখ ...
তিতুমীর ও হামাস-এর হঠকারী ভূমিকায় জে এম বি ও হরকাতুল জেহাদের মতন ইসলামী জঙ্গি সংগঠনগুলির কথাও আমার মনে পড়ে যায়।
এদের strategyও ভুল।
রাষ্ট্রের সদিচ্ছ থাকলে যে মৌলবাদী জঙ্গি নেতাদের ফাঁসীতে ঝোলানো যায়, সে অনন্য দৃষ্টান্ত তো আমরা বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেই দেখলাম; তারপরও কীসের তাড়নায় হঠকারী জঙ্গিরা গোপনে বিস্ফোরক তৈরি করে-যখন বাংলাদেশ সামরিক সেনাবাহিনীতে রয়েছে পর্যাপ্ত অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম এবং একটি গনতান্ত্রিক সরকারের জঙ্গি নির্মূলের দৃঢ় প্রত্যয়?
ইজরাইল আজ হামাস নিশ্চিহ্ন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। মাসখানেক ধরে ইজরাইলী সৈন্যরা গাজায় তান্ডব চালাচ্ছে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনে হামাসের ভূমিকা নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠতেই পারে। হামাসের strategy কি ভুল? যে ভুলের মাশুল দিচ্ছে ফিলিস্তিনি শিশুরা? ইজরাইলী সৈন্যরা কয়েকদিন ধরে গাজায় সাদা ফসফরাস ছিটাচ্ছে।
তাতে দগ্ধ হচ্ছে শিশুদের মুখ।
দিন কতক ধরে তিক্ত হয়ে ভাবছি- হামাস পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হওয়ার পরও বাদবাকী ফিলিস্তিনি শিশুরা বেঁচে থাকবে তো ফিলিস্তিনে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।