আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফাও কাজের ব্যাস্ততা---অতঃপর খরগোশ দৌড়



সময়ের কাজ সময়ে না করলে যে কি ফাপরে পড়তে হয় সেটা সবাই কমবেশী জানে। তবে জানার পরে সেটা কতটুকু মনে থাকে সেটাই হল কথা। আমি একটা জন্মের আলসে মানুষ। ফাও কাজে যে কত সময় নষ্ট করি তার শেষ নেই। ফাও কাজে সময় নষ্ট করে শেষ সময়ে পড়িমড়ি করে আসল কাজ করি, সেটা ছাত্র জীবনে পরীক্ষার পড়া হোক বা অফিসের কোন এসাইনমেন্ট হোক।

শেষমেশ সব ভালভাবেই পার করতে পারি বলেই এইবারই শেষবার এটা আর মনে থাকে না। ফলে আবার ফাঁকি। আমার এক সিনিয়র সহকর্মী যিনি অনেক সিনিয়র, যার সাথে আমার অধিকাংশ কাজ করতে হয়, আমার ফাঁকিতে ভীষণ বিরক্ত। তারপর যখন শেষ সময়ে কাজগুলো ঝড়ের বেগে ঠিকমত করে দিলাম, তখন একদিন মন্তব্য করলেন--মাঝে মাঝে ধুমকেতুর মত হঠাৎ আলোর ঝলকানি দেখি তারপর আবার অন্ধকার, এমন কেন? এহেন মন্তব্যের পজিটিভ টুকু গ্রহন করে উপদেশ খানা বর্জন করে আবার আমি যে কে সেই। সেই সহকর্মী আমাকে বারবার হুসিয়ারী দিয়েছিলেন কাজগুলো গুছিয়ে রাখেন কখন লাগে ঠিক নাই।

আমি তো খরগোশের মত দৌড় দিব ভেবে অন্য ফাও কাজে মশগুল। ফাও কাজের সর্বশেষ উপকরন হল ব্লগিং করা। ব্লগে হাবিজাবি ছাড়া কিছু লিখি না, তারপরও যখন থেকে রেজিষ্ট্রেশন করেছি তখন থেকে সবার লেখা পড়ি, মাঝে মাঝে কমেন্ট করি। এটা এমন নেশা হয়ে গেল যে মূল কাজ বাদ দিয়ে সারাদিন শুধু ব্লগ আর ব্লগ। ভাবছি এইতো আর কটা দিন তারপর ধুমসে কাজ করবো।

এই ভাবতে ভাবেতেই ডাক এল। অতএব মাথা গরম। চোখেমুখে আন্ধার দেখি। মাথায় ঠান্ডা তেল দিয়েও শীতের রাতে ফ্যান ছেড়ে ঘুমাচ্ছি। মেডিটেশন করেও মাথা ঠান্ডা হয় না।

অতঃপর সব ফাও কাজ একপাশে রাখলাম। এবং যথারীতি খরগোশ দৌড়। বন্ধুরা খবর দেয় থার্টি ফার্ষ্ট নাইটে আয় আড্ডা দেই, আমি বলি ব্যাস্ত। মেয়ের জ্বালাতন ও ভাল লাগে না। এক্কেবারে মাথা নীচু করে দিনরাত কাজ আর কাজ।

একটানা কত্তদিন বাড়ীর বাইরে যাই না। কাজটা একটু ভদ্রস্থ রকম রূপ পাওয়ার পর মনে হল কতদিন ধরে ঘরে বসে আছি। আহা কতদিন এলোমেলো ঘুরে বেড়াই না। নিবার্চনের সময় ঢাকা শহরটা ফাঁকা, একটু রিকশায় ঘোরা হল না। দিনটা হয়েছে এত ছোট দুপুর না হতেই রাত।

গতদিন মনে হল আমার মনটা ভীষণ গুমোট হয়ে আছে। কারণটা খুঁজছিলাম, এরপর বুঝলাম নীজের ভিতরকার বাউন্ডুলেটা অস্থির হয়ে আছে। চটজলদি সিদ্ধান্ত মুক্ত বাতাসে যেতে হবে, সঙ্গী জোটানো গেল না তো একলা চলরে। তো বের হলাম এলোমেলো হাঁটাহাটি। একবন্ধুকে পটালাম আয় কফি খাওয়াবো।

রাজি হল, তারপর খানিক হাঁটাহাটি এরপর কফি এবং আরো কিছু খাওয়া আবার হেঁটে হেঁটে বাড়ী ফেরা। বন্ধু আমারে ভালই সীল দিল, তারপরও ভালই লাগলো। শরীর এবং মন দুটোই হালকা লাগছে। এবার আবার কাজে মনসংযোগ হবে, খরগোশ দৌড় শুরু হবে; ফাও কাজ থেকে দুরে থাকা হবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।