আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা তো আসলে ভোট দেই না, চামড়া বাঁচাই

জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই

আমরা ভোটের পর ভোট দিয়ে যাচ্ছি। উনারা পাল্টাপাল্টি করে ক্ষমতায় আসছেন। একবার ম্যাডাম, একবার আপা। কিন্তু আমরা কেন তাদের পাল্টাপাল্টি করে ভোট দেই ? আসলে কি আমরা ভোট দেই ? আমার মনে হয় না আমরা ভোট দেই। আমরা মূলত চামড়া বাঁচাই।

১৯৯১ সালে খালেদা ক্ষমতায় এসে এমন সন্ত্রাস দেখালেন যে, সব ভোটার তাদের চামড়া বাঁচাতে হাসিনাকে ভোট দিল। ১৯৯৬ সালে হাসিনা ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাসের সাথে যোগ করলেন চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি। তার শাসন আমলের শেষ বছরে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০০১ সালে আমরা আবার চামড়া বাঁচাতে খালেদাকে আনলাম। যুদ্ধাপরাধী জামায়াতকেও ভোট দিলাম।

ভোট দিয়ে বিএনপি ও জামায়াতকে ভাসিয়ে দিলাম। এবার খালেদা সন্ত্রাস কমাতে বিশেষ বাহিনী বানিয়ে খরচ ফায়ার করে সন্ত্রাস কমালেন কিন্তু দুর্নীতির মহা মহা রেকর্ড করল তার দুই পুত্রসহ মন্ত্রিগণ ও তার আত্মীয়-স্বজন। তার সাথে ফ্রি হিসেবে পাওয়া গেল জঙ্গীবাদ ও বোমাবাজি। সর্বশেষ দুই দল মিলে মারামারি করে তৃতীয়পক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ক্ষমতায় আসতে সহায়তা করল। আমরা হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।

২০০৮ সালেও আমরা চামড়া বাঁচাতে ভোট দিয়েছি। বিএনপির দুর্নীতি, জঙ্গীবাদ ও বোমাবাজির হাত থেকে বাঁচার জন্য আমরা ব্যালট বাক্স ভরে আওয়ামী লীগের মহাবিজয় এনে দিয়েছি। চামড়া বাঁচাতে আমরা একবার কড়াই ছেড়ে আগুনে, আরেকবার আগুন ছেড়ে কড়াইয়ে ঝাপ দিয়েছি। জানি না, এই দেশে কত কাল এই কড়াই-আগুন খেলা চলবে। শুনতে পাচ্ছি, আওয়ামী জামানার পুরোনো সন্ত্রাসীরা ফিরে আসছে মহা দাপটে।

তাদের পেটে সাত বছরের ক্ষুধা। তারা ইতিমধ্যেই ব্যবসায়ীদের আদাব সালাম পাঠাতে শুরু করেছে। শুরু হয়ে গেছে নীরব চাঁদাবাজি। গোপনে গোপনে অনেকে চাঁদা ও মাসোয়ারা দেওয়ার চুক্তিও সেরে ফেলেছেন। কী আর করবেন ? চামড়া তো একটা।

আমরা কি আসলে ভোট দেই, নাকি চামড়া বাঁচাই ? আমরা আর কত কাল এভাবে চামাড়া বাঁচাতে থাকব ? চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, দুর্নীতি থেকে কি আমাদের মুক্তি নেই ? আমরা কি কখনই এমন নেতা নির্বাচন করব না, যারা আমাদের জান মালের নিরাপত্তা দেবেন ? আমাদের চামড়া বাঁচানোর এই উন্মাদনাই আমাদের ভুল সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। আমরা সৎ ও যোগ্য লোককে ভোট দেই না। আমরা ব্যক্তি নয়, মার্কা দেখে ভোট দেই। দেশ নয়, ব্যক্তি নয়, আমাদের বিবেচনায় থাকে কেবল খালেদা-হাসিনা। একবার খালেদা, একবার হাসিনা।

এই সুযোগ নিচ্ছে কিছু টাকার কুমির অসৎ মানুষ। তারা বার বার মার্কা কিনে নিচেছ। আর মার্কা কিনে বারে বারে সংসদে যাচ্ছে এমন সব লোক যারা আমাদের চামড়া ছিলতেই অধিক আগ্রহী।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।