মিটুল
আজ সকালেই আমার নিকট জনদের মধ্যে একজন (মহিলা) বাসায় এসেছিলেন দাড়িপাল্লায় ভোট দেওয়ার অনুরোধ করতে। আমাদের বাসায় মোট ৫টি ভোট আছে।
শুরুতেই আমি বলে ফেললাম, দাড়ি পাল্লায় যে ভোট দিবে সে দোযখে যাবে। উনিতো মহাক্ষ্যাপা হতে যেয়েও পারলেন না। কারণ ভোট চাইতে এসেছেন।
উনি বললেন এটা কি ধরণের কথা? আমি বললাম কেন আপনারা-ই তো এদেশের মানুষের শিখিয়েছেন দাড়িপাল্লায় ভোট দিলে বেহেস্তের টিকিট কাটা হয়ে গেল। তো দাড়িপাল্লায় ভোট দিলে যদি বেহেশতে যাওয়ার কথা আপনার বলতে পারেন, আমিও দাড়িপাল্লায় ভোট দিলে মানুষ দোযখে যাবে বলতে পারি। এখন আপনি কোরআন আর হাদীসের আলোকে আমাকে আপনার যুক্তি বোঝান এরপর আমার যুক্তিটাও কোরআন আর হাদীসের আলোকে বোঝানোর চেষ্টা করবো।
ভদ্রমহিলা কোন যুক্তিতে না যেয়ে বললেন, এসব ছাড়ুন এগুলো পুরানো কথা। এখন দেশ বাঁচাতে গেলে চারদলীয় জোট ছাড়া উপায় নেই।
আমি আবারো বললাম আমার কাছে ভোট চাচ্ছেন আমাকে কোন যুক্তিতে বোঝাবেন যে আমাকে দাড়িপাল্লায় ভোট দেওয়া উচিৎ?
উনি বল্লেন, ১. ইসলামী আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে এবং ২. হাসিনার থেকে খালেদার আচরণটা ভালো।
আমি রেগেই বললাম, খালেদা জিয়ার আচরণ কি আমরা পানি দিয়ে ধুয়ে ধুয়ে খাবো? ভোটের সাথে এসব যুক্তির কোন মূল্য নেই। খালেদা জিয়া যে আসন থেকে নির্বাচন করছে ঐ আসনের ভোটাররা এই চিন্তা করুক যে সেখানকার অন্য প্রার্থীদের থেকে খালেদা জিয়ার কোন গুণ গুলো ভালো।
উনি বল্লেন, তাহলে কোন যুক্তিতে ভোট কাকে দিব বলে বিবচনা করতে হবে আপনি বলুন। তখন আমি বললাম কেন, খুবই সহজ।
১. এলাকার উন্নয়ন হবে এটা কার উপর আমাদের বিশ্বাস বেশী তাকে ভোট দেওয়া যেতে পারে এবং ২. কে বেশী সৎ এবং যোগ্য তাকে ভোট দেওয়া যেতে পারে।
আমি কথা শেষ না করে একটানা চালাতে লাগলাম, বললাম সেক্ষেত্রে আপনার প্রার্থীতো গত টার্মে এম.পি. ছিলেন। কি উন্নয়ন করছেন উনি? এখন কি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন? কেন সেগুলো গত টার্মে পূরণ করেননি। গত টার্মে যদি করেননি তাহলে এই টার্মে করবেন এ বিশ্বাস কিভাবে চাইবেন?
এভাবেই শেষ করতে হলো কারণ মহিলা আমার সাথে আর কথা বাড়ালেন না। পরে শুণলাম উনি এর আগেও ভোট চাইতে এসেছিলেন।
মূলত বাড়ীর মহিলাদেরকে বোঝানোর জন্য এধরণের কর্মী বোরকা পরে কাজে নেমেছেন যারা নিজের জানেন না কোন যুক্তি। ভালো মন্দ বোঝারও যাদের নেই নিজস্ব জ্ঞান।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, মহিলা চলে যাওয়ার পর উপস্থিত একজন মেহমান যিনি ঐ মূহুর্তে ওখানে উপস্থিত ছিলেন এবং আমাকে খুব মানেন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন আচ্ছা মিটুল দাড়িপাল্লায় ভোট দিলে দোযখে যেতে হবে এটি আমাকে বোঝাও তো কেমন করে তুমি একথা বলছো? আমি তো একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেলাম, তারপর বললাম, " কোরআন-এ আছে ইসলাম পালনে ৭৩টি ভাগ হবে যার ৭২টি-ই দোযখে যাবে। বর্তমানে আমাদের ইসলাম প্রচারে অনেকগুলি দল মত সমাজে দেখা যাচ্ছে। অথচ মূলদল ১টি হওয়া উচিৎ।
সুতরাং এরাই সেই ৭২ দল। অপর দিকে আল্লাহ বলেছেন সব ধরণের পাপ ক্ষমা হতে পারে কিন্তু কয়েকটি পাপ মোটেও ক্ষমা করা হবে না। যার মধ্যে শিরক একটি। শিরক হচ্ছে সেই জিনিস যা আল্লাহর সাথে অন্য কোন শক্তি কে তার সমপরিমান বা বেশী শক্তি মনে করে। যেহেতু জামায়েত-ই ইসলামী দলটি প্রকাশ্য ইলামী আন্দোলনের কৌশল হিসাবে ঘোষণা করছে যে, ক্ষমতায় আসীন না হলে এদেশটি ইসলামী আদর্শে পরিণত করা যাচ্ছে না।
সুতরাং এটি এক প্রকার শিরক যে, সরকার গঠন প্রক্রিয়াকে একটি আলাদা শক্তি মনে করছে যে ইসালম পালনে অপরিহার্য। অথচ আল্লাহ চাইলে সরকার গঠন নামক সাহায্য ছাড়াই আমাদের দিয়ে ইসলাম ধর্ম পালনের সব ব্যব্সথা করতে পারেন এই বিশ্বাস রাখা উচিৎ। যেমন তাবলীগ জামায়েতের বৈশিষ্ট্য-ই ধরা যাক। তারা বলছেন ক্ষমতায় আসীন নয় মানুষকে নামাজের পথে ডাকতে হবে অন্যান্য ইবাদতের পথে ডাকতে হবে আর আল্লাহ চাইলে তার হেদায়েত করবেন। সুতরাং সকল ক্ষমতা আল্লাহর।
আমার ব্যাখ্যাটি মেহমানের খুবই পছন্দ হলো। কিন্তু আমি জানিনা তাৎক্ষণিক আমার এই যুক্তিগুলি কিভাবে একের পর এক বাক্য তৈরী হয়ে উচ্চরিত হয়েছে।
-মন্তব্য চাই
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।