অতীত খুড়ি, খুঁজে ফিরি স্বজাতির গুলিবিদ্ধ করোটি
ধর্ম ব্যবসা কারে বলে তা চিনতে হলে দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ওরফে 'দেলু রাজাকার'রে দেখতে হবে। লালসালুর মজিদের মিলেনিয়াম সংস্করণ বলতে হবে এই ভন্ডটাকে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধের সবগুলা ক্রাইটেরিয়া পুরা করছে এই পাকিস্তানী দালাল। একসময় পিরোজপুর বেশ্যালয়ের দালালী ও যৌনরোগের হাতুড়ে চিকিৎসা করে দিন নির্বাহ করা সাঈদী এখন স্বাধীনতা বিরোধী সংগঠন জামাতে ইসলামীর বড় নেতা, মজলিশে সুরার সদস্য। ওয়াজ মাহফিলের নামে সাধারণ মানুষের ধর্মানুভূতিকে পুজি করে রাজনৈতিক প্রচারণা চালায়।
কৌশলে স্বাধীনতা যুদ্ধে জামাতে ইসলামীর কর্মকাণ্ড জায়েজ করার বয়ান ছাড়ে। হুমায়ুন আহমেদ ও ড. মো. জাফর ইকবালের বাবা ফয়জুর রহমানের খুনি এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধাপরাধী এবার পিরোজপুর-১ আসন থেকে নির্বাচন করছে। তাকে প্রত্যাখ্যান করুন। এরপর বিচারের কাঠগড়ায় তোলার জন্য আন্দোলনে সামিল হোন।
চলুন দেখা যাক ১৯৭১ সালে তার কর্মকাণ্ডের খতিয়ান:
মুক্তধারায় তার পরিচিতি সম্পর্কে বলা হয়েছে:
Delwar Hossain Sayeedee as his name is now officially spelled and is being represented with a red diplomatic passport from the ruling BNP government as an Islamic scholar and preacher was originally a boorish mountebank and a pimp of the local brothel at Pirojpur, a small town in Barisal district. The locals still call him Delu (a name that negates all the spirituality that an Arabic name such as Sayeedee inspires) which is the short form of his name Delwar. During the liberation war Saidi was called delu razakar due to his collaboration with the Paki occupation army.
There is no record that Saidi had ever attended any school whether Islamic or public. Like many fake Islamic 'divines' Saidi was accorded a title 'Sayeedee' overnight and promoted as such by the then Pakistani civil affairs dept, an organization run by the Paki military intelligence (ISI). Saidi's personal idol must be Hitlar, for both of them assented to power by virtue of their oratory skills. Both of them whet their rhetoric in their first career as a street hawker. Hitler being a German sold fake paintings on the streets, Saidi a rustic quack sold potions for venereal diseases and sexual impotence. As a street hawker saidi had a second job as a pimp for the local brothel. Traditionally most quacks work as pimps in Bangladeshi villages. It is a very lucrative business: they earn commission from the hookers, blackmail the clients and when the clients contract venereal diseases become their permanent patients.
Later Saidi realized that it is more rewarding to sell spiritual potions than cheap potions for gonorrhea and syphilis. He also realized, in course of his career as a quack, that the spiritual sickness is a more prolific opportunity to pry in business than selling potions for sexual impotence. So Saidi assumed his new role: a preacher of (Jamat-e-) Islam. But Saidi does not preach the austere aspects of Islam. He fans the vulgar side of it to draw the perverts to his flock. He uses his obscene rhetoric (used to sell his potions as a quack to cure sexual impotence) to emphasis male chauvinism implicit in the patriarchal religion-Islam. In both cases his technique is same: to pamper male ego and feed male libido. This technique turned him into the most popular preacher of Islam among the Bangladeshi Muslims both home and abroad. Thousands of his audio cassettes are sold in Bangladesh and exported to overseas: middle East, Europe, USA Australia. Bangladeshi males listen to his obscene preaching's to feed their repressed libidinous urges and secure their authority over their less fortunate women folks. The worst thing is: Saidi's doctrines constitute the moral fiber of a large number of unenlightened Bangladeshis both home and abroad.
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সাঈদী তার এলাকায় রাজাকার, আল-বদর ও আল-শামস বাহিনী গঠন করায় ভূমিকা রাখে এবং তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা দেয়।
সে সময় কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলো না সে। যুদ্ধের সময় নামের আগে 'মওলানা' উপাধী লাগিয়ে জাঁকিয়ে বসে এবং স্বাধীনতাবিরোধী তৎপরতায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে লুটতরাজ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও ধর্ষণে জড়িত থাকার। মুক্তিযুদ্ধের সময় অন্য চার সহযোগী নিয়ে এলাকায় 'পাঁচ তহবিল' নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলে সে যাদের প্রধান কাজ ছিলো মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার পক্ষে থাকা হিন্দুদের বাড়িঘর জোর করে দখল এবং সম্পত্তি লুটপাট। এই লুটপাট সে নিজে উপস্থিত থেকে করতো আর সেগুলো প্রকাশ্যে নিজে বহন করতো।
এসব লুটের মালকে সে 'গনিমতের মাল' ফতোয়া দিয়ে ভোগ করতো এবং পাড়ের হাট বন্দরে বিক্রি করে ব্যবসা পরিচালনা করতো। পাকিস্তান বাহিনীর ক্যাপ্টেন আজিজের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিলো, তাকে মেয়ে সরবরাহের দায়িত্ব সাঈদী নিজে পালন করতো।
জনপ্রিয় উপন্যাসিক ও নাট্যকার হুমায়ুন আহমেদের বাবা পিরোজপুরের মহকুমা এসডিপিও ফয়জুর রহমান আহমেদের হত্যার সঙ্গে সাঈদী জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন শহীদের কন্যা সুফিয়া হায়দার ও ছেলে মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। তারা জানান দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর সহায়তায় ফয়জুর রহমান আহমেদকে পাকিস্তানী সেনারা হত্যা করে এবং পরদিন তার বাড়িটি সম্পূর্ণ লুট করে নিয়ে যায় সাঈদী ও তার বাহিনী। যুদ্ধকালিন সময়ের রাতে শিশু পুত্র কে দেখতে গ্রামে এলে , সাঈদী ধরিয়ে দেয় সাবেক ইপিআর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ কে ।
নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তাকে।
পাড়ের হাট বন্দরের মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীন নবীন জানিয়েছেন, ১৯৭১ সালের জুন মাসের শেষের দিকে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রেশন সংগ্রহ করতে পাড়েরহাটে গেলে দেখেন স্থানীয় শান্তি কমিটি ও রাজাকারদের নেতৃত্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৬০/৭০ জনের একটি দল পাড়ের হাট বন্দরে লুটপাট করছিল। পিরোজপুরের শান্তি কমিটি ও রাজাকার নেতাদের মধ্যে সেদিন পাকিস্তানি সেনা দলটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, সেকান্দার শিকদার, মওলানা মোসলেহ উদ্দিন, দানেশ মোল্লা প্রমুখ। এ ছাড়াও সাঈদীকে একটি ঘরের আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যেতে দেখেছিলেন রুহুল আমীন।
রুহুল আমীন নবীন আরো জানান, সাঈদী এবং তার সহযোগীরা তদানীন্তন ইপিআর সুবেদার আব্দুল আজিজ, পাড়েরহাট বন্দরের কৃষ্ণকান্ত সাহা, বাণীকান্ত সিকদার, তরুণীকান্ত সিকদার এবং আরো অনেককে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছেন।
সাঈদী হরি সাধু ও বিপদ সাহার মেয়েদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছেন। বিখ্যাত তালুকদার বাড়িতে লুটতরাজ করেছেন। ওই বাড়ি থেকে ২০/২৫ জন মহিলাকে ধরে এনে পাকসেনাদের ক্যাম্পে পাঠিয়েছেন।
পাড়ের হাট ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিয়ন কমান্ডের মিজান ১৯৮৭ সালের মাসিক নিপুন পত্রিকায় দেয়া এক সাক্ষাতকারে জানান- 'দেলোয়ার হোসেন সাঈদী স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় লিপ্ত ছিলেন। তিনি ধর্মের দোহাই দিয়ে পাড়ের হাট বন্দরের হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি লুট করেছেন ও নিজে মাথায় বহন করেছেন এবং মদন নামে এক হিন্দু ব্যবসায়ীর বাজারের দোকানঘর ভেঙ্গে তার নিজের বাড়ি নিয়ে গেছেন।
দেলোয়ার হোসেন সাঈদী সাহেব বাজারের বিভিন্ন মনোহারী ও মুদি দোকান লুট করে লঞ্চঘাটে দোকান দিয়েছিলেন। দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর অপকর্ম ও দেশদ্রোহিতার কথা এলাকায় হাজার হাজার হিন্দু-মুসলমান আজও ভুলতে পারেনি। '
পিরোজপুরের এডভোকেট আবদুর রাজ্জাক খান গণতদন্ত কমিশনকে (১৯৯৩ সালের গণ আদালত) জানিয়েছেন যে সাঈদী যুদ্ধের সময় পাড়ের হাট বন্দরের বিপদ সাহার বাড়ি জোরপূর্বক দখল করে সেখানেই বসবাস করতো। এখান থেকেই পরিচালিত হতো যাবতীয় স্বাধীনতাবিরোধী কার্যকলাপ। এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের তালিকা প্রস্তুত করে পাকিস্তানী সেনাদের সরবরাহ করতো সাঈদী।
এডভোকেট রাজ্জাক আরো জানিয়েছেন যে- সাঈদী পিরোজপুরের পাকিস্তানী সেনাদের ভোগের জন্য জোরপূর্বক মেয়েদের ধরে এনে তাদের ক্যাম্পে পাঠাতো। পাক বাহিনীর সহায়তায় সে পাড়ের হাট বন্দর পুড়িয়ে দিয়েছিলো। বিভিন্ন এলাকা থেকে তরুনদের ধরে এনে সে রাজাকার ও আল-বদর বাহিনিতে ভর্তি হতে বাধ্য করতো। কেউ বিরোধিতা বা আপত্তি করলে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হতো।
গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা পিরোজপুরের এডভোকেট আলী হায়দার খানও সাঈদীর বিরুদ্ধে অনুরূপ অভিযোগ এনেছেন।
তিনি জানিয়েছেন- সাঈদীর সহযোগিতায় তাদের এলাকায় হিমাংশু বাবুর ভাই ও আত্মীয়স্বজনকে হত্যা করা হয়। পিরোজপুরের মেধাবী ছাত্র গণপতি হালদারকে সাঈদী ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। তখনকার মহকুমা এসডিপিও ফয়জুর রহমান আহমেদ (প্রখ্যাত উপন্যাসিক হুমায়ুন আহমেদ, ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও কার্টুনিস্ট আহসান হাবিবের বাবা), ভারপ্রাপ্ত এসডিও আব্দুর রাজ্জাক এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান, স্কুল হেডমাস্টার আব্দুর গাফফার মিয়া, সমাজসেবী শামসুল হক ফরাজী, অতুল কর্মকার প্রমুখ সরকারী কর্মকর্তা ও বুদ্ধিজীবিদের সাঈদির প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় হত্যা করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে তথ্য সরবরাহকারী ভগিরথীকে তার নির্দেশেই মটর সাইকেলের পেছনে বেঁধে পাঁচ মাইল পথ টেনেহেচড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
পাড়ের হাট ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন খান জানিয়েছেন সাঈদীর পরামর্শ, পরিকল্পনা ও প্রণীত তালিকা অনুযায়ী এলাকার বুদ্ধিজীবি ও ছাত্রদের পাইকারী হারে হত্যা করা হতো।
পাড়ের হাটের আনোয়ার হোসেন, আবু মিয়া, নুরুল ইসলাম খান, বেনীমাধব সাহা, বিপদ সাহা, মদন সাহা প্রমুখের ঘরবাড়ি, গদিঘর, সম্পত্তি এই দেলোয়ার হোসেন সাঈদী লুট করে বলে গণতদন্ত কমিশনে সাক্ষ্য দেন তিনি।
ইন্দুরকানি থানার আনোয়ার আহমেদ জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের সময় সাঈদী ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা পিরোজপুরের নিখিল পালের বাড়ি দখল করে তা পিরোজপুর জামে মসজিদের গণিমতের মাল বলে ঘোষণা দেয়। মদন বাবু নামে একজনের বাড়ি লুট করে সেটার টিনের চালা, খুটি সহ যাবতীয় কিছু তার শ্বশুর বাড়িতে স্থাপন করে সাঈদী।
এই খুনী, দালাল ও লুটেরা এখন ধর্মের পোষাক পড়ে ওয়াজ তাফসিরের নামে বাঙালী জাতিস্বত্বা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতা-রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাকে প্রতিহত করুন।
তাকে বিচারের কাঠগড়ায় তুলুন।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খন্ড), দৈনিক ভোরের কাগজ, গণতদন্ত কমিশন রিপোর্ট (১৯৯৩)
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ ও এস্কিমো ব্লগ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।