..
যুদ্ধ যা দেয়--তার চেয়ে ঢের বেশী কেড়ে নেয়।
যে চোখ দু'টো আর কোনদিন বাংলার এই সুনীল আকাশ দেখবেনা
শরতের তীব্র বর্ণচ্ছটাময় মেঘপরী নৃত্য
রংধনু
কাশবনে শুভ্র ঢেউয়ের মাতন
রূপালী তরঙ্গ
---সেই মণি দু'টো ঠোকরানো শেষ করে
বুকের উপর থেকে এইমাত্র একটি শকুন উড়ে গেল;
এখন---
সেই দুই চোখ পিলপিলে পিঁপড়ার দখলে চলে গেছে;
পিঁপড়াতে তার খুব ঘেন্না ছিল
একবার--চায়ের কাপে একটি কালো পিঁপড়ার লাশ দেখে
পেয়ালা আঁচড়ে ভেঙ্গে দিলে--- চা-পরিবেশনকারী
তার বোন অভিমানে তিনদিন কথাই বলেনি।
তার ভাই আজ পিঁপড়ার খাবার হয়ে গেছে--বোনটি জানেনা।
আর তার মা --ছেলে ছুটিতে বাড়ী আসার দিনটিতে
রিকশার টুং টাং শব্দে দৌড়ে দৌড়ে দরোজায় ছুটে যাওয়া
সারাক্ষণ ঘর-বার, বার-ঘর করা--'খোকা এলো বুঝি'
সেই মা এখন কোথায়?
মৃত্যু-সহযাত্রীদের লাইনে দাঁড়িয়ে তার মনে পড়েছিলো
সেই বন্ধুটির কথা--- গ্রামে মায়ের কাছে পালিয়ে গিয়েও রেহাই পায়নি;
মা-বাবার সামনে বেয়োনেটে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তাকে মারা হয়েছে।
সারিতে দাঁড়ানো ভীতু চেহারার আধবুড়ো লোকটি
দোয়া-দরূদ পড়ে আল্লাহ্র দরবারে প্রাণ-ভিক্ষা চাইতে চাইতে
আচমকা প্রচন্ড সাহসী উচ্চারণে-' জয় বাংলা'বলে চিৎকার দিয়ে ওঠে
কাতারে সারিবদ্ধ সব ক'টি মানুষের কোরাস-ধ্বনি ওঠে
জয় বাংলা
জয় বাংলা
জয় বাংলা
এক ঝাঁক বুলেটের ধাক্কায় শব্দগুলো থেমে গেলে
কাক-শকুন,পিঁপড়া আর ভনভনে মাছির পাহারায়
ছড়ানো-ছিঁটানো লাশগুলো পড়ে থেকে।
বাতাসের রেনুতে রেনুতে মিশে থাকে তাদের শেষ উচ্চারণ-ধ্বনি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।