~ ভাষা হোক উন্মুক্ত ~
কালকে মনে হয় ঈদ। আজব এই দেশে দুই বা তিন দিন ঈদ হয়। এক এক কমিউনিটি এক এক দিন ঈদ করে। বাংলাদেশীদের মদ্ধেও অনেকে সুবিধা মতো ঈদ করে ফেলে। আমরা বাসার পাশের মসজিদ থেকে রোজা আর ঈদ এর সময়গুলো জেনে নেই।
রাতে কাজ করে আসার সময় শুনে আসতে হবে যে কালকে ঈদ হবে না কি। বাসার কাছে মসজিদ থাকার অনেক সুবিধা, আবার অসুবিধাও আছে। মাঝে মাঝেই তাবলীগের পোলাপান হামলা করে বাসায়। মানে, বাসায় এসে সবাইকে ধর্ম কর্মের কথা বলে। কিন্তু কথায় আছেনা “চোরে না শুনে ধর্মের কথা” আমাদের হয়েছে সেই অবস্থা।
নীচ থেকে কলিং বেল টিপলেই যদি কেউ ফোন তুলে ওদের কথা শুনতে পায়, তাহলে আর কথাই বলেনা। কিন্তু ঈদ এর দিন সবাই মিলে মজা করে, আমাদের বাসায় এখন থাকে ছয় জন। আমরা সবাই মিলে যাই নামাজ পরতে। নামাজ থেকে বের হয়ে সবাই ব্রেকফাষ্ট করি কোথাও বসে। তারপর অনেকে বাসায় আসে, অনেকে চলে যায় কাজে বা ক্লাসে।
আমাদের তো ঈদ উপলক্ষে ছুটি থাকেনা। এবার ঈদটা পরেছে মঙ্গলবার। শুধু কয়েকটা ছেলে এই বাসায় থাকি বলে মনে করোনা যে আমরা ঈদ এ তেমন কিছু করি না। আমাদের বাসায় সুব সময়ই প্রচুর রান্না হয়, সারা দিন লোকজন আসতে থাকে, কিছু না কিছু খেয়েই যায় তারা। আমরা, বিশেষ করে আমি বের হতে পারিনা ঈদএর দিন।
পোলাপান সব এলোমেলো করে ফেলে।
ঈদএর দিন খুব মনে হয় দেশের কথা। আব্বার সাথে নামায পরতে যাবো, আব্বা খুব সকাল থেকে ডাকাডাকি শুরু করতেন, আমি সহজে উঠতামনা। বাসার বাইরে ঈদ করেছি খুব কম, কয়েকবার পরিক্ষার কারনে হল থেকে বাসায় যেতে পারিনি। আমার বাসায় যাবার উপলক্ষ ছিলো ঈদ, এ ছারা তো বেশি যাওয়া হতোনা।
তাই এখনও ঈদএর সময় মনটা কেমন করে। আমার ছেলেটা মনে হয় এবার নামাজ পরতে যাবে, ওর কপালে বাবার সাথে নামাজে যাওয়া লিখা নেই। আদিত্ব্য তাই দাদা’র সাথেই যাবে। আমিও যাবো একা একাই, অনেক মানুষের মাঝে থেকেও একাই তো।
ঈদ এর নামাজ পরতে গেলে বেশ একটা বাংলাদেশ বাংলাদেশ ভাব লাগে।
যে মসজিদে আমরা নামাজ পরি, সেইখানে বেশীরভাগ বাংলাদেশী লোকজন যায়। নামাজের পর সবার সাথে কোলাকূলি, রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করা, চতুর্দিকে বাংলা কথা, পরিচিত ছেলেপেলে – বেশ ভালো লাগে। বাসায় ফিরে রান্নাবান্না করে সবাই মিলে খেয়ে ফোন নিয়ে মারামারি লাগিয়ে দেই, কার পরে কে কথা বলবে দেশে। অনেক সময়েই ফোনের চার্জ শেষ হয়ে যায়, ফোন করাই হয়না। আমার তো আনন্দই ওইটুকু।
এবার অনেকগুলো ফোন করতে হবে। বাসায় কথা বলার পর ভেবেছি পরিচিত সব নম্বরে ফোন দেব, কাজেই যদি আমার কাছে তোমার ফোন নম্বর থাকে, তাহলে সাবধান, যে কোন সময় কল দিতে পারি, আর আমি কল দিয়ে কখনই কাউকে বলিনা যে আমি কে, বুঝে নিতে হয়। অবস্য অনেকেই পারে, কি করে পারে কে জানে। গত বছর নাজ আর রিফাত আমাকে অবাক করে দিয়েছিলো, ফোন ধরেই বলে “ভাইয়া কেমন আছো” !!! আজিব। আমার ব্যাতিক্রমও আছে।
বর্ণাকে ফোন দিয়ে বলেছিলাম “তুই পিচ্চি”, সে চিনতে পারেনি আমাকে, “আপনি কে , আপনি কে” বলে চিৎকার শুরু করেছিলো।
২০০৬'র ঈদটা ছিলো আমার সিডনীতে করা সব চাইতে আনন্দের ঈদ। খুব খুব ভালো ছিলাম আমি সারাটা দিন, খুব আনন্দে ছিলাম। কিন্তু, আমার কালকের ঈদ এর দিনটা খুব খারাপ কাটবে আমি জানি। কিছুই করার নেই।
সবার ঈদ অনেক সুন্দর হোক
সবাইকে ঈদ মুবারক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।