আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাঁটে (ঘটনা চার)

maanush84@yahoo.co.uk

'অনুরোধে ঢেঁকি গেলা' নামক এক খানা অমৃতবচন বঙ্গিয় শব্দকোষে অম্লানবদনে কেলাইয়া যাইতেছে বিগত কত দশক ধরিয়া তাহা জানি না। তবে বঙ্গ সন্তানের ঢেঁকি গিলিবার পারদর্শিতা যে অদ্যবধি বিলুপ্ত হয় নাই, উক্ত শব্দের পৌণপুনিক ব্যাবহার তাহাই প্রমাণ করিয়া ছাড়ে। যদিও মানু বঙ্গদেশ বহু বছর আগেই ছাড়িয়া আসিয়াছে তবুও আজতক গরম ভাতের লোভ কাটাইয়া উঠিতে পারে নাই, অর্থাৎ অদ্যবধি সে হাড় অব্দি বাঙ্গালী রহিয়াছে এবং সেই হিসাবে দুই চারিটি ঢেঁকি গিলিবার জন্য কেহ অনুরোধ করিলে সে তাহা ফেলিতে পারে না। সূতরাং একদা মানুর জনৈক বোজম ফ্রেন্ড স্বীয় পিতার শরীরে অস্ত্রপাচারের নিমিত্তে হাসপাতালে গমনকালে মানুর সঙ্গ প্রত্যাশা করিলে মানু ঢেঁকি না গিলিয়া পারিল না। ইতপূর্বে বঙ্গদেশে সে নানা ছুতায় বহুবার হাসপাতালের মূখ দর্শন করিয়াছিল, যাহার প্রধান কারণ জনৈকা সুশ্রী সেবিকা।

ম্লেচ্ছ দেশে আসিয়াও সে উক্ত সূখ স্মৃতি ভুলিতে পারে নাই। অতএব হাসপাতালে যাইবার নিমিত্তে তাহার হৃদয় হাস ফাঁস করিবে ইহাই স্বাভাবিক। সবে বন্ধু পিতা'কে হাসপাতালে ভর্তি করাইয়া মানু দুই ফোঁটা হাওয়া খাইতে বাহির হইয়াছে, উদ্দেশ্য এই ফাঁকে নানা স্থলে ছড়াইয়া থাকা নানাবিধ সুন্দরীর সহিত যদি কিঞ্চিত ভাবের আদান প্রদান করা সম্ভবপর হয়। হেনকালে মানুর কর্ণে এক সুমধুর রিনী রিনী কন্ঠে 'এক্সকিউজ মি' শব্দটি বাজিয়া উঠিল। উক্ত শব্দের সহিত মানু বেশ পরিচিত।

তাহার ভান্ডারের স্বল্প সংখ্যক ইংরেজী শব্দের মাঝে 'এক্সকিউজ মি' শন্দটি অন্যতম। সূতরাং শব্দের উৎস সন্ধানের উদ্দেশ্যে ঘুরিতেই মানুর হৃৎকম্প বাড়িয়া গেল। হৃৎকম্পের কারণ জনৈক সুন্দরী উক্ত শব্দের উৎস আর সুন্দরীদের দেখিলে যে মানুর দুই একটা হৃৎস্পন্দন এদিক সেদিক হইয়া যায় সে সম্পর্কে সকলেই অবগত রহিয়াছে। তো বিনীত ভঙ্গিতে মানু ক্ষমা চাহিবার হেতু জানিতে চাহিলে, সুন্দরী তাহার স্বভাব সুলভ চপলতায় হড়বড় করিয়া যাহা বলিল তাহার সারমর্ম করিলে এই দাঁড়ায় যে সে পথ হারাইয়াছে। এই বিশালাকার হাসপাতালে পথ হারাইয়া ফেলা অতিব স্বাভাবিক ব্যাপার।

মানুও এদিক পানের পথ ঘাট সম্পর্কে সেইরুপ জ্ঞান ধারণ করে না। বালিকার পথ বাতলাইয়া দেওয়া তাহার কম্মো নহে। সূতরাং মানু কহিল, সেও পথ হারাইয়াছে এবং বালিকা যে স্থলে যাইতে চায় সেও উক্ত স্থলের সুলুক সন্ধানে ব্যাস্ত, অতএব একই সঙ্গে পথের সন্ধান করাটায় শ্রেয়। সুন্দরী স্মিত হাসিয়া প্রস্তাবে সম্মতি দিবার সাথে সাথে মানুর হৃদয়ে ব্যাক ফ্রাউন্ড মিউজিক বাজিয়া উঠিল, 'এই পথ যদি না শেষ হয় ...'। হায় হতভাগা যদি জানিত সে কোন বাঁটে পড়িল।

সুন্দরী 'ওয়ান সেকেন্ড' বলিয়া ক্ষণকাল পরে কোথা হইতে একটা ঝুড়ি লইয়া আসিল। ঝুড়ি দেখিয়া মানুর দ্রবীভুত হৃদয় শুকাইয়া একেবারে বাষ্পীভূত হইয়া গেল। ঝুড়ির মাঝে এক খানা মানব শিশু ঘুমাইয়া কাদা হইয়া রহিয়াছে। সুন্দরী যে বিবাহিতা ইহা আগে বোঝা যায় নাই। পরের কাহিনী সংক্ষিপ্ত।

দীর্ঘ পথ সুন্দরীর শিশুটিকে বহন করিয়া মানু এখনও শরীরের বেদনায় কাতরাইতেছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।