আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কবি শহীদ কাদরীর নতুন বই বেরুচ্ছে / আদনান সৈয়দ



কবি শহীদ কাদরী 'র নতুন বই- আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও আদনান সৈয়দ ------------------------------------------------------------------------- কবি শহীদ কাদরীর কাব্যগ্রন্থ তিনটি। উত্তরাধিকার, তোমাকে অভিবাধন প্রিয়তমা এবং কোথাও কোন ক্রন্দন নেই। এই তিনটি কাব্য গ্রন্থ নিয়েই কবি শহীদ কাদরীর যাত্রা। আমরা সবাই জানি তিনি কবিতা লেখেন অল্প আর আড্ডা দেন বেশি। লেখক-টেখক হওয়ার সখ তাঁর কখনই ছিল না।

কিন্তু তারপরও তিনি একজন খুবই জনপ্রিয় কবি। বাংলাদেশের প্রথম সাড়ির কবিদের মাঝে একটা আসন দখল করে নিয়েছেন। জানা গেল তাঁর চতুর্থ কাব্য গ্রন্থ ’ আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’ আত্বপ্রকাশ করছে এই আসছে ফেব্রুয়ারীর বই মেলায়। কবি শহীদ কাদরীর শেষ কাব্যগ্রন্থ ” কোথাও কোন ক্রন্দন নেই’ প্রকাশিত হয় ১৯৭৮ সালে। ৭৮ থেকে ২০০৯ এই প্রায় দীর্ঘ ত্রিশটি বসন্ত কবি পার করে দিয়েছেন বাংলাদেশের বাইরে, প্রবাস জীবনের ভিন্নস্রোত ধারায়।

জার্মান, ইংল্যান্ড হয়ে বর্তমানে তিনি আমেরিকায় পাকাপাকিভাবে বসবাস করছেন। ২০০৪ সাল থেকেই দুটো কিডনি বিকল এবং অসুস্খ হয়ে হাসপাতালমুখি। খুব স্বাভাবিকভাবেই জীবনের এই কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে কবির কাছ থেকে কবিতা আশা করা সম্ভব না। কিন্তু তারপরও কোথায় আর কীভাবে যেন নীরবে টুপটাপ কবিতার বৃষ্টি ঝড়ে। টুকটাক করে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত আর অপ্রকাশিত কবিতার সংখ্যা দাড়ায় পয়ত্রিশ থেকে চল্লিশ।

তাইতো! এই কবিতা দিয়েইতো কাদরীর চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হতে পারে! এই চিন্তার আগুনে ধূপ ছিটিয়ে এর সুগন্ধটাকে আরো বেশি বিস্তৃত করলেন শহীদ কাদরীর পত্নী নীরা কাদরী। শেষ পর্যন্ত অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে, হিশেব-নিকেশ করে, ভেবে চিন্তে সায় দিলেন শহীদ কাদরী। তবে তাই হোক! প্রকাশিত হোক চতুর্থ কাব্য গ্রন্থ !! শহীদ কাদরীর দোস্ত কথাসাহিত্যিক জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত কাব্যগ্রন্থটির সম্ভাব্য প্রকাশকের খোঁজে নামলেন। এদিকে চিরুনি অভিযান চালিয়ে গোটা পয়ত্রিশটারো বেশি কবিতা যাচাই-বাছাই হল নতুন প্রকাশিতব্য কাব্য গ্রন্থটির জন্য। এবার গ্রন্থটির যুতসই একটা নাম দেওয়া চাই।

নামের বিষয়ে কবি কাদরী সবসময়ই সচেতন। অন্তত: তার তিনটি কাব্যগ্রন্থ সে কথারই প্রমান দেয়। আর সে কারনেই চতুর্থ কাব্যগ্রন্থটির নাম যে একটু কাব্যিক আর রোমান্টিক হবে সে বিষয়ে আর সন্দেহ কি? শহীদ কাদরী তাঁর কাব্য গ্রন্থের নামকরন করলেন ” আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও”। উলেস্নখ্য যে এই নামে কবি ১৯৯২ সালে নিউইয়র্কের সাপ্তাহিক ’প্রবাসি’তে একটা কবিতা লিখেছিলেন। সেদিনের সেই সাপ্তাহিকের সাহিত্য পাতাটি সম্পাদনা করেছিলেন জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত।

কিন্তু হঠাৎ দু:সংবাদ!! কবিতাটি শহীদ কাদরীর সংগ্রেহে নেই আর কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। প্রচন্ড উদ্দাম আর চোখভরা স্বপ্নের উপর পড়লো করুন যতি চিহ্ন। সবারই মন খারাপ। চেনা-পরিচিত কারো কাছেই কবিতাটা পাওয়া গেল না। এখন উপায়? কিন্তু শহীদ কাদরী হাল ছেড়ে দেওয়ার লোক নন।

বললেন, ”না পাওয়া গেলে এই নামে নতুন আরেকটা কবিতা লিখব, তবু গ্রন্থের নাম পরিবর্তন হবে না”। এবার শেষ চেষ্টায় নামলেন কবি পত্নি নীরা কাদরী। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিলে কেমন হয়? যেই ভাবা সেই কাজ!! নিউইয়র্কের সাপ্তাহিক পত্রিকা ’ ঠিকানা’ য় চলে গেল বিজ্ঞাপন। ঠিকানা প্রকাশিত হয় প্রতি বুধবার। বুধবার সন্ধ্যায় নীরা কাদরীর মোবাইল বেজে উঠলো।

ওপাশ থেকে নাম প্রকাশ করতে রাজি হলেন না ভদ্রলোক। শুধু বললেন কবিতাটা আমার সংগ্রহে আছে। আপনার ঠিকানায় পাঠিয়ে দিচ্ছি। তিন দিন পর একটা খাম এল শহীদ কাদরীর জ্যামাইকা বাসভবনের ঠিকানায়। সত্যি সত্যি জ্বলজ্যান্ত কবিতাটি দিব্যি ঘুমিয়ে আছে সেই খামে।

আর জানা গেল সেই ভদ্রলোকের নামও। তিনিও একজন কবি। কবি ফকির ইলিয়াস। ’আমার চুম্বনগুলো পৌছে দাও’ কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হচ্ছে মনোনশীল প্রকাশনী সংস্খা ’প্রতীক’ এর হাত ধরে। ১৭ নভেম্বর, ২০০৮, নিউইয়র্ক Click This Link


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।