শুক্রবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “বল এখন বিএনপির কোর্টে। এখন তারা নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করবেন কিনা, সংসদীয় রাজনীতি করবেন কিনা, গণতান্ত্রিক রাজনীতি করবেন কিনা তা দেখার বিষয়। ”
প্রধানমন্ত্রী তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করেছেন উল্লেখ করে এই মন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলের অন্য কথা থাকলে তারা তা বলতেই পারে। তবে তার আগে তাদের বলতে হবে যে এই সংবিধানের অধীনে, এই সংবিধানের কর্তৃত্বেই তারা নির্বাচন করতে রাজি।
“এটা যদি তারা করেন, তাহলে বুঝতে হবে তারা গণতান্ত্রিক, নিয়মতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে।
”
সংসদ নির্বাচনকালীন সরকারের ধরন নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে রাজনৈতিক সঙ্কটের আশঙ্কার মধ্যেই গত বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
‘বিএনপির জাতীয় নির্বাচন বানচালের নীল নকশা: সরকারের করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের বিষয়ে বিভিন্ন ধারা-উপধারা ব্যাখ্যা করেন সর্বশেষ সংবিধান প্রণয়ন কমিটির কো চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত।
সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে তা সরকারি দলের পক্ষে যাবে বলে বিরোধী দলের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিভিন্ন দেশে এ পদ্ধতিতেই নির্বাচন হয়। বাহাত্তরেও এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়েছে। তখন তো প্রশ্ন ওঠেনি? সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করলে যদি সমান সুযোগই না থাকে তবে বলেন, সংবিধানের ১২৩ এর ‘ক’ চাই না ‘খ’ চাই।
একটা কিছু তো বলতেই হবে। ”
বিরোধী দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ফখরুল ইসলাম সাংবিধনিকভাবে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনের কথা বলেন; আবার হুঁশিয়ারি দেন যে আমরা পালাবার পথ পাব না। এটা তো সাংবিধানিক রাজনীতি না। আপনি (ফখরুল) গণতান্ত্রিক-সাংবিধানিক রাজনীতিতে আসেন। ”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “কিছু গুণ্ডা আর কিছু হুণ্ডা লইয়া ইলেকশন ঠাণ্ডা করার দিন শেষ।
”
সুরঞ্জিত বলেন, এখন ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি ও কারচুপি করে নির্বাচনে জেতার দিন আর নেই। ভোটার লিস্ট হয়েছে, আইডি কার্ড হয়েছে, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে।
তাছাড়া গণমাধ্যমের ‘ব্যাপক নজরদারির’ বিষয়টি উল্লেখ করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “এই যে মিডিয়ার যুগ- একটা সুঁই যাওয়ার জায়গা নাই, ক্যামেরার মধ্যে ধরা পড়ে। তাই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। ”
বিরোধী দলকে তিনি সতর্ক করে দেন- আওয়ামী লীগকে ‘হুমকি-ধামকি দিয়ে’ লাভ নেই।
‘জামায়াত-হেফাজত দেখিয়ে’ ক্ষমতা কেড়ে নেয়া যাবে না।
“বল এখন বিএনপির কোর্টে। তারা শান্তি চায়, না অশান্তি চায়? নির্বাচন চায় নাকি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়?”
বিএনপি মুখে নির্বাচন না করার কথা বললেও ভেতরে ভেতরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও দাবি করেন সুরঞ্জিত।
তিনি বলেন, “নির্বাচনে কারচুপি হবে না। আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যায় নাই, যাবেও না।
এনিয়ে বুদ্ধি-প্যাঁচ করার কিছু নাই। ”
বিএনপি এক সময় ‘ভুল বুঝতে পারবে’- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যায় না। যদি কোনো কথা থাকে তা বিএনপিকেই বলতে হবে।
“আপনারা কথা বললে প্রধানমন্ত্রী আছেন, আমাদের দল আছে, জোট আছে- কেউ তো অবিবেচক না। আর আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবে দেশ চলুক।
”
সরকারের মেয়াদ ৯০ দিন বাড়ানো এবং সংবিধান সংশোধনের গুজবকে উড়িয়ে দিয়ে সুরঞ্জিত বলেন, “‘কসমেটিক অ্যামেন্ডমেন্ট (সংবিধান সংশোধন) আওয়ামী লীগ করে না। এটা তারা (বিএনপি) করে। ”
নৌকা সমর্থক গোষ্ঠী নামের একটি সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।