পরী,
সময়ের আবর্তে আবারো ফিরে এলো আমার জন্মদিন। ঠিক এক বছর আগে এই দিনেই প্রথম শুনেছিলাম তোমার কিন্নর কন্ঠ। আবিষ্কার করেছিলাম দু’জন দু’জনকে নতুন করে। যে আমি বরাবর নিজের জন্মদিনটা ভুলেই থেকেছি সারাজীবন, সেই আমি এখন আকুল হয়ে অপেক্ষায় থাকি নিজের জন্মদিনের। আমার জন্মদিনের চেতনা আর ভাবনা এমন করে বদলে দিয়েছো তুমি।
ক’দিন ধরেই মনে পড়ছে আগের বছরের সেই দিনটার কথা। একটা তো বছর মাত্র মুঠোফোনের বদান্যতা, আর তার আগে প্রায় দু’বছর শুধু net। অথচ মনে হয় যেনো জন্ম-জন্মান্তরের এই পরিচয়, অসীম সময়ের গহ্বরে হারিয়ে যাওয়া এই সম্পর্কের গোড়াপত্তন। ভাবতে অবাক লাগে এই সূক্ষ্ণ যোগাযোগের সুতো ধরে কিভাবে এত কাছে এলাম আমরা, কিভাবে পারলাম সব প্রতিকূলতাকে দূরে ঠেলে এত আপন করে নিতে একে অপরকে। আমাদের কখনো মিলন হবেনা জেনেও কিভাবে এত আকুলতায় আর বাঁধভাঙ্গা ভালোবাসায় ভেসে গেলাম দু’জনে।
কিভাবে সব চেনাজানা জগত আর সম্পর্ক দু’হাতে ঠেলে তৈরী করে নিলাম শুধু দু’জনার ভালোবাসার ভিন্ন এক জগত।
ভাবতে অবাকই লাগে প্রয়োজনের সময়টাতেই কিভাবে যেনো ভাগ্য আমাদের কাছে সুপ্রসন্ন হয়ে ধরা দেয়। এবারো সেই প্রতীক্ষীত দিনটায় অফিসের কাজে আমি ঢাকায়। একা। কাজের সময়টুকু ছাড়া দিনরাত তোমারই অপেক্ষায়।
খুব ইচ্ছে করছিলো চেয়ে নেই আরেক প্রতীক্ষীত উপহার। অব্যক্তই রয়ে গেলো ইচ্ছেটা। সঙ্কোচের দেয়াল ভেদ করে ইচ্ছেটা তার খোলস ছেড়ে বের হওয়ার সুযোগ পেলোনা। ছিলো প্রত্যাখ্যান এর শঙ্কা, সীমারেখা অতিক্রমের দ্বিধা আর নিজের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের প্রয়াস। বলেছিলাম কোনো একসময়... দেখা করতে চাইবো না আর কখনো।
Net এ কথা হচ্ছিলো। ১২টা বাজতেই জন্মদিনের শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা প্রকাশের ভঙ্গিমাগুলো এমন করে আন্দোলিত করতে লাগলো আমায়, মনে হচ্ছিলো আমি যেনো কৈশোরের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা এক অসহায়, ভালোবাসার জোয়ারের বেগে টলোমলো। তারপর কয়েকদিন ধরে লেখা তোমার দীর্ঘ mail আর পাঠানো গান... আমার জন্মদিনের সেরা উপহার।
চিঠিটা যখন পড়বে তুমি জানি তখন এক বুক অভিমানের কষ্ট জড়িয়ে থাকবে তোমায়। কেনো যে মাঝে মাঝে দম বন্ধ করা শীতল অভিমান ঘিরে ধরে আমাদের।
সম্পর্ক তো আর ঘরের কোণে সুদৃশ্য এ্যাক্যুরিয়ামের স্থির পানি নয়, তা হলো অথৈ সমুদ্রের উত্তাল জলরাশি। ক্ষণে তোলপাড় করা জোয়ারের উচ্চতায় ভাসিয়ে নেয় সব, আবার কখনো পড়ে থাকে স্থবির, দূর সীমান্তের দিগন্তরেখার মত একফালি বিবর্ণ সরূ ফিতের মত। আমাদের সম্পর্কটা যেনো বড় বেশী টালমাটাল। যদিও দু’জনেই জানি আমাদের নিয়তিই হচ্ছে না পাওয়ার মাঝেই সব পাওয়া। আর সেজন্যেই অনুভূতিগুলোর তীব্রতাও যেনো দু’জনেরই নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
পরী, ইচ্ছে করে ভালো সময়গুলো ফ্রেমে বদ্ধ সুখী একটা ছবির মত স্থির হয়ে থাক। আবার কখনো ভাবি... জটিলতাগুলো না থাকলে আমাদের সম্পর্কটাও হয়ে যেতো আর দু’ দশটা সম্পর্কের মতোই সাধারণ। আমাদের যে অনিশ্চয়তার মাঝেই নিশ্চয়তা, প্রবল উত্থান পতনের মাঝেই স্থিরতা আর এক বুক জানা অজানা অনুভূতির মাঝেই ভালোবাসার তীব্র বর্ণচ্ছটা।
ভালো থেকো অনেক। ভালো থেকো ঠিক তোমার মতো করে।
The Introduction
More about Pori & Akash
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।