আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১০০ টাকার বিনিময়ে সন্তান, --- হাঁতি দিয়ে কবিরাজি (হাঁতিরাজি)



এলাকায় হাঁতি এসেছে। আমরা দুএক জনের জন্য হাঁতি আচানক নয়। এলাকার সর্ব সাধারণ ত আর হাঁতি দেখেনাই। তাই চার দিকে একটা উষ্ণ আলোচনা হাঁতি নিয়ে। দেখতে গেলাম হাঁতিকে ।

হাজার হওক নিজেদের এলাকায় হাঁতি এসেছে। গিয়ে দেখি অনেক মানুষ। আশে পাশে হাঁতির পায়ের ছাপগুলি খরগোশের গর্ত মনে হল। এতরাতেও এত মানুষ হাঁতি দেখে? একজন উত্তর দিল এখন কবিরাজি চিকিৎসা হবে হাঁতি দিয়ে। আচানক নয়, রীতিমত তাজ্জব হলাম।

প্রথমে আমি রাজি ছিলামনা হাতি দেখায়। তাই মনে একটা রাগ রাগ ভাব ছিল। কবিরাজির কথায় মূহুর্তে তা চলে গেল। দেখতে হবে হাতিরাজি চিকিৎসা। হাতি দিয়ে, তাই হাঁতি রাজি বল্লাম।

অপেক্ষার শুরু হল। এদিকে বড়ই গাছের তলে হাতি বাধাঁ। আর খাচ্ছে বড়ই গাছের ডাল। দেখে মনে হল বড়ই গাছে কোন কালেই কাটাঁ ছিলনা। শোনাগেল প্রস্তুতি চলছে।

এমন সময় এক রসিক বৃদ্ধ বললেন হাতি নিয়ে এক মজার কাহিনি। (এক দেশে খেতের ফসল খেয়ে ফেলত রাজার হাঁতি। সকালে গ্রামের লোক দেখল খেতে বড় বড় গর্ত। মানুষ ভাবল এগোলা ধান বানার গাইল এর গর্ত হতে পারে। কারণ গর্ত গুলো গাইলের তলার আকৃতির।

তাই মনে করে পরদিন এলাকার সব গাইল বেধে রাখা হল। সাথে গাইল কে ছেড়ে দেয়ার অপবাদ দিয়ে ছিয়া কেও বেধে রাখা হল। সকলে সম্মিলিত হাসি শুরু করে দিল বৃদ্ধর কথা শোনে। যাক হাতির চালক এসে গেল। কবিরাজি শুরু হবে এবার।

হাঁতির চালক হাঁতির পিঠে উঠে বসল। আনা হর দুই কলসী পানি। রোগিকে বলা হল আপনি হাতির মুখে পান-সুপারি দিন। উনি দিলেন। এবং নিজ চোখো দেখলাম সাথে ১০০ টাকার নোট।

মুখে তোলে নিল হাঁতি। এবার চালক বললেন, ইদিক আইসেন- হাতি শোওরের তলে। ডরাইয়েন না কিছু হবোনা। বইসেন। রোগীনী অনেক সাহস করে কম্পমান পায়ে বসলেন হাতির শুড়ের নিচে।

পানিভরতি কলসী উপরে নিয়ে সব পানি ঢেলে দিলেন মাউত (হাতির চালক) হাতির মাথার উপর, শুড় গড়িয়ে পানি এসে পড়ল রোগীর মাথায়। এবার রোগীনিকে বলা হল হাতির নিচ দিয়ে ৩ বার এপাশ ওপাশ যেতে। প্রতিবারই যেন হাতির পেটে মহিলার পিঠ ঘষা খায়। গেলেন। এবার মালিক বললেন শিন্নি দেন,( হাদিয়া) ।

মহিলা বললেন ওমা পান সুপারির সাথে না ১০০ টাকা দিলাম !!! তাজ্জব! সব তাজ্জব! তাহলেকি টাকা হাতি খেয়ে ফেলেছে ? আমার চোখে ভেসে উঠল পানের সাথে ১০০ টাকা। তখন আরও অনেকেই বলল। পানের সাথে দেখেছে। চার দিক থেকে কলকল, খিল খিল, হাহাহা, হিহিই নানান জাতের হাসি, একজন আবার মসকরা করে বলল কিআর করবেন মাউত ভাই, কোর্টের জজ দের মত একটু বীব্রত বোধ কইরালান। চিকিৎসা শেষ।

হাইরে চিকিৎসা--- কুসংস্কারাচ্ছন্ন চিকিৎসা। দারিয়ে দারিয়ে খালি দেখলাম । প্রতিবাদ করতে পাড়িনি। পরিস্থিতির শিকার হয়ে। তাদের ধারণা হাতির শুড় ধুয়া পানিতে গোসল করলে যাদের ছেলে মেয়ে নাই তাদের ছেলে মেয়ে হয়।

ফিস মাত্র ১০০ টাকা। এর পড় হাঁতির চালকের সাথে অনেক কথা হল। জান্তে চেয়েছিলাম এমন চিকিৎসায় কাজ হয় কিনা। উনি বললেন ( আমার হাতে চাইড্ডা হইছে )। এমন প্রত্বয়ের সাথে বলল- বিশ্বাস না করে পারলাম না।

চলে এলাম সেই বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের দিধা নিয়ে মনে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।