আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একই অপরাধে একজনের ফাঁসি আরেক জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, রায় কি চকলেট ক্যান্ডি নাকি??

সুখে থাকতে ভুতে কিলায়, কথাটা প্রাচীন প্রবাদ। কিন্তু কাউকে সুখে থাকতে দেখলেও ইদানীং অনেকে ভুতের কিল খায়, কেন খায় জানি না। বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায় হল, বহু আকাঙ্ক্ষিত একটি দিন স্বাধীন বাংলার মানুষ পেল। আজকে কাদের মোল্লাকে সেই একই অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হল। সুফিয়া বিবির সেই “বুড়ি হইলাম তোর কারনে” গানটির কথা মনে পড়ছে।

একই কাজের জন্য নারী আর পুরুষের ভিন্ন ভিন্ন মজুরী। কিন্তু আজকের বিষয় পারিশ্রমিক নয়, শাস্তি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজব একটি রায় দিলো, যেটা জামাত শিবির ও মানে না, আওয়ামীলীগও মানে না, জনসাধারণও মানে না। মানে শুধু তথাকথিত চুশিল সমাজ। বলি যদি হরতাল দাঙ্গার ভয়ে বা নাশকতার আশঙ্কায় রায় দেয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রকার বিভ্রান্তি কাজ করে তাহলে কি দরকার ছিল এই প্রহসনমূলক ট্রাইব্যুনালের, কি দরকার ছিল এই পক্ষপাতদুষ্ট বিচারের, কেন খামাখা সাধারণ জনগণকে আবার মূলা-কাঁচকলা দেখান? কেন আশার বানী শুনান? আসলে এটাই নোংরা রাজনীতির খেল, আমরা জনসাধারণ গাধা, আর আমাদের সামনে ঝুলানো আছে মূলা।

আমরা কিন্তু জানি, একাত্তরের রাজাকার, চিরদিনের রাজাকার। অথচ এরাই নির্বিঘ্নে বুক ফুলিয়ে এদেশের বুকে হেঁটে বেড়ায়। কিন্তু এদের কে এই হাটার ব্যবস্থা করে দিল কে? কাদের সংগে আঁতাত করে এরা আবার ঢুকে পড়লো আমাদের সমাজে? কাদের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে আবার তৈরি করল এই বিশাল বাহিনী? না, আমিও এর উত্তর জানি না, তবে এতোটুকু বলতে পারি, নিশ্চয়ই চরম মহৎ কারো ছত্রছায়ায় এরা আবার সাহস পেয়েছিল। এই মহৎদের পরিচয়টা আবার এরকম, “বলদের পশ্চাৎদেশ দিয়ে জোঁক গেলে নাকি ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা লাগে”। আসলে আমরা জাতি হিসেবে খুব অতিথিপরায়ণ আর স্বজনপ্রীতিতে আমাদের জুড়ি নেই।

আমরাই পারি শুয়োর থেকেও নিকৃষ্ট কিছু মানুষের সাথে আত্মীয়তা করতে, আমরাই পারি শুয়োরদের সাথে বন্ধুত্ব করতে, আবার কিছু রাজাকার তো ক্ষমতার আসনে আসীন। আসলেই কতটা নির্লজ্জ বেহায়া জাতি আমরা। চিহ্নিত রাজাকারদের নির্বাচনের জন্য মনোনীত করি, আবার এদেরকেই ভোট দিয়ে মহান জাতীয় সংসদে পৌঁছে দেই। এই রাজাকারদেরকে কম বেশী সবাই চেনে, জানে, এদের নাম লিখে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে চাই না। ৯৬ তে জামাত শিবির খুব ভাল দল ছিল, তাদের সাথে জোট বাঁধা তৎকালীন আওয়ামীলীগের জন্য জায়েজ ছিল।

২০০২ এ বিএনপির সাথে জোট বাঁধার কারনে জামাত শিবির হয়ে গেল অপয়া, অস্পৃশ্য। তাই এখন এদের নির্মূল করতে হবে। বিশ্বজিৎএর হত্যাকারীরা হঠাৎ করে ছাত্রলীগ থেকে বিএনপি বা জামাত শিবির কর্মী হয়ে গেল। আওয়ামীলীগ আসলেই খুব চমৎকার খোলস পাল্টাতে পারে। আজকে মজার কিছু মন্তব্য শুনছিলাম রায় দেয়ার পর।

এর কয়েকটি এরকম, বেয়াল্লিশ বছর আগের হত্যা ধর্ষণের শাস্তি দিচ্ছে এখন। তাহলে এখন যারা খুন ধর্ষণ করছে, এদের বিচার কবে হবে? আবার কেউ কেউ বলছেন, মাইয়া বিয়া দিলে বেয়াইরা রাজাকার থিকা মুক্তিযোদ্ধা হইয়া যাইতে পারে, এটা জানলে বাচ্চু রাজাকার বা কাদের মোল্লারাও মাইয়া বিয়া দিত জায়গা মত। আর আমার নিজের মন্তব্য খুব সাধারণ, আমরা আওয়ামীলীগ না, জামাত শিবির না, বিএনপি না, জাতীয় পার্টি না, বামপন্থীও না। আমরা সাধারণ জনগণ, আসলেই খুব সাধারণ, খুব নিরীহ। আমরা চাই শান্তিতে থাকতে, আমাদেরকে শান্তিতে থাকতে দেন, নাইলে আবারও নিজেদের শান্তির ব্যবস্থা নিজেরাই করে নিবো।

মনে রাখবেন, একাত্তরের যুদ্ধ হইছিল রাজনীতিবিদদের সাথে সাধারণ জনগণের, বর্তমান আওয়ামীলীগ বলেন আর বিএনপি বলেন আর যাই বলেন, এরা সাধারণ জনগণের মধ্যেই ছিল তখন। যদি আমাদের জনজীবন ঠিক না করেন, তাহলে কবে আপনাদের আবার জুতাইয়া বের করি এটা নিয়ে চিন্তা কইরেন মাঝে মাঝে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।