আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাম সমাচার

কৃষ্ণশুভ্রারা বেঁচে থাকুক দূরে সুদূর স্বপ্নসীমান্তে

নামে কি বা আসে যায় কিংবা নামের বড়াই করো না এ জাতীয় কথা আমরা ছোট থেকেই শিখি। কিন্তু বাস্তবে নামের গুনে মানুষ বড় হয় না বটে কিন্তু সে তার আপন নামকে করে তোলে বিখ্যাত কিংবা কুখ্যাত। তাই তো জাফর নামে এদেশে অনেক লোক দেখা গেলেও এই নামটির আগে ছোট একটি শব্দ মীর লাগাতে দেখা যায় না কখনও,আজম নামের অনেককে দেখা গেলেও তার পূর্বে গোলাম শব্দটির ব্যবহারও নেই কিংবা পাকিস্তানিদের জননাঙ্গ চোষা কিছু দালাল ব্যতীত সাধারণ মানুষের কাছে জিন্নাহ মোনায়েম এসব নামও বিলুপ্ত। নামের গুনে মানুষ কিংবা মানুষের গুনে নাম কতটা সমাদৃত তার নজির ভার্চুয়াল জগতেও দেখালাম প্রথম আলো ব্লগ খোলার পর। আপন মহিমায় উদ্ভাসিত নিক হ্যাকিং এর জ্বলন্ত উদাহরণ।

যাক সে কথা। আমার নিজের নামের গল্প বলব বলেই এ লেখার অবতারণা। আমার জন্মের পর আকিকা করে আমার আসল নাম রাখা হলো একটি। আবার অন্য দশটি ছেলের মত ডাকনামও রাখা হলো। আসল নাম রাখা হলো আরবিতে যার বাংলা অর্থ দাড়ায় ইসলামে বিশ্বাসী।

আমার নামের সার্থাকতা আমি এ যাবত পূরণ করতে পারিনি কতটুকু পারব তার জবাব ভবিষ্যতের কাছে তোলা থাক। আমার ডাকনাম রাখতে গিয়ে বাধল বিপত্তি। আমার চেহারা নাকি ছোটবেলায় লাল টকটকে ছিল( যদিও আমি নিজে সন্দিহান আর আমকে যারা দেখবেন তারাও সন্দিহান হবেন),তাই আমাকে প্রথম দেখেই আমার পিতামহী আমার মাঝে শিমুল ফুলের লাল আবেশ দেখে ফেললেন আর শিমুল বলে ডেকে ফেললেন। শিমুল ডাকনাম হিসাবে স্থায়িত্ব লাভ করার আগেই আমার মাতামহ আমার মাঝে কোন সুপ্ত কবি সত্তাকে আবিষ্কার করে ফেললেন। তিনি আমাকে ডেকে বসলেন সাদী।

তা শিমুল আর সাদী এই দুইটি নামকেই প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলতে লাগল। এক সময় বাবার দিকই জয়ী হলো। আমার নানার মৃত্যুর পর আমার সাদী নাম হারিয়ে গেল। আমি শিমুল হয়েই প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেলাম প্রায়। প্রায় বলছি এজন্য, এ নামটি পুরো প্রতিষ্ঠিত হয়নি কো্থাও।

আমি প্রথম যেদিন স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা দিব কেমন করে যেন আমার নাম নাফিস হয়ে গেল। আমার মা বলে দিল তোর নাম কেউ জানতে চাইলে বলবি নাফিস। আমি অবাক হলাম কিছুটা। কিন্তু মেনে নিলাম চাপানো এই নাফিস নাম। এই নামটি যে এখন নেই এতে আমি স্বস্তি বোধ করি।

কেননা এই নামের ক্রিকেটারদের নাম ধরে গালি দেয়া হয় আমার আশেপাশেই। কার আর নিজের নামে গালি শুনতে ভালো লাগে ! যা হোক নাফিস নামটি আমার মাঝে গেথে যাওয়ার আগেই আমার স্কুল বদল হলো সেই সাথে মৃত্যু ঘটল সেই নাফিস নামটির। নতুন স্কুলে কেউ আমাকে আসল নামের অংশ আমিনুল আবার কেউ শিমুল নামে ডাকত। তবে শিমুল নামটির এতই প্রাধান্য হলো আমি নিজেকে পুরোপুরি শিমুল ভাবাই শুরু করলাম। ক্যাডেট কলেজ আঘাত হানল আমার শিমুল সত্তার একচ্ছত্র আধিপত্যে।

ক্যাডেট নাম হিসেবে আমদানি হলো নতুন নাম আমিন। তার এমনই প্রভাব আমি তো আমি আমার বাসার সবাইকেও অভ্যস্ত করে দিল এই নামে। আর ক্যাডেট কলেজের প্রভাব আমার ভার্সিটি জীবনেও চলল। বন্ধু মহলে আমি আমিন নামে পরিচিত হয়ে গেলাম আর শিমুল নামটি থাকল শুধু তাদের জানা কিন্তু কখনও ব্যবহারের জন্য নয়। তা জীবনে এত নাম পরিবর্তন হলো তা ভাবলাম ব্লগে এসে এবার নিজেই নিজের নামটা বদলে ফেলি।

তা বদলেও ফেললাম। আমার এত নামের তালিকায় আরও একটা নাম যোগ হলো। আর সে নাম শুধু নাম নয় তার আগে একটা বিশেষণ "ব্লগার সীমান্ত আহমেদ"।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।