.. মা ভাত দিবানা ... ক্ষিদায় মইরা যাইতেসিতো !
.. আর একটু দাড়া বাবা । এইতো হয়া গ্যাছে ।
খুব যত্নে আলুভর্তার উপরে হাল্কা করে সরিষার তেল মাখায় মা । আর'ও আলতো করে মমতার সবটুকু ঢেলে দিয়ে শেষবারের মত ভর্তার্টা মাখাতে লাগল ।
সব তৈরী ।
সাদা প্লেটটার উপরে মোমসাদা ভাত, তাজা ধুয়া বেরুচ্ছে ।
প্লেটের এককোনে এক চিমটি কালিজীরা ভর্তা, বোধকরি পৃথিবীর একমাত্র মিশকালো খাবার । আজব জিনিষ, একবার মুখে দিলে চোখমূখ বিকৃত করে আবার মুখে দিতে ইচ্ছে করে, আবার মূখে দিয়ে চোখমুখ বিকৃত করে আবার হাত বাড়াতে হয় ।
হলুদ মোমের মত মিহি, শীতের নতুন আলুভর্তাটা প্লেটের বাম দিকে সব থেকে উচু হয়ে আছে । মোমের মত আধাস্বচ্ছতার ভেতর দিয়ে গাঢ়ো সবুজ ধনিয়া পাতা আর কাঁচা মরিচের কুচি দেখা যাচ্ছে ।
পৌষের শুরুতেই অতিলোভী কৃষক পরিনতির আগেই এদেরকে বৃন্তবঞ্চিত করেছে । ভর্তার চাকটা ভাংলেই ধনিয়া পাতার সুবাস মৌ মৌ করবে । মুখে দিয়ে দাত বসালেই কুচকুচ করে টের পাবেন আরেকটা জিনিষ ... দেশী পেয়াজের ঝাঁজ ।
ভর্তার ঠিক ডান পাশেই শিদল ... উত্তরবঙ্গের বিশেষ ঐতিহ্য । ইহা দেখিবা মাত্রই অভ্যস্ত জিহ্বভা নিজের জলে নিজেই ডুবিয়া মরিতে উদ্যত হয় ।
তাই সাবধান !
ধূয়ার প্রকোপ একটু কমলে আবিস্কার করবেন, ঘন মুগের ডাল ... মোমসাদা ভাতের ঠিক মাঝখানে, আয়োজনের মধ্যমনি সেজে ছরিয়ে আছে বৃত্ত হয়ে ।
তার থেকে একটু দূরে ... একটা ভাজা শুকনা মরিচ, চকচকে মচমচে লাল টুকটুকে, দুই-তৃতীয়াংশ বের হয়ে আছে ভাতের উপরে ।
এর নাম মা'ভাত ।
-------------------------------------------------------------------------------
... হাল্কা শীতশীত লাগতেছে, ক্ষিধাও লাগছে জোস্ , অফিসে দুপুরে লাঞ্চ করিনাই, মাথায় কি কি জানি সব ঘুরতাছে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।