আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেই গল্পটা! (শেষ নয়)



আদনান বাসায় ফিরল মন খারাপ করে। মা পৃথিবীটা বড়ই আশ্চর্যের! একটা ছেলে আমাদেরকে নিজের হাতে রান্না করে খাওয়ালো, সেকি উৎসাহ তার! আমরা খেয়েদেয়ে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ প্রশংসা করায় সে আবার আরেকটা খাওয়া দেয়। সেই প্রাণোচ্ছল ছেলেটা আজ আর নেই। কেন এমন হুটহাট মানুষ চলে যায় মা? যদি জানতাম ছেলেটা এভাবে চলে যাবে তাহলে ওকে আরেকটু ভালোকরে দেখতাম। অনুভব করতাম গভীরভাবে।

... এখন খুব খারাপ লাগছে মা! মিন্টুদের বাড়ি গেছিলি? ওর খুব খারাপ অবস্থা নারে? হ্যাঁ মা, তবে ও মোটেও ভেঙে পড়েনি। অনেক স্ট্রং। পাগলামীটা স্্েরফ পরিশুদ্ধতার প্রতীক। মানুষের এমন বিনয়ীই হওয়া উচিৎ। ইংরেজরা কার্টেসি করে কথায় কথায় স্যরি বলে, এক্সকিউজমি বলে, তাদেরকে কেউ পাগল বলে না, বলে পৃথিবীর সবচে সভ্য জাতি।

অথচ আমাদের দেশের কেউ এই বিনয় দেখালে আমরা ব্যাপারটাকে দেখি ভিন্নচোখে। ... -প্রচলন নাইতো, তাই। তোরও দেখছি অবস্থা বেশি ভালো না। আসলি ঈদ করতে, মিন্টুদের বাড়ি গিয়ে এলি মন খারাপ করে! আমার উচিৎ হয়নি তোকে... -দুঃখকে চাপা দিয়ে সুখি হওয়া খুব কঠিন মা। তারচে দুঃখবে ফেইস করে যে সুখ সেটাই প্রকৃত সুখ।

-আঘাত পেলে মানুষের ভেতরের মানুষটা জেগে ওঠে। তোর কথাগুলো সেই ভিতরের মানুষের কথা। ... কিন্তু এরকম বেশিণ ভাবনায় থাকলে আমিও কিন্তু মিন্টুর মায়ের মতো অসুস্থ হয়ে যাবো। ... মাথা থেকে চিন্তাটা ঝেড়ে ফেলে একটু ছেলেমানুষ হ। সাবিহা এসছিল।

তোর সাথে নাকি রাস্তায় দেখা হইছে। তুই নাকি বাসায় আসতে বলেছিস! তাই নাকি! আদনান একটু ভড়কে যায়। মেয়েটা বড় হয়েছে। ওদের সঙ্গে এখন কথা বলতে অনেক সাবধান হওয়া উচিৎ! কোন আচরণে কী ভেবে কী প্যাঁচ বাধে কে জানে। আর গ্রামের মানুষতো ১২ বছরকেও আঠার বছর বানিয়ে ফেলে।

হ্যাঁ আসতে বলেছিলাম, মানে এই আরকি, রাস্তায় দেখা হলো, বললাম বাসায় আসিস! ও আর কি বলল? - কই আর কিছু না। মা হয়ত ছেলের বিব্রতবোধটা টের পেলো। আদনানের কানটা গরম হয়ে ওঠে। বোধয় একটু লালও হয়। - ঠিক আছে, মা আমি একটু গোসলে যাচ্ছি।

... কেমনকরে যেন ভাবনায় সাবিহা নামের মেয়েটি ঢুকে পড়ে। আদনান চেষ্টাকরে যায়গা না দেওয়ার। লজ্জাও হয় কেন মেয়েটি বারবার ভাবনায় আসছে। ... ভেবে ভীষণ বিচলিত বোধ করে সে। তারপর চেষ্টা করে আসুক, আর তাড়াতে চেষ্টা করবো না।

এদিকে আদনানের সেলফোনটা বেজেইে চলছে। একবার থামার পর আবারও বাজল। এবার মা ফোনটা হাতে নিয়ে স্ক্রিনে দেখার চেষ্টাকরে জে.এ.এন লেখা। পরিচিত কারও নাম নয় বলে ফোনটা আর মা রিসিভ করেন না। আদনান বের হলে জিজ্ঞেস করে তোকে একজন ফোন দিয়েছিল... কী যেন নাম জ্যান, কে? আদনান সাধারণভাবেই ফোনটা হাতে নেয়।

কিন্তু লিস্টে নামটা দেখে চমকে যায়। জ্যানতো নয় এটা জান। আবারও তার বিব্রত হওয়ার দশা। মাকে সে কী বলবে? জ্যান? ওহ! হ্যাঁ মা জ্যান মানে জানুয়ারি! সংপ্তি! এই নামে মানুষ আছে নাকি? না, মানুষ নেই তবে... জ্যান বলে যেই মেয়েটা.. জিভ কাটে আদনান। একটা মেয়ে আছে আমাদের দুবছরের জুনিয়র, ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্রী ছিলতো, তাই ইংরেজি উচ্চারণ করে একটু অন্যভাবে, জানুয়ারিকে বলে জ্যান, ফেব্র“য়ারিকে বলে ফ্যাব, আগে আমাদের খুব বিরক্ত লাগতো; এখন অবশ্য ওকেই অনেকে অনুসরণ করে।

সবাই সংপে রাস্তায় আসছে মা! -হু -খেতে বস। তোকে নিয়ে একটু মার্কেটে যাবো। কিছু কেনা কাটা আছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।