নাজিল আযামীর ব্লগ সাইট
ঠিক ২বছর আগে এই দিনে এ দেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক কালো অধ্যায় রচিত হয়। প্রকাশ্য দিবালোকে লগি- বৈঠা দিয়ে তরতাজা মানুষদের পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করার জঘন্য দৃষ্টান্ত স্খাপিত হয় এদিন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সেদিন জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীদের উপর যে পৈশাচিক হামলা চালায় ইতিহাসে তা নজিরবিহীন। অন্ধকার যুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে একুশ শতকের বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের বর্বর পাষণ্ড নেতা-কর্মীরা। লগি, বৈঠা, লাঠি, পিস্তল ও বোমা হামলা চালিয়ে যেভাবে মানুষ খুন করা হয়েছে তা মনে হলে আজও শিউরে ওঠে সভ্য সমাজের মানুষ।
সাপের মতো পিটিয়ে মানুষ মেরে লাশের উপর নৃত্য উল্লাস করার মতো ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। এ ঘটনা শুধু বাংলাদেশেই নয়, গোটা বিশ্বের বিবেকবান মানুষের হৃদয় নাড়া দিয়েছে। জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব থেকে শুরু করে সারাবিশ্বে ওঠে প্রতিবাদের ঝড়। সে ঘটনা এ দেশের ব্যাপারে গোটা বিশ্বে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেয়। সে ২৮ অক্টোবরের পৈশাচিক ঘটনার মূল রহস্য আজো উদঘাটিত হয়নি।
বিচার হয়নি কারো। ২৮ অক্টোবরের নৈরাজ্যকর পরিস্খিতির পথ ধরে আসে ১/১১, তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান কেয়ারটেকার সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। ২ বছর হতে চললো সরকারের পক্ষ থেকে সেই নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
২০০৬ সালের ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রেডিও-টিভিতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। মূলত এ ভাষণ শেষ হওয়ার পরপরই দেশব্যাপী শুরু হয় লগি বৈঠার তাণ্ডব।
বিভিন্ন স্খানে বিএনপি-জামায়াত অফিসসহ নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি যেমন চালানো হয় পৈশাচিক হামলা, তেমনি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয় অনেক অফিস, বাড়িঘর, পুরো দেশব্যাপী চলে তাণ্ডবতা। পরদিন চারদলীয় জোট সরকারের ৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে বায়তুল মোকাররমের উত্তর সড়কে পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশ ছিলো বিকাল ৩টায়। সকাল থেকেই সভার মঞ্চ তৈরির কাজ চলছিল। হঠাৎ করেই বেলা ১১টার দিকে আওয়ামী লীগের লগি, বৈঠা ও অস্ত্রধারীরা জামায়াতের সমাবেশ স্খলে হামলা চালায়। তাদের পৈশাচিক হামলায় মারাত্মক আহত হয় জামায়াত ও শিবিরের অসংখ্য নেতা-কর্মী।
তাদের এই আক্রমণ ছিল সুপরিকল্পিত ও ভয়াবহ। এক পর্যায়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পল্টনের বিভিন্ন গলিতে ঢুকে পড়ে এবং নিরীহ জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের বেধড়ক পেটাতে থাকে।
সেদিন পুরো পল্টন জুড়ে ছিল লগি, বৈঠা বাহিনীর তাণ্ডবলীলা। লগি-বৈঠা আর অস্ত্রধারীদের হাতে একের পর এক আহত হতে থাকে নিরস্ত্র জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা। তারা শিবির নেতা মুজাহিদুল ইসলামকে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
লগি-বৈঠা দিয়ে একের পর এক আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করে জামায়াত কর্মী জসিম উদ্দিনকে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তারা তার লাশের উপর ওঠে নৃত্য-উল্লাস করতে থাকে।
সেদিন আওয়ামী লীগের লগি-বৈঠা বাহিনী শুধু জামায়াতের সভা পণ্ড করার জন্যই পৈশাচিক হামলা চালায়নি তারা জামায়াতকেই নেতৃত্বশূন্য করতে চেয়েছিল। তারা চেয়েছিল জামায়াতের সভামঞ্চে আগুন ধরিয়ে দিতে। প্রথম দফা হামলার পর তারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে থাকে।
আশপাশের ভবনের ছাদে উঠে বোমা ও বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রসহ অবস্খান নেয়। সভার শেষ দিকে মাওলানা নিজামীর বক্তব্য শুরু হলে তারা তাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পুনরায় হামলা চালায়। একদিকে ভবনের ছাদ থেকে বৃষ্টির মতো বোমা বর্ষণ করতে থাকে। অপরদিকে পল্টন মোড় থেকে গুলী ছুঁড়তে ছুঁড়তে লগি বৈঠাধারীরা সমাবেশের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা তাদের ঠেকাবার চেষ্টা করে।
এ সময় আওয়ামী অস্ত্রধারীদের ছোঁড়া গুলী মাথায় বিদ্ধ হয়ে রাজপথে লুটিয়ে পড়েন জামায়াত কর্মী হাবিবুর রহমান ও জুরাইনের জামায়াত কর্মী জসিম উদ্দিন। এ ঘটনায় জামায়াত ও শিবিরের ৬ জন নেতাকর্মী শহীদ ও শতাধিক আহত হন।
সেদিন জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে বায়তুল মোকাররমের উত্তর সড়কে বিকালে সমাবেশের জন্য সকাল থেকেই মঞ্চ তৈরির কাজ চলছিল। হঠাৎ করেই সকাল ১১টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা হাজী সেলিমের নেতৃত্বে লালবাগ থানা আওয়ামী লীগ লগি-বৈঠা হাতে বিশাল মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়ে আসে। মিছিলকারীরা ধর ধর বলে জামায়াত ও শিবিরের কর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
এ সময় জিপিও এলাকায় অবস্খানরত ১৪ দলের শত শত কর্মী লগি-বৈঠা নিয়ে তাদের সাথে যোগ দেয়। ১৪ দলের কর্মীরা প্রকাশ্যে গুলী বর্ষণ করে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের ওপর। মঞ্চ গুড়িয়ে দিতে এগিয়ে যেতে থাকে বায়তুল মোকাররম উত্তর সড়কের দিকে। এ হামলায় পিস্তলসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ডা. এইচবিএম ইকবাল ও তার বাহিনী নিয়ে যোগ দেয়। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ডা. ইকবালকে হাত নেড়ে নির্দেশ দিতে দেখা যায়।
তারপরই এক যুবককে ঘেরাও করে লগি-বৈঠা বাহিনী নির্মমভাবে পিটাতে থাকে। চতুর্দিক থেকে আঘাতে আঘাতে সে পড়ে যায় রাস্তার কিনারে। সাপের মতো লগি-বৈঠা দিয়ে তাকে পিটাতে থাকে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তার লাশের ওপর উঠে নারকীয় উল্লাস করে লগি-বৈঠা বাহিনী। বিকল্প পথে মঞ্চ দখলের জন্য বিজয়নগর, পল্টন মসজিদের গলি দিয়ে ঢুকে পড়ে লগি-বৈঠা বাহিনী।
যেখানেই দাড়িটুপি দেখেছে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তারা। শিবির নেতা মুজাহিদুল ইসলামকে তারা এ সময় পেয়ে যায় পল্টন মোড়ের কাছে। ঘিরে ধরে তাকে। লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে নরপিশাচরা। আঘাতে আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মুজাহিদ।
তারপর ঐ পিশাচরা লগি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নিজেদের জিঘাংসা চরিতার্থ করে।
আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের মুহুর্মুহু গুলীবর্ষণ, বোমা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের পর আহতদের সারি বেড়েই চলছিল। আহতদের জামায়াতের ঢাকা মহানগরী অফিসে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। গুরুতর আহতদের নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। দফায় দফায় হামলা চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত।
এ সময় বারবার পুলিশকে অনুরোধ করা হলেও তারা রাস্তার পাশে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। অনেক পুলিশকে সেদিন বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর চত্বরের ভিতরে অবস্খান নিতে দেখা যায়।
দুপুর পৌনে ২টার দিকে ১৪ দলের লগি-বৈঠাধারী সন্ত্রাসীরা হামলা জোরদার করে পল্টন মোড় থেকে সিপিবির অফিসের সামনে চলে আসে। এ সময় তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া কয়েকজন জামায়াত ও শিবিরের নেতা-কর্মীদের ধরে নিয়ে যায়। পুলিশ কাছে দাঁড়িয়ে থাকলেও তারা কোন ভূমিকা পালন করেনি।
একই সময় বিজয়নগর, পুরানা পল্টন মসজিদ গলিসহ আশপাশের এলাকা দিয়ে চোরাগোপ্তা হামলা চালাতে থাকে। দুপুর ২টার দিকে পুলিশ পল্টন মোড় ও বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর সড়কের কাছে অবস্খান নেয়।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বায়তুল মোকাররমের উত্তর সড়কে জামায়াতের সমাবেশ শুরু হয়। এ সময় পল্টন মোড়ের দিকে না হলেও বিজয়নগরসহ অন্যান্য এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে চোরাগোপ্তা হামলা চালাতে থাকে লগি-বৈঠা বাহিনী। বিকালে মাওলানা নিজামীর বক্তব্য শুরু হওয়ার ৪/৫ মিনিট পর ৪টা ৪৩ মিনিটে পল্টন মোড়ে নির্মাণাধীন র্যাংগস টাওয়ারের (বাসস ভবনের পূর্ব পাশের বিল্ডিং) ছাদ থেকে সমাবেশ লক্ষ্য করে ১০/১২টি বোমা নিক্ষেপ ও প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে দফায় দফায় গুলী ছুঁড়ে ১৪ দলের সন্ত্রাসীরা।
আবার শুরু হয় ১৪ দলের আক্রমণ। সমাবেশ ভণ্ডুল করে দেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে তারা। মাগরিবের আযানের পর পরিস্খিতি কিছুটা শান্ত হয়ে আসে যখন বিডিআর পল্টন মোড়ে অবস্খান নেয়।
ঘটনার শুরু থেকেই পুলিশের ভূমিকা ছিল রহস্যময়। পুলিশের উপস্খিতিতেই আওয়ামী লীগের আগ্নেয়াস্ত্র ও লগি-বৈঠাধারী সন্ত্রাসীরা জামায়াতের সমাবেশ স্খলে হামলা চালায়।
এ সময় পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। অসহায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের শত অনুরোধেও পুলিশ কোন ভূমিকা রাখেনি।
সেদিন জামায়াতে ইসলামী তাদের পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ করে বিকালে। সমাবেশ শেষ হওয়ার পরও নারকীয় আক্রমণ চলতে থাকে অব্যাহতভাবে। একটা পর্যায়ে শত শত নেতাকর্মী অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
সন্ধ্যার পর আক্রমণের ভয়াবহতা বাড়ার আশংকায় শংকিত হয়ে ওঠেন তারা। এরপর জামায়াত নেতৃবৃন্দ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তখন তিনি ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী হয়েই বিডিআরকে ঘটনাস্খলে আসার কথা বলেন। বিডিআর ঘটনাস্খলে আসার পরই পরিস্খিতি শান্ত হয়ে আসে।
২০০৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পল্টন ময়দানের মহাসমাবেশ থেকে আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা তার কর্মীদের লগি, বৈঠা নিয়ে ঢাকা অবরোধের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তারা এই আহ্বানের সাড়া দিয়েই আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের কর্মীরা লগি বৈঠা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ২৭ অক্টোবর থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। ২৮ অক্টোবরের ঘটনা ছিল তার নির্দেশেরেই চূড়ান্ত ফসল। শেখ হাসিনার এধরনের নিদের্শ নতুন কিছু নয়। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন ১টি লাশের পরিবর্তে ১০টি লাশ ফেলতে হবে। সে দিনও মুক্তাঙ্গনে আওয়ামী লীগের সভাস্খল থেকে বারবার ঘোষণা দেয়া হচ্ছিল, “জামায়াত শিবিরের উপর হামলা কর, ওদের খতম কর”।
১৪ দলীয় জোট ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল জলিল, তোফায়েল আহমদ, আবদুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, বারবার উত্তেজনাকর বক্তব্য দিয়ে হামলার জন্য তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীকে উৎসাহিত করছিল।
ঘটনার পরদিন জামায়াতে ইসলামীর পল্টন থানা আমীর এ.টি.এম সিরাজুল হক বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৬১(২৯/১০/০৬)। ধারা- ১৪৩/ ৩২৩/৩২৫/ ৩২৬/৩০২/ ৩০৭/ ১০৯/১১৪ দণ্ডবিধি। মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল, প্রেসিডিয়াম সদস্য তোফায়েল আহমদ, আ'লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম, আবদুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা রাশেদ খান মেননসহ ৪০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।
২৮শে অক্টোবরের পৈশাচিক ঘটনায় নির্মম শিকার শিবির নেতা সাইফুল্লাহ মুহাম্মদ মাসুম ৫ দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্খায় ২ নবেম্বর হাসপাতালে মারা যায়। পরদিন তার বড় ভাই শামসুল আলম মাহবুব বাদি হয়ে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হুকুমের আসামী করে। যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির নানক, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটনসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়।
এছাড়া ২৮ অক্টোবরের লগি বৈঠা বাহিনীর নির্মমতার শিকার খন্দকার মিজানুর রহমান বাদি হয়ে ১লা নবেম্বর পল্টন থানায় মামলা দায়ের করে।
মামলা নং-০১ (০১/১১/০৬)। ধারা-১৪৭/ ১৪৮/ ১৪৯/ ৩২৩/ ৩২৬/ ৩০৭/ ১০৯/ ১১৪/ দণ্ডবিধি। বাদি মিজানুর রহমান গুলীবিদ্ধ অবস্খায় দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এসব মামলার মধ্যে জামায়াত নেতা এটিএম সিরাজুল হকের দায়ের করা মামলার তদন্ত করে এসআই আরশাদ আলী। পরবর্তীতে ডিবির ইন্সপেক্টর এনামুল হাসান মামলার তদন্ত করে ৫ মাস পর ৪৬ জনকে অভিযুক্ত করে গত ১১ এপ্রিল আদালতে চার্জশীট দেয়।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে দায়ের করা মামলায় গত ২ বছরে ৪ জন তদন্ত কর্মকর্তা বদল করা হয়। মামলাটির এখন অধিকতর তদন্ত করছেন ডিবি'র এস আই মনির হোসেন। তিনি এ মামলার ৪র্থ তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে গত ১৩ মাস যাবত তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তার হাতে মামলার তদন্তভার দেয়া হয় ২০০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর।
ভয়াল ২৮ অক্টোবরের আজ ২ বছর হলো।
এ সময়ের মাঝে দেশে অনেক কিছুই হয়ে গেল। ১/১১ দেখলো দেশের জনগণ। রাজনৈতিক সংস্কার আর দুর্নীতি বিরোধী অভিযান দেশের কল্যাণের জন্য, দেশের মঙ্গলের জন্য নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। কিন্তু শহীদ সাইফুল্লাহ মোহাম্মদ মাসুমের মা শামসুন্নাহার রুবির এ কথার উত্তর কে দিতে পারবে, তাদের রক্ত পিচ্ছিল পথ ধরেই দেশের পট পরিবর্তন হয়েছে। এখন বড় বড় চোর ডাকাত ক্রিমিনালদের ধরা হচ্ছে, বিচারও দ্রুত শেষ করা হচ্ছে।
কিন্তু ২৮ অক্টোবর প্রকাশ্য দিবালোকে যারা মানুষ খুন করেছে তাদের এখনও কেন বিচার করা হয়নি? শহীদ জসিমের পিতা আব্দুর রশীদ খানের জিজ্ঞাসা ২৮ অক্টোবরের সিরিজ হত্যাকাণ্ডের বিচার কেন হবে না? এর চেয়ে লজ্জা আর দু:খের ঘটনা আর কী হতে পারে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।