আজ বর্ষা, তাতে কি। হোক না বর্ষা, শীত, বসন্ত কিংবা হেমন্ত। তাতে কিছুই আসে যায় না ওর। ও আমাকে হাসায়, কাদায়। ওকে যখন কিছু দিতে পারি ও আনন্দে থাকে।
আমাকে হাসি-খুশির বন্যায় মিষ্টি পানিতে ভাসিয়ে দেয়। যখন কিছু না দিতে পারি তখন ঠিক তার উল্টো। আমাকে কাদিয়ে ভাসিয়ে দেয় নোনা জলে। দেয়া না দেয়ার মাঝে বেশি মিল না থাকলেও শুধু একটা মিল আছে। আর সেটা আমাকে ভাসিয়ে দেয়া।
আর আমিও ভাসতে থাকি। বলতে পারেন ভেসে থাকতে হয়। না থেকে উপায় কি বলুন?
কেন এই ভেসে থাকা। কেন আমাকে ভেসে থাকতে হয়। কিংবা কেন আমাকে ভেসে থাকা নিয়ে সারা দিন চিন্তা করতে হয়, তার সঙ্গা আমি এখনও খুজে পাইনি।
জানি হয়ত খুজে পাবোও না। তাই এখন আর খুজি না। খুজতে চেষ্টাও করি না। কারণ যে চেষ্টার কোন ফল নেই সে চেষ্টা করে কোন লাভও নেই। তবুও মন মানেনা, মাঝে মাঝে হারিয়ে যায় গহীন অন্ধকারে শুধুই খুজতে, অন্য কিছুর আশায় নয়।
হয়ত ষাটউর্ধ্ব বয়স। এ বয়সে নাতি নাতনি নিয়ে আনন্দে থাকার কথা কিন্তু তা সে পারছে না। কেন পারছে না তাকে জিগ্গেস করিনি। কারণ আমি স্বার্থপর। তার না পারার কারণ শুনলে আমার মন খারাপ হবে।
আর আমি চাইনি তাকে দেখে যতটা মন খারাপ হয়েছে তার চেয়েও বেশি মন খারাপ হোক তার কষ্টের কথা শুনে।
তাকে যে ভাবে দেখেছি- হয়ত সকাল থেকেই বৃষ্টিতে ভিজছে। ঠান্ডায় সারা শরীর কাপছে। কাপুনির মাত্রাটা কত তা হয়ত আমার চোখ পরিমাপ করতে পারছেনা। আর তাই চোখ বার বার সরে যাচ্ছে তার শীর্ণ শরীরের কাছ থেকে।
হাতে যে টাকাগুলো রয়েছে তা ভিজে চুপচুপে হয়ে গেছে। ছেড়া ওই দুইটাকার নোটগুলো চলবে কিনা তা নিয়েও আমি সন্দিহান। তবে যে কটা একটাকার কয়েন রয়েছে সেগুলো একশত ভাগ নিরাপদ। অদ্ভুত ব্যপার হচ্ছে ভেজা কাপর দিয়ে চেষ্টা করছে নিজের মাথাটাকে নিরাপদ রাখার। কিন্তু তা পারছে না।
বার বার নিংড়ানো মাথার কাপড় বার বাররই ভিজেই দিচ্ছে তার ভাষায় ’মরার বৃষ্টি’।
তবুও আজ ওকে হাসতে হবে। সেটা হোক দুপুরে, বিকেলে, সন্ধায় কিংবা রাতে। কারণ হাসাতে না পারলে সারা রাত নোনা জলে নিজেকে ভাসতে হবে। এক সময় নোনা জলও ক্লান্ত হয়ে হয়ত থেমে যাবে।
আর সেই সঙ্গে থেমে যেতে পারে অনেক কিছুই।
কোথায় দিতে হবে? কি দিতে হবে? এ প্রশ্নের প্রথম উত্তর’পেট’ আর দ্বিতীয় ’খাবার’ । পেটই পারে হাসাতে কাদাতে। তার জন্যই আমরা হাসি-কাদি, ভাসি।
আজ থেকে কথা দিলাম আমার মন যতই মানুক আর নাইমানুক আমি আর ওই গহীন অন্ধকারে কখনই খুজতে যাবো না ভেসে থাকার সঙ্গা খুজতে।
বিশ্বাস করুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।