আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আশ্চর্যবোধক-প্রশ্নবোধক কিংবা সেমিকোলনের চিহ্নচ্যুতি

আত্মবিশ্বাসহীনতায় প্রকট হচ্ছে আত্মার দেউলিয়াত্ব, তবুও বিশ্বাস আগের মতই নিশ্চল..

[অন্ধকারের গতিপথও কদাচিৎ কপট আলোর বর্ণালী তৈরি করে বিভ্রান্তির সাপলুডু খেলে। এই যেমন দেশজুড়ে “মাদককে না” বলাটা যখন “শেীখিন লোকাচারের” সংস্করণে পর্যবসিত , তখন হঠাৎই দৃশ্যপটে “মহানায়ক ইয়াবার” আবির্ভাব(মহানায়ক বলার কারণ, বেশ কিছুদিন খবরের প্রধান শিরোনাম হয়ে থাকার পর আবার সেই হঠাৎ করেই লাপাত্তা!) হয়তবা এই ইয়াবাই মাদকবিরোধী কর্মশালার প্রধান পৃষ্ঠপোষক!ইয়াবাবিরোধী চিরুনি অভিযানে সরগরম সমগ্র রাজধানীতে গ্রেফতার হয়েছে বিভিন্ন মাপের অসংখ্য উকুন। মহানগর মূখ্য হাকিমের কার্যালয়ে তেমনই এক উকুনের জবানবন্দী গ্রহণ করা হয় নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের অব্যবহিত আগের দিন। কেমন ছিল হাকিমের নিষ্ক্রিয় হওয়ার পূর্বমুহূর্তগুলো..?] বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, আমরা সবাই বেঁচে থাকি প্রতীকি চরিত্র হয়ে। তবু নাম যদি কোন পরিচয়ের প্রাথমিক মানদণ্ড হয় সেক্ষেত্রে বলবো আমি হিমাদ্রী হাসান, যদিও সে নামেরও বহুনিচে আমার অবস্থান।

আপাতত আমি এক বৃন্তচ্যুত ফুল হয়ে স্থান পেয়েছি কারাগারের নোংরা ফুলদানিতে। এমনিতে হিমাদ্রীতেই যতি টানতে চাই , কেননা “জাতীয় পরিচয়পত্র” নিতে আমি অনাগ্রহী। মামলার শুনানীতে অপ্রয়োজনীয় হলেও নিজের সম্বন্ধে একটি পাদটীকা উল্লেখের তাড়না বোধ করছি; সেটি হচ্ছে আমার শিক্ষাগত দৌরাত্ম। বিষণ্ন সত্য হল এই যে আমি একজন ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র। স্যার,দয়া করে আপনার এই চোখের অতিপ্রসারণ রোধ করুন; হ্যা হ্যা শুদ্ধতা’রা নিজেদের অভয়ারণ্যেই পঙ্কিলতার প্রধান শিকার।

তাইতো ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র career, GRE, IELTS..,সবকিছু উপেক্ষা করে “ইয়াবা বন্ধু” হয়ে আজ আপনার আদালতে শাস্তির প্রতীক্ষায়। বলতে পারেন স্যার, মেধা কিভাবে মধ্যস্বত্বভোগী হয় স্বপ্নবুননের? মানুষের স্বভাবে বৈপরীত্যতা তার ছায়াসঙ্গীর মত। কিন্তু অজান্তেই আমার সে ছায়াসঙ্গী দৈর্ঘ্যে আমাকেও অতিক্রম করে গেছে। জীবনের প্রথমভাগে আমি যদি হই মুনীঋষি, তবে বর্তমানে এক নিশ্চল “মৃত ধুমকেতু”। সে সময় খেলাধুলা করতাম বাড়াবাড়ি প্রকারে,পড়াশোনা আরও বেশি এবং সে পাঠ্যাভ্যাস শুধু প্রচলিত পাঠ্যপুস্তকে সীমায়িত না থেকে চর্চিত হয়েছে জুলভার্ন,টলস্টয়,গোর্কীতে।

প্রাজ্ঞ লেখকের সংস্পর্শে নাকি সিদ্ধ লেখকের জন্ম হয়। তাইতো ২য় শ্রেণীতে পড়ার সময় ভবেশ রায়ের “বিশ্বের শ্রেষ্ঠ গুণীজন” পড়ার কিছুকালের মধ্যেই কালি-কলমের সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠে আমার। আপনি হয়ত এই কৌতুকটি শুনে থাকবেন স্যার_ ম্যালেরিয়া এবং কাব্যরোগ বাঙালী জীবনে অনিবার্য; দৈবক্রমে যদিওবা ম্যালেরিয়া এড়ানো যায়, কাব্যরোগ থেকে নিষ্কৃতি দুরস্থান!আমিও চিরন্তন বাঙালীই হয়ে উঠতাম যদিনা কিছু চমকপ্রদ সাফল্যে আমার লেখালিখি পরিশুদ্ধিতা পেত। রচনা প্রতিযোগিতায় সমগ্র স্কুলের মধ্যেই যখন প্রথম হই সে সময় আমি সবে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছি; সম্ভবত সে লেখাটি এমনই সম্মোহনী ছিল যে আমাদের তদানীন্তন প্রধান শিক্ষক অদ্যাবধি সেটি সংরক্ষণে রেখেছেন। কাকতালীয়ভাবে তখনকার জেলাপ্রশাসকের ছেলে ছিল আমার সহপাঠী এবং কোন এক পরিদর্শনে তিনি আমাদের স্কুলে এলে সেই রচনাটি তাকে পড়তে দেওয়া হয়।

পরবর্তী ঘটনা আমার জন্য হরিষে বিষাদ। একটিমাত্র বাক্যে তিনি আমায় শুভাশিস দেন-“আমি যদি ভুল না করি তুমি একদিন অ..নেক বড় হবে। ” হায়রে মানুষ! ভুল মানুষ হয়ে জন্ম নিয়েও ভুলের মোহেই কত্থক নৃত্য করে চলে আজীবন । সেই ভুল দেখানোর জন্য আমি বহুদিন যাবৎ তার বর্তমান ঠিকানা অনুসন্ধান করে চলেছি। মূলত তখন থেকেই সকলের ভাষ্যমতে আমি এক “প্রকৃতিদত্ত প্রতিভা”,সহস্রের মধ্যেও যে বিশিষ্টজন।

আমার কৈশোর পরিপূর্ণভাবে সুললিত হয় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সংস্পর্শে; ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত আমিই ছিলাম স্কুলশাখার প্রধানকর্মী। একইসঙ্গে “প্রাচ্যের আধুনিক সাহিত্য কেন্দ্র” নামে আমার নিজস্ব লাইব্রেরী গড়ে বন্ধুদের মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণ শুরু করি। এসময় আমার মাঝে হঠাৎ সণ্নাসরোগ ভর করে,সিদ্ধান্ত নিলাম সাংসারিক সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে কেবল জ্ঞানাণ্বেষণ করে নিজেকে আলোকিত করব। কিন্তু জানেনই তো প্রশংসায় বিগলিত হয়না শুধু দেবদূত ; প্রশংসার বৃষ্টিতে ভিজলে মানুষমাত্রই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয় । আমিও স্তুতিবাচকতার ইতস্তত পরিভ্রমণে অস্বাভাবিক superiority complex এ ভুগতে ভুগতে পারিপার্শ্বিক মানুষদের ভীষণ স্থূলবুদ্ধিসম্পণ্ন বিবেচনা করতে থাকলাম।

স্যার , আপনি হয়ত ভাবছেন এই দুর্ভাবনাই আমার পতনকে ত্বরাণ্বিত করেছে, অথবা এইসব গালগপ্পো মামলার কী কাজে আসবে?আর একটু ধৈর্য ধরুন, রোদেলা আকাশকে কিভাবে মেঘেরা হরিলুট করে সেটা বোধহয় আপনার জানা উচিৎ! আচ্ছা স্যার, আপনি মানুষ হিসেবে নিজেকে কত শতাংশ নম্বর দেবেন? আমি নিজেকে দেই৬৭; অবশিষ্ট ৩৩ এর মধ্যে আমার লক্ষ্য ১৬_ সর্বমোট৮৩, অর্থাৎ A+, কিন্তু ১৬ অর্জনের উচ্চাভিলাষে আমার ৬৭-ই হাপিস!ছেলেমি কথাবার্তা লাগছে?আমার মননের অভ্যন্তরে খনন করলে এখনও পাওয়া যাবে শিল্পকলার উচ্ছিষ্ট। স্যার,আমার পরবর্তী কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে, কারণ এর মধ্যে দিয়েই আমার খোড়া যুক্তিগুলো ক্র্যাচে ভর দিয়ে হাটতে হাটতে আপনার মনের শেষসীমায় পৌছে যাবে। ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত আমার কলাপ্রীতি কোন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়নি। অবশ্য আমার পড়ার ধরনটাও ছিল গতানুগতিক : চিত্রাঙ্কন ভীতির কারণে বইয়ের সব চিত্রসংবলিত প্রশ্ন এড়িয়ে যেতাম,কোন বিষয় সামান্য জটিল লাগলেই বোঝার বৃথাচেষ্টা রেখে তৎক্ষণাৎ মুখস্থ করে নিতাম। বিপত্তি ঘটল নবম শ্রেণীতে বিষয় নির্বাচনের প্রাক্কালে।

আমার প্রবল ইচ্ছা মানবিকে পড়ে ভাষাতত্ত্বে উচ্চশিক্ষাগ্রহণ, আর মা-বাবা-শিক্ষকবৃন্দ একাট্টা বিজ্ঞান বিভাগের। তাদের ভাষ্যে দুর্বল মেধার শিক্ষার্থীরাই কেবল মানবিকে পড়ে। আমি নির্বিবাদী-শান্তিপ্রিয় ছেলে, কিন্তু মেধা নিয়ে প্রশ্ন তুললে কিলিমানজারো হয়ে উঠি মুহূর্তের মধ্যে। ব্যস, বিজ্ঞানী(!)হয়ে গেলাম , যদিও দেহকাঠামো কৃষ্টির অস্থিমজ্জায় সমণ্বিত : বিতর্ক,সাধারণ জ্ঞান,রচনা প্রতিযোগিতা,নির্মাণ স্কুল ক্রিকেটের অধিনায়ক আর সমগ্র নিশুতি রাতে বইয়ের সাথে প্লেটোনিক ভালোবাসা... সবই চলে ম্যাগনেটিক ট্রেনের গতিতে। তবু ভালোবাসার মধ্যে রয়ে যায় অগণিত শূন্যস্থান: পদার্থ-রসায়ন-জীববিজ্ঞানের দুর্বোধ্য তত্ত্বগুলো আদ্যন্ত গলধঃকরণ করে পরীক্ষায় উদগীরণ করলাম, বাড়তি সহায়ক হিসেবে গৃহশিক্ষক ছিল ;সর্বোপরি নৈর্বক্তিক প্রশ্নতো আছেই।

আমার কাছে নিউটনের গতির সূত্র, পর্যায় সারণিকেও বাংলা বইয়ের প্রবন্ধ বলেই মনে হত। কাজেই জিপিএ ৫ পাওয়া এমন কী দুঃসাধ্য। একই পদ্ধতির পৌনপুনিকতায় এইচ,এস,সি-তে ৫ এর পুনরাবৃত্তি। আমার মেধা যেন মহাপ্লাবন বইয়ে দিল!অথচ আমিতো জানি আমার বহিরাবরণ যতটা আলোকজ্জ্বল, অন্তঃস্থল ঠিক সমপরিমাণ অন্ধকারাচ্ছন্ন, কারণ অন্ধকারকে আচ্ছাদিত করতে সমানুপাতিক আলোর দেয়ালই তো প্রয়োজন। স্যরি স্যার, বকবক একটু বেশিই হয়ে যাচ্ছে।

অবশ্য আজই তো আপনার শেষ ব্যস্ততম দিন। সত্যি করে বলুনতো স্যার, বিচার বিভাগ পৃথক হওয়াতে আপনি ঠিক কতটুকু সন্তুষ্ট? স্যার,এতক্ষণে একটি ব্যাপারে অন্তত সম্মত হবেন যে RANGS ভবনের বিধ্বস্ততার সঙ্গে আমার পদস্খলনের কার্যকারণগত অন্তমিল রয়েছে। তবে বিচার বিভাগীয় তদন্ত ব্যতিরেকেই সেই সাদৃশ্য আপনি অনুধাবন করতে পারবেন। চারবছরে আমার বিজ্ঞানী সত্তা(!)ওষ্ঠাগত , তাই এইচ,এস,সি’র পর ভাষাবিদ হওয়ার প্রাচীন অথচ অর্বাচীন স্বপ্নটির পুনর্জাগরণ ঘটল এবং যথারীতি পারিবারিক বিপত্তিতে ইচ্ছের বিরুদ্ধে ইঞ্জিনিয়ারিং এ -ই ভর্তি হলাম। পূর্ণতারই চিলেকোঠায় অপূর্ণতার বাস / আমরা সবাই ছদ্মবেশী হাসি-কান্নার দাস /থাক পড়ে থাক স্মৃতিচিহ্ন ,যতিচিহ্নের পটে/খেলতে খেলতে খেই হারালাম, ইচ্ছেনদীর তটে//- আসলে স্যার, ইয়াবার পার্শ্বক্রিয়ায় কথাবলার ভারসাম্যই নষ্ট হয়ে গেছে; যখন যা বলি নিজেই তার অর্থ খুঁজি।

যাহোক, ঘড়ির কাটার বিপরীতমুখী ঘূর্ণন শুরু হল কিছুকাল পরেই, কারণ আমার সঙ্গে যারা পড়তে এসেছে তাদের সবারই প্রথম পছন্দ ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং। দৌড়ে আসাফা পাওয়েলের সাথে কি স্টিফেন হকিংয়ের জেতা সম্ভব?আমারও পড়াশোনার ছন্দপতন ঘটল, যদিও নির্বাসন বলাই যৌক্তিক। স্কুল-কলেজে যেসব ছেলেকে তাকিয়েও দেখিনি, ওরাও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাল বিষয়ে ভর্তি হয়ে গেল। অন্যের সাফল্যে ঈর্ষাণ্বিত হওয়ার মত নীচু মানসিকতা আমার নয়, কিন্তু ওদের সাপেক্ষে আমার দুরবস্থা ক্রমেই হীনমন্যতায় রূপ নিল। সেই প্রকোপ থেকে আর সোজা হয়ে দাঁড়ানো হলনা।

অবশ্য ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সফল হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ ছিল, কারণ আমার মনে হয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রকৃত ব্যবহারিক দিকটি এদেশে উপেক্ষিত, ক্লাস করতে গিয়ে দেখলাম এখানেও সেই মুখস্থবিদ্যারই চর্বিত চর্বন। জীবনে এই প্রথম নিজেকে সূর্যসেন মনে হল আমার, প্রচলিত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হলাম; জীবনভর যদি মুখস্থই করি তবে ধড়ের উপরিস্থিত বিশাল খুপরিতে যে কিছুসংখ্যক বুদ্ধিবৃত্তি মজুদ আছে সেটির ব্যবহার কবে হবে, সৃজনশীলতাকে ধারণ না করি,অবজ্ঞা করব কতকাল? সুতরাং পড়াশোনা কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে পুরোদস্তুর লেখক-গৃহশিক্ষক হয়ে উঠলাম, সেই সূত্রে অর্থপ্রাপ্তি ঘটে চলল ত্রিমাত্রিক গতিতে। আর, অর্থ এলে অনর্থতো কিছু ঘটবেই। তাছাড়া মানসিকতায় আমি বরাবরই চরমপন্থী: এভারেস্টের চুড়ায় আরোহণে ব্যর্থ হলেও পাদদেশের অধিকর্তা অবশ্যই হব। তখন থেকেই নিজের সঙ্গে দ্বৈরথে নামি অধমের অধম হওয়ার।

নেশা,জুয়া,ব্যভিচার,ধর্ষণ,অপহরণ...সব করেছি। হলছেড়ে বহুরাতে মিশে গিয়েছি নৈশক্লাবের লাল-নীল আলোয়। সত্যি বলছি স্যার, অপরাধ করলে গ্লানির চেয়ে শতগুণ বেশি আনন্দ হয়। চাইলে করে দেখতে পারেন একবার, কথার সত্যতা পাবেন। দেখুন স্যার, আমি ইয়াবা ব্যবসায়ী কিংবা পাচারকারী কোনকিছুই নই; স্রেফ সেবনকারী।

তাই কিছুদিন পরেই যে মুক্তি পাব এতে আর সন্দেহের অবকাশ কই!তারচেয়ে বরং আমার আরও কিছু খামখেয়ালের গল্প বলি আপনাকে। মনস্তত্ত্বের প্রতি কি আপনার কোন আগ্রহ আছে?আমি জীবনে ৬৭জন মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছি শুধুমাত্র মনস্তত্তের চাহিদায়। বিজ্ঞানমনস্ক আর বিজ্ঞানমস্তিষ্ক প্রায়োগিক ক্ষেত্রে বহুদুরবর্তী দুটি শব্দ। বিজ্ঞান আমাকে মন্ত্রমুগ্ধের মত টানলেও মস্তিষ্ক তাকে সমর্থন যোগাতে অপারগ। তবুও এই পাংশু অদৃষ্টেরই যোজন-বিয়োজন-ব্যবধিকরণের প্রতিফলন আজকের আমি।

আরে, “অদৃষ্ট মামা” কে আমি চিরকালই কচুকাটা করেছি, ওকে এত গুরুত্ব দিয়ে নিজেকে হাস্যকর করছি কেন?স্যার,অন্তরে যাই হোন অবয়বে আপনাকে বেশ বিচক্ষণ বলেই মনে হয়। তাই আপনাকে আমার কয়েকটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসার আছে, উত্তর নিষ্প্রয়োজন। বলুনতো স্যার, মেধাবী হলেই কেন বিজ্ঞান পড়তে হবে; নিউটন-আইনস্টাইন যদি মেধাবী হন ডিকেন্স-মিল্টন কি নিতান্তই গড়পড়তা? বিভাগ নির্বাচন করবে কে- শিক্ষার্থী নাকি অভিভাবক?আমাদের শিক্ষাকে ধনুষ্টঙ্কার থেকে রক্ষা করার কি কোনই প্রতিষেধক নেই? আমি ইয়াবাসেবী হয়ে বড়জোড় নিজের ক্ষতি করছি, কিন্তু অভিভাবকদের গোয়ার্তুমিতে যে কত অসংখ্য তরুণ-তরুণী ঢেকি হজম করে মনোবৈকল্যে ভুগছে সেই অপরাধের শাস্তি কী? আমার মত আরও কেউ যে একইপথে হাটছেনা সে ব্যাপারে আপনি কতটুকু নিশ্চিৎ?- বলে রাখা ভালো আমি কিন্তু অপগণ্ডের মিছিলে এক শিক্ষানবিস মাত্র, কাণ্ডারীরা এখনো গণ্ডায় গণ্ডায় বিনষ্ট হচ্ছে। লেখাপড়া যদি আনন্দেরই সমার্থক না হল তবে সেই পড়ার কি আদৌ কোন প্রয়োজন আছে? শেষপ্রশ্ন-এইসব গোয়ার গোবিন্দ অভিভাবকদের নামে মামলা করলে কোন্ ধারায় করব, আপনি কি মনে করেননা স্বপ্ন সংকট সৃষ্টির কিছু শাস্তি তাদেরও প্রাপ্য? কিছু মনে করবেননা স্যার, আমি এক অভিশপ্ত বাক্য যার অন্তে কোন চিহ্ন জুটেনা। আমি হারিয়ে গেছি ঠিক যেভাবে হারায় সেমিকোলন উদ্ধরণে অথবা আশ্চর্যবোধক প্রশ্নবোধকে।

ধুত্তরি, কী সব বলে চলেছি,ইয়াবা না খেলে মনে হয় আর রক্ষে নেই। একমিনিট স্যার, আমার বহুবিধ শখের কথাই তো বললাম, একটি এখনো অপূর্ণ রয়ে গেছে; জেল থেকে বের হলেই সম্পণ্নকরব ইনশাল্লাহ । আমাকে ভুলে যাবেননা যেন ; দেখা হচ্ছে খুব শীঘ্রই । পাদটীকা: কিছুদিন আগে দৈনিকগুলোতে একটি বিশেষ খবর প্রকাশিত হয়েছিল এরকম: রাজধানীর জুরাইনে পানির ট্যাঙ্ক থেকে একটি অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অনসন্ধানের পর জানা গেছে নিহত ব্যক্তি একজন প্রথম শ্রেণীর হাকিম।

সম্ভবত পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা। ঘাতকের সন্ধান মেলেনি!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।