বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
চতুর্থ আমেনহোটেপ ছিলেন প্রাচীন মিশরের একজন ফারাও। মৃত্যু ১৩৩৬ খ্রিস্টপূর্ব। তাকে স্মরণ করার কারণ: তিনি মিশরে একেশ্বরবাদের সূচনা করেছিলেন।
এবং তার একেশ্বরবাদ হিব্রুবাসী ইহুদিদের প্রভাবিত করেছিল। ইহুদিরা এককালে মিশরে বন্দি ছিল আমরা জানি। মুসা নবী তাদের মুক্ত করে সিনাই উপত্যকায় নিয়ে গিয়েছিলেন। মুসা নবীর ওপর চতুর্থ আমেনহোটেপ-এর প্রভাবের কথাও কেউ কেউ বলে থাকেন।
সে যা হোক।
চতুর্থ আমেনহোটেপ-এর সময়ে মিশরজুড়ে আমুন-রে উপাসনা প্রচলিত ছিল। প্রাচীন মিশরের প্রধানতম দেবতা ছিলেন আমুন-রে। এমন কী তাকে থিবস নগরের রক্ষাকর্তাও মনে করা হত।
ফারাও চতুর্থ আমেনহোটেপ কী কারণে আমুন-রে উপাসনার পরিবর্তে একেশ্ববাদী “আতেন” উপাসনার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। আতেনকে মনে করা হত আলোর জীবনদায়ী শক্তি।
কাজেই আতেন ছিল সূর্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
ফারাও চতুর্থ আমেনহোটেপ-এর আমুন-রে উপাসনার পরিবর্তে একেশ্বরবাদী আতেন উপাসনার সিদ্ধান্তে সমগ্র মিশরজুড়ে আমুন-রেপন্থি পুরোহিতদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তারা একত্র হয়ে সশস্ত্র আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয়। ফারাও চতুর্থ আমেনহোটেপ পিছ-পা হননি। তিনি অসংখ্য আমুন-রেপন্থী উপাসনাকারী পুরোহিত ও আমুন-রে অনুসারীদের হত্যা করার নির্দেশ দেন!
একেশ্বরবাদ প্রতিষ্ঠায় রক্তপাতের সেই শুরু।
যে ধারাটি আজও অব্যাহত।
এখন প্রশ্ন এই-হঠাৎ ফারাও চতুর্থ আমেনহোটেপ-এর আতেন পূজার ভূত চাপল কেন?
....তিনি আতেন শব্দটার প্রতি এমন গভীর আবেগ বোধ করলেন কেন? আতেনের প্রতি গভীর আবেগের বশবর্তী হয়ে ফারাও চতুর্থ আমেনহোটেপ তার নাম পরিবর্তনেরও সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।
আমেনহোপেট থেকে আখেনাতেন।
আখেনাতেন মানে, “আতেন-এর দাস। ”
তারপর আখেনাতেন মিশরের রাজধানী পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেন।
মিশরের রাজধানী আগে ছিল থিবস, এখন নতুন রাজধানী হল- আখেটাটেন। আখেটাটেন মানে আতেন-এর দিগন্ত। (বর্তমানে এই জায়গাটির নাম আমারনা। )
ফারাও আখেনাতেন-এর উদ্যেগে ক্রমশ আখেটাটেন নগরটি হয়ে উঠল আতেন উপাসনার কেন্দ্রে। বিশাল বিশাল সব আতেন-মন্দির গড়ে তুললেন আখেনাতেন ।
ওদিকে আতনবাদী একেশ্বরবাদ প্রতিষ্ঠায় অসংখ্য আমুন-রে উপাসনাকারী পুরোহিত ও আমুন-রে অনুসারীদের গুমখুন চলছিল আখেনাতেন-এর নির্দেশে।
“আতেনের প্রতি সুমহান স্তব” নামে ধর্মীয়গ্রন্থও নাকি লিখেছিলেন ফারাও আখেনাতেন ।
আতেনপূজো হত খোলা সূর্যালোকে । বদ্ধ মন্দিরে নয়। আতেন মন্দিরে ছাদ ছিল না।
চারিদিকে কলাম। মাঝখানে নেফারতিতি দুহাত তুলে দাঁড়িয়ে। নেফারতিতি? হ্যাঁ। নেফারতিতি ছিলেন আখেনাতেন-এর স্ত্রী। আজও সৌন্দর্যর জন্য বিখ্যাত হয়ে রয়েছেন নেফারতিতি।
আতেন পূজায় আসক্ত ছিলেন জানা যায়। স্বামীর বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কজন নারী যেতে পারে? অনুমান করি- খোলা সূর্যালোকে দাঁড়িয়ে স্বামীর সঙ্গে আতন উপাসনা করতেন নেফারতিতি । নেফারতিতি সম্ভবত তার স্বামীকে একটা প্রশ্ন করেননি-আতেন-এর জন্য এত রক্তপাত কেন?
আগেই বলেছি, আখেনাতেন-এর একেশ্বরবাদ হিব্র“বাসীদের প্রভাবিত করেছিল। মনোবিজ্ঞানী সিগমন্ড ফ্রয়েড “মেজেস অ্যান্ড মনোথেইজম” (মুসা ও একেশ্বরবাদ) নামে একটি বই লিখেছিলেন। ফ্রয়েডের মতে: মুসা ছিলেন আতনবাদী পুরোহিত; আখেনাতেন-এর মৃত্যুর পর তাঁর অনুসারীসহ তাকে মিশর থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল।
ফ্রয়েডের মতে আখেনাতেন যা অর্জন করতে পারেননি-মুসা তাই পেরেছেন। ইহুদি ধর্মের সঙ্গে পরবর্তী সেমেটিক ধর্মসমূহের সাদৃশ্য স্পস্ট। কাজেই ইহুদিদের ঈশ্বর ও আখেনাতেন-প্রবর্তিত আতেন অভিন্ন।
কাজেই, মাঝে মাঝে আখেনাতেন কে আমার মৌলবাদের জনক বলেও মনে হয়।
সূত্র: উইকিপিডিয়া।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।