আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল!

আজ ২৯ এপ্রিল। ২২ বছর আগে ১৯৯১ সালে ঘটে যাওয়া সেই প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের কথা উপকূলবাসী তথা দেশের মানুষের কাছে এক ভয়াল স্মৃতি। এই ভয়ঙ্কর রাতে হাজার হাজার মা-বাবা হারিয়েছে তাদের প্রিয় সন্তানদের। পিতা-মাতা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে সন্তান। কেউ হারিয়েছেন গোটা পরিবার পরিজন।

ভেসে গেছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। ১৯৯১ সালের এই দিনের মধ্যরাতে আঘাত হানা ভয়াল ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছবাসে লন্ডভন্ড হয়ে যায় কক্সবাজার, মহেশখালী, আনোয়ারা, বাঁশখালী, পতেঙ্গা, শীতাকুন্ড, চকরিয়াসহ বিস্তীর্ণ উপকূলীয় এলাকা। সর্বোচ্চ ২২০ কিলোমিটার গতিবেগে বয়ে যাওয়া ঝড়, জলোচ্ছবাসে বিরান ভূমিতে পরিণত হয় ১৫ জেলার ২৫৭টি ইউনিয়ন। মারা যায় ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ। ঝড় ও জলোচ্ছবাসে ক্ষতি হয় ৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদ।

১৯৯১ সালের ঝড়-জলোচ্ছবাসে লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া উপকূল দীর্ঘ ১৯ বছর পরেও অরক্ষিত রয়ে গেছে। এখনও বাতাস বইলে উপকূলীয় জনগণ আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। এপ্রিল মাস আসলে উপকূলীয় এলাকার মানুষের মনে বেঁচে থাকার স্বপ্ন সংকুচিত হয়ে পড়ে। সমুদ্রের হিংস্র ভয়ানক হুংকারের রাতে ঘুমাতে পারে না অজানা শঙ্কায় ১ কোটি মানুষ। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছবাস মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারিভাবে উদ্যোগও যৎসামান্য।

যে কারণে উপকূলীয় এলাকায় জনমনে দেখা দিয়েছে উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ। '৯১ ঘূর্ণিঝড় পরবর্তীতে দাতা সংস্থাগুলো যে সাহায্য সহযোগিতা দিয়েছিল সেসবের সদ্ব্যবহার হয়নি সঠিকভাবে। ঐ সময় ৩৮টি দেশ থেকে ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার সাহায্য আসে। এই টাকায় উপকূলীয় এলাকায় সাইক্লোন সেন্টার এবং বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। বিদেশী অনুদানে ৩ হাজার ৬০০ সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণের কথা থাকলেও নির্মাণ হয়েছে প্রায় ১৯শ'।

নির্মিত শেল্টার কেন্দ্রগুলোর মধ্যে শতাধিক সাগরে তলিয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, '৯১ এর দুর্যোগের পর উপকূলীয় এলাকাসহ চট্টগ্রাম মহানগর রক্ষা করতে সরকার উপকূলীয় এলাকা রক্ষার উদ্যোগ নেয়। ১৯৯২ সালে প্রস্তাবিত বেড়িবাঁধের প্রকল্প ১৯৯৩ সাল থেকে বাস্তবায়ন শুরু করে। কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে চট্টগ্রামের মিরসরাই পর্যন্ত ২ শত কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিকল্পনা অনুযায়ী তা নির্মাণ হয়নি।

বেড়িবাঁধ নির্মাণের পর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দেয়। শহর রক্ষা বাঁধটির অবস্থাও করুণ। ভাংছে প্রতিদিন। এবার ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছবাস হলে পানি ঢুকে পড়বে নগরীতে। জলোচ্ছবাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পতেঙ্গার দক্ষিণ হালিশহর, আনন্দ বাজার, হালিশহর মুনিরনগর এবং ইপিজেড এলাকার বিভিন্ন শিল্প কারখানা।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উদাসিনতার কারণে ভাঙ্গন শুরুর প্রাক্কালে সংস্কার না করায় অনেক স্থানে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে বলে এলাকাবাসী জানান। দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী, কক্সবাজারের মহেশখালী, কুতুবদিয়া, আনোয়ারা, মিরসরাই এবং সীতাকুন্ডে বেড়িবাঁধ অরক্ষিত হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। তরিৎ গতিতে এসব বাঁধ পুনঃনির্মাণের দাবি জানিয়েছে উপকূলীয় জনগণ। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।