আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

@ আরিফুর: লড়াইয়ের ময়দানে পিঠ দেখানো যোদ্ধার ধর্ম নয়

তোমার অস্তিত্বে সন্দিহান, তবু্ও সদাই তোমায় খুঁজি

আরিফুর, আপনার চিন্তভাবনা কিংবা আদর্শের সাথে আমি অনেকটাই একমত। তবে আপনি যেভাবে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটান তার সাথে কোন সময়ই একমত ছিলাম না। আমার কাছে চরম নাস্তিকতা এবং চরম আস্তিকতা দু'টোকেই ভয়াবহ মনে হয়। বিনীত ভাবেই বলি, আপনাকে সবসময়ই আমার একজন চরম নাস্তিক বোধ করেছি। অবশ্য এর পেছনে একটা যুক্তি আছে বলেও মনে হয়।

ধর্ম মানুষের ব্যক্তিগত ব্যাপার। এটা ব্যক্তির চিন্তা-চেতনায়ই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। ধর্ম নিয়ে কখনই কথা উঠত না যদি না সেটা ব্যক্তিকে অতিক্রম করে রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হতে না চাইত এবং একে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য রাষ্ট্র প্রত্যক্ষভাবেই ভূমিকা পালন না করত। ধর্ম নিয়ে বিতর্ক বা এর বিরোধীতা এ কারণেই করা হচ্ছে যখন রাষ্ট্র একে প্রত্যক্ষভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করছে এবং একে কেন্দ্র করে এক শ্রেণীর লোক ফায়দা লুটছে। তবে বেশিরভাগ মানুষই আমার মতো নীচু স্বরে বিরোধীতা করছে।

নিজের স্বার্থহানি বা নিরাপত্তারহানির ভয়ে অনেকে এটাকে দেখেও না দেখার ভান করছে। আপনি হয়তো সেটা করতে পারছেন না। সেটাই আপনার সীমাবদ্ধতা। আরিফুর, ধর্মকে অবশ্যই টিকিয়ে রাখতে হবে। এটা টিকিয়ে না রাখতে পারলে বিজেপি'র মতো দলেরা কখনই ক্ষমতায় যেতে পারত না বা পারবেনা।

আপনি দেখবেন যে, রাম মন্দির ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিজেপি ক্ষমতায় গেলেও মন্দির কিন্তু নির্মাণ করেনি। কারণ মন্দির নির্মাণ করলেতো রাজনীতির ব্যবসা শেষ হয়ে যাবে। তেমনি আমাদের দেশেও মাজার ব্যবসার সমালোচনা অনেকেই করেন। কিন্তু এই মাজারকে উচ্ছেদ করার বিষয়ে কিছু বলেননা। কারণ এই মাজারকে কেন্দ্র করেই পরিচালিত হয় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড।

অনেক তথাকথিত প্রগতিশীল দলের নেতা/নেত্রীরাও মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে তাদের ভোটের রাজনীতি পরিচালনা করেন। তেমনি এই মাজারগুলোকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন তোলা লক্ষ লক্ষ টাকার পার্সেন্টিজও যে আমাদের প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতাদের পকেটে যায় না তার নিশ্চয়তাও বা কে দিতে পারবে? এগুলো কখনই বন্ধ হবে না। অনেকেই নীচু স্বরে এগুলোর বিরুদ্ধে বলেন। আপনার স্বরটা একটু উচু হয়ে যায়। এটাই আপনার সীমাবদ্ধতা।

বছরের পর বছর ধরে লালিত বিশ্বাস, স্বার্থ, সংস্কার ও চিন্তাকে মানুষ কোন অবস্থায়ই সহজে ত্যাগ করবেনা। পৃথিবীর ইতিহাস তার সাক্ষী। বরং এর বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে তারা আপনাকে অপদস্থ করা চেষ্টা করবে। হতাশ হওয়ার কিছু নেই। একজন সত্যিকারের যোদ্ধা কখনও হতাশ হয় না।

নিজরে উপর বিশ্বাস রেখে বিজয়ী হওয়ার আকাংখা রেখেই সে আজীবন যুদ্ধ করে যায়। আপনাকেও তাই করতে হবে। আরিফুর, এটাতো স্বীকার করবেন যে সমাজে আমাদের সংখ্যা খুবই নগণ্য। আমাদের সমর্থকও অল্প। যারা আছে তারাও নিরাপত্তা ও সন্মানহানীর ভয়ে ভীত।

কাজেই এতো অল্প লোকের মধ্য থেকে কোন অবস্থায়ই আমরা আমাদের এক সঙ্গীকে হারাতে চাইনা। আরিফুর, সাফল্য সহজে আসে না এবং এটাকে আয়ত্ত্ব করার জন্য কোন সময় বেধে দেয়া ঠিক নয়। যারা সাফল্যের জন্য সংগ্রাম করেন বেশিরভাগ সময়ই তারা এটা ভোগ করতে পারেন না। যারা আমাদের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন তারা এর স্বাদ ভোগ করতে পারেননি। ভোগ করছি আমরা পরবর্তী প্রজন্ম।

তেমনি আপনার প্রচেষ্টার সাফল্য আপনি না পেলেও ভবিষ্যত প্রজন্ম পাবে। আমি নিশ্চিত তারা পাবেই। আজ যারা উচ্চস্বরে কথা বলছে আমি নিশ্চিত একদিন তাদের কন্ঠ মিলিয়ে যাবে। আরিফুর ফিরে আসুন। লড়াইয়ের ময়দান ত্যাগ করা যোদ্ধার ধর্ম নয়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।