(এই গল্পটি সাপ্তাহিক এখন'' এ ঈদ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে)
ঈদুল ফিতরের নামায শেষ করে বের হয়েছি মাত্র মোবাইল অন করার সাথে সাথে ওর ফোন। কি তুমি আসবে না?
- আমার সহজ জবাব তোমার দেওয়া অপবাদ গুলো আজ গুচাতে হবে না? অপেক্ষা কর আমি আসব। আমারও যেন আর দেরী সহ্য হচ্ছে না। কিন্তু ওকে বুঝতে দিলাম না। সাথে সাথেই মোটর সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম ওদের বাসার উদ্দেশ্যে।
২০ মিনিটের রাস্তা হলেও আজ যেন শেষ হতে চাচ্ছে না। কেন যেন ওকে নিয়ে এলোমেলো অনেক চিন্তায় ডুব দিলাম। ওর মায়াবী মুখ আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে। চোখের সামনে থেকে কিছুতেই সড়াতে পারছি না।
বাসার চাদের উপরে সম্ভবত দাড়িয়ে ছিল।
সাইকেল থেকে নামতেই দেখি দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে।
-বললাম কি ব্যাপার, আমার জন্য দাড়িয়ে আছ নাকি?
-না এমনিতেই দাড়িয়ে আছি।
-বলেই হেসে চলে গেলে। আমি ভেতরে গিয়ে বসলাম। নাস্তা রেখে কোথায় চলে গেলে আমি খোঁজে পাচ্ছি না।
কিছুণ পর হঠাৎ সামনে এসে দাড়াল। আমি চমকে উঠলাম , চেনাই যাচ্ছে না ওকে। শাড়ী পড়াতে এমন সুন্দর লাগছে যে মনে হল হিন্দি সিনেমার নায়িকা সোনালীর মত দেখতে। দাড়িয়ে আছে আমার সামনে।
-দৃষ্টি আর্কষণের জন্য বলল কি ব্যাপার চেয়ে থাকবে নাকি কিছু বলবে?
-শাড়ীতে তোমাকে এত সুন্দর মানায় তা তো জানতাম না।
আর লাল টুকটুকে শাড়ীতে তোমাকে যেন বউ লাগছে।
- লজ্জায় মুখ ডেকে বলল, যাও বাড়িয়ে বলছ।
- তোমায় এই শাড়ী পড়াতে এত সুন্দর লাগছে যে মনে হয় তোমাকে বউ করে নিয়ে যাই।
- ও কিছু না বলে পালিয়ে গেল। মিনিট পাঁচেক পর ফিরে আসল।
হঠাৎ করে আমি দাড়িয়ে ওর ঠোটের উপর আমার ঠোট রেখে একটি চুম্বন করলাম।
- ও কিছু বলতে পারছে না। শুধূই কাপছে। আমি ওকে পাশের সোপায় বসিয়ে দিলাম। কতণ দু’জন এভাবে বসেছিলাম আমার মনে নেই।
হঠাৎ ওর ভাবি অর্থাৎ আমার চাচাতো বোনের ডাকে স্বপ্ন থেকে বাস্তবে ফিরে এলাম। তিনি বললেন তোমরা এভাবে বসে আছ কেন? সামনে যে নাস্তাগুলো ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে সেদিকে কোন খেয়ালই নেই।
আমি বসে ভাবছি। আসলে কি আমি ঠিক করেছি ওকো চুমু দিয়ে?
- কিছুণ পর আবার আসলো আমার কাছে।
- বলল হাতটা বাড়াও
- আমি হাত এগিয়ে দিলাম।
- একটি রৌপ্যের আংটি আমার আঙ্গুলে পড়িয়ে দিয়ে বলল আজ থেকে তুমি আমার। অন্য কারো নও। তোমাকে আমার করে নিলাম। বেধে দিলাম আংটি দিয়ে, যেন আর কেউ তোমার না হয়। ইমন আমি তোমাকে খুবই ভালবাসি।
- আমিও তোমাকে খুব ভালবাসি মৌ। তোমাকে ছাড়া আর কাউকে নিয়ে ভাবতে পারি না। তোমাকে নিয়ে ছোট্ট সুখের ঘর বাধতে চাই।
- ওর চোখ বেয়ে দু’ফুটা অশ্র“র গড়িয়ে পরা আমি অনুভব করলাম।
- নিজ হাতে মুছে দিলাম তার দুটি চোখ।
ও দুটি চোখ থেকে কোন অশ্র“ ঝড়–ক আমি চাই না। আমি মৌ কে আশ্বস্থ করলাম যে আমি ওকেই ভালবাসি। ওকেই বিয়ে করতে চাই। এ প্রতিশ্র“তি দিয়ে ওর কাছ থেকে বিদায় নিলাম।
বাসায় আসার পর কেন যেন মৌর কথা ভুলতে পারলাম না।
শুধু মৌ’র কথা বার বার মনে পড়তে লাগল। যার জন্য পড়া লেখাতে তেমন মনোযোগ দিতে পারতাম না। ভাবনাটা আরও বেড়ে গেল ওর হাতের আংটির দিকে চেয়ে। আংটির দেখলে অথবা যখন অনুভব করি হাতে আংটিটি পড়া তখন শত চেষ্টার পরও মৌকে ভুলে থাকতে পারি না। মনে হয় যেন যত তারাতরি পারি ওর কাছে যেন ছুটে যাই।
সমস্যা হচ্ছে পড়া লেখার জন্য আমাকে বেশ দুরে থাকতে হয় তাই ইচ্ছা করলেও যেতে পারি না। বেশী যাইও না হয়তো এত বেশী গেলে আপু কিছুটা বুঝবেন এর জন্য। আর ওর সাথে তেমন একটা কথা বলতে পারতাম না কারণ ওর কোন ব্যাক্তিগত মোবাইল ছিল না। ছিল ভাইর কাছে, মাঝে মধ্যে রাতে আমাকে মিসকল দিলে আমি কল ব্যাক করতাম।
ফেব্র“য়ারীর প্রথম দিকে মৌ ফোন করে জানাল যে ওর বিয়ের কথা চলছে আমি যেন কিছু একটা করি।
আমার বড় অমতা হচ্ছে বড় ভাই থাকায় আমি এমনিতেই বিয়ে করতে পারব না। কারণ তিনি বিয়ে করেন নি। আমারও পড়ালেখা শেষ হতে বছর খানেক বাকি তাই। ওকে ফিরিয়ে দেওয়া ছাড়া আমারার কিছু করার ছিল না।
মৌকে ফিরিয়ে দিলেও আজ ফিরিয়ে দিতে পারিনি ওর দেওয়া আংটিটি।
এখনও গভীর রাতে ওর দেওয়া আংটির দিকে চেয়ে থাকি।
...............................................
আরও প্রকাশিত ক'টি গল্প
পাগল হলেও মা Click This Link সাপ্তাহিক ২০০০
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।