জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com
প্রিয় রাসূলের পন্থায় ঈদ উদযাপন
ঈদ অর্থ ফিরে আসা। আমাদের জীবন জোড়া আনন্দগুলোর মধ্যে খুব কম সংখ্যকই বার বার ফিরে আসে। অথচ ঈদ এর ব্যতিক্রম। বার বার এ আনন্দ ফিরে ফিরে আসে বলেই এর নামকরণ হয়েছে ঈদ বা ফিরে ফিরে আসা খুশী। দয়াময় আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের জন্য বছরে দু’টি ঈদের বন্দোবস্ত করেছেন তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে।
আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন: “নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় আগমন করে দেখলেন, মদীনাবাসীরা দু’টি ঈদ পালন করছে। তা দেখার পর তিনি বললেন: (জাহেলিয়াতে) তোমাদের দু’টি দিন ছিল যাতে তোমরা খেলাধুলা করতে। এক্ষণে ঐ দিনের পরিবর্তে আল্লাহ্ তোমাদেরকে দু’টি উত্তম দিন প্রদান করছেন; ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার দিন। ” [সহীহ্ আবূ দাউদ (আলবানী): ১০০৪, নাসায়ী: ১৫৫৫] মুসলিম জীবনে বাৎসরিক এ দু’টি ঈদ ছাড়াও আরো একটি সাপ্তাহিক ঈদের দিন রয়েছে যা শুক্রবার।
ইসলামী জীবন ধারায় ব্যক্তির জন্য সর্বোচ্চ খুশী নিহিত রয়েছে তার প্রভু আল্লাহ্ তা’আলার সন্তুষ্টি বিধানে।
যার চর্চা ইসলামের বাইরে আর কোথাও দেখা যায় না। পূজা উৎসবসমূহ, নওরোজ, ক্রিসমাস ডে, ভালবাসা দিবস, জন্ম দিবস, বিবাহ বার্ষিকী ইত্যকার নানা উৎসবের লক্ষ্য উদ্দেশ্য নানা প্রকার এবং তার সবগুলোই জাগতিক কোন দেনা-পাওনার হিসেবে পালিত হয়ে থাকে। কিন্তু মুসলিম জীবনাচারের সবটুকু যেহেতু এই পৃথিবীই নয়; বরং তাদের জন্য পৃথিবী এক স্বল্পকালীন কর্মক্ষেত্র, তাই এ কর্মক্ষেত্রের একামাত্র উদ্দেশ্য এবং সর্বোচ্চ সাফল্য হলো তারা তাদের প্রভুর সন্তুষ্টি অর্জন করবে। আর তা সম্ভব তাদের প্রভু আল্লাহর বিধান মোতাবেক শুধুমাত্র তাঁরই জন্য জীবনের যাবতীয় কর্মকাণ্ড পরিচালিত করবে তাঁরই প্রেরিত রাসূলের দেখানো পন্থা-পদ্ধতি অনুযায়ী। মূলত এতেই লুকিয়ে রয়েছে মুমিনের অন্তরের খুশী, আনন্দ।
মুমিন তার স্রষ্টার আদেশ পালনের পর যে সওয়াব অর্জন করে থাকে এবং তার প্রতিপালকের সন্তুষ্টি অর্জন করে থাকে, তা-ই তার জন্য সবচেয়ে বড় খুশী বা বড় ঈদ যা বার বার তার জীবনের ফিরে ফিরে আসে এবং তাতেই তার সবচেয়ে বেশী খুশী হওয়া উচিত। আল্লাহ্ বলেন:
قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُونَ [سورة يونس: 58]
“আপনি বলুন, আল্লাহর এই অনুগ্রহ ও করুণা নিয়েই তাদেরকে খুশী হওয়া উচিত। আর তারা যা পঞ্জীভূত করে তা (অর্থাৎ দুনিয়া) অপেক্ষা এটি উত্তম। ” [সূরা ইউনুস: ৫৮]
এখানেই ব্যবধান মুসলিম এবং অমুসলিমদের ঈদ বা আনন্দের ধারনায়। মুসলিমের আনন্দ হয় তাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ লাভে, করুণার প্রতিশ্রুতিতে।
আর অমুসলিমদের ঈদ বা আনন্দগুলোর অধিকাংশই তাদের নিজেদের মনগড়া বা নিজেদেরই তৈরী। তাই তাতে যেমন খুশী তেমন কিছু করতে কোন দ্বিধা নেই; বরং তাতে নানা পরিবর্তনের পর পরিবর্তন এসে একসময় মূলত্বই হারিয়ে ফেলে। মুসলিম তা হারায় না, কেননা তার জন্য আনন্দও একটি ইবাদাত। যেমনটি চতুর্থ খলীফা আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলতেন: “যেদিন আমি আল্লাহর কোন নাফরমানী করি না, সেদিনই আমার জন্য ঈদ। ”
মুসলমানগণ তাদের ঈদের দিনে প্রধান যে কাজটি করে সর্বোচ্চ আনন্দিত হয়, তা হচ্ছে ঈদের নামায।
ইসলামী সংস্কৃতিতে ঈদের নামাযের প্রচলন শুরু হয় প্রথম হিজরীতেই। এ নামায দু’রাকা‘আত। হুকুমের ক্ষেত্রে কিছু মতপার্থক্য হয়েছে- কারো কারো মতে এটি ওয়াজিব আবার কারো কারো মতে সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্ এবং দু’পক্ষেরই মজবুত দলীল রয়েছে। সে বিতর্কে না গিয়ে বাৎসরিক এ আনন্দের দিনের সর্বোচ্চ খুশীর কার্য নামায আমার আদায় করে ফেলি, তাতেই আনন্দ, তাতেই আন্তরিক প্রশান্তি এবং তাতেই সাফল্য নিহিত।
ঈদের নামাযের জন্য গোসল করা:
ঈদের দিনে নতুন জামাকাপড়, আতর গোলাপজল, নানা প্রকার মিস্টি-পায়েস ও সুস্বাদু খাবারের সমাহারে অমুসলিমদের আনন্দ দিনের ন্যায় যেমন ইচ্ছে তেমন করার কোন সুযোগ নেই ইসলামে।
বরং মুসলিম জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ যেন খোদাই রয়েছে বিধানের পটে আর মুমিন ব্যক্তি তা দেখে দেখে ফেলবে প্রতিটি সফল পদক্ষেপ। তাই ঈদের দিনের আদাব সম্পর্কে ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত যে, “তিনি ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে যাবার জন্য গোসল করতেন”। [মুয়াত্তা মালেক: ৪২৮]
মিষ্টি বা খেজুর খেয়ে ঈদুল ফিতরের নামাযে যাওয়া:
এছাড়াও সাঈদ বিন মুসাইয়্যিব থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত যে, তিনি বলেন: “ঈদুল ফিতরের সুন্নাত হলো ৩টি- পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া, যাওয়ার আগে কিছু খাওয়া এবং গোসল করা। ” [ইরওয়াউল গালীল, আলবানী: ৩/১০৪]
আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন: “রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিন খেজুর খাওয়া ব্যতীত ঈদগাহে যেতেন না। আর তিনি বেজোড় খেজুর খেতেন।
” [বুখারী: ১/৪০২, নং-৮৯৯]
নতুন বা পরিস্কার পোষাকে ঈদের নামাযে যাওয়া:
তারপর নতুন কিংবা পরিস্কার উত্তম কাপড় পরে ঈদের নামাযে যাওয়া মুসলমানদের নবীর সুন্নাত। ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত যে, “নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের দিনে একটি লাল রঙা চেককাটা কাপড় পরতেন। ” [সিলসিলা সহীহ্, আলবানী: ১২৭৯] “ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ঈদের দিনে তার সবচেয়ে বেশী সুন্দর পোষাকটি পরিধান করতেন। ” [বায়হাকী: ৩/২৮১]
ঈদগাহে যাওয়া আসার সুন্নাত:
আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন: “ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া সুন্নাত। ” [সহীহ্ সুনানে ইবনে মাজাহ্: ১০৭১] আনন্দকে একটু একটু করে অনুভবের আনন্দই আলাদা।
পথে পথে প্রতিবেশী, স্বজনদের সাথে সাক্ষাত আর আতর-গোলাপের সুগন্ধে মৌ মৌ করা চারদিকের এত শোভা সৌন্দর্য তখনি পাওয়া যাবে যদি ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া যায়। সর্বোপরি আল্লাহর রাসূল পায়ে হেঁটে গিয়েছেন, তাই আমাদের জন্যও এ সুন্নাতের অনুসরণ করা উচিত।
এছাড়া ঈদগাহে যাওয়া আসার রাস্তায় আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরিবর্তন এনেছেন। আর জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন: “নবীসাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের দিন ঈদগাহে যাওয়া ও আসার রাস্তা পরিবর্তন করতন। ” [বুখারী: ১/৪১৪, নং-৯২৯]
মুসলিম মহিলারা ঈদ গাহে গিয়ে ঈদের নামায আদায় করতে পারবেন:
ইসলাম উদার এবং পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা।
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের আনন্দে জামায়াতের সাথে সালাত আদায় করার ব্যাপারে উম্মাতের মহিলাদেরকেও অনুমতি প্রদান করেছেন। ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন: “আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ কন্যা ও স্ত্রীদেরকে উভয় ঈদে ঈদগাহে বের হতে আদেশ দিতেন”। [আহমাদ: ১/২৩১]
তাকবীর দেয়া:
রোযার শেষ দিন সূর্যাস্ত যাওয়ার পর থেকে নিয়ে ঈদের নামায শুরু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করা বিধেয়। আল্লাহ্ বলেন:
وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
“যেন তোমরা নির্ধারিত সংখ্যা পূরণ করে নিতে পার এবং তোমাদেরকে যে সুপথ দেখিয়েছেন তার জন্য তোমরা আল্লাহর তাকবীর পাঠ কর এবং যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার। ” [সূরা আল বাকারা: ১৮৫] পবিত্র রমজান মাসের দীর্ঘ একমাস যাবৎ ইবাদাতের প্রতিদান এমন যে, তা অন্যকোন মাসে লাভ করা সম্ভব নয়।
এমনকি এ মাসে এমন এক রাত আল্লাহ্ আমাদেরকে দান করেছেন যা হাজার মাসের চাইতে উত্তম। তাই তাকবীরের মাধ্যমে আল্লাহর প্রশংসাকে উচ্চকিত করা উচিত এবং এর দ্বারা তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার সুযোগ আল্লাহ্ আমাদের জন্য সৃষ্টি করে দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ্।
এ তাকবীরের হুকুম হলো: এ তাকবীর পাঠ করা ওয়াজিব, তবে একবার পাঠ করলেই ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। [ইবনে হাযম: ৫/৮৯]
আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম উচ্চস্বরে তাকবীর পাঠ করতে করতে উভয় ঈদে বের হতেন। [সহীহুল জামেঈস সগীর, আলবানী: ৪৯৩৪]
এ তাকবীরের শব্দাবলী সম্বলিত বেশ কিছু বর্ণনা পাওয়া যায়, এখানে একটি বর্ণনা তুলে দিলাম।
ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তাকবীর পাঠ করে বলতেন:
الله أكبر، ألله أكبر، لاإله إلا الله والله أكبر، الله أكبر، ولله الحمد .
“আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ্। ” [ইবনে আবী শাইবাহ্: ৫৬৫০, ৫৬৫২]
খোৎবা শোনা:
খোৎবা শোনা মুসলিমদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কেননা তাতে দ্বীন এবং দুনিয়ার পরিস্থিতির আলোকে দিকনির্দেশনা বিদ্যমান থাকে। তবে ঈদের খোৎবার হুকুম জুম’আর খুৎবার মত ওয়াজিব পর্যায়ের নয়; বরং তা সুন্নাত। এ প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ্ বিন সায়েব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদা আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ঈদের নামাযে উপস্থিত ছিলাম। নামায শেষ করে তিনি বললেন: “আমরা খোৎবা দেব, সুতরাং যে ব্যক্তি খোৎবা শোনার জন্য বসতে পছন্দ করে সে বসে যাক্।
আর যে ব্যক্তি চলে যেতে পছন্দ করে সে চলে যাক্। ” [সহীহ্ আবূ দাউদ, আলবানী: ১০২৪, সহীহ্ ইবনে মাজাহ্, আলবানী: ১০৬৬, হাকেম: ১/২৯৫] সর্বোপরি আমরা সর্বোতভাবে সচেষ্ট থাকবো সামান্য ত্রিশ মিনিট বা ততোধিক সময় খোৎবা শোনায় ব্যয় করার জন্য।
পরস্পরকে মোবারকবাদ জানানো:
ঈদে এক মুসলমান অপরকে মোবারকবাদ জানাবে। এ প্রথা সাহাবাদের যুগ থেকেই প্রচলিত হয়ে আসছে। জুবাইর বিন নুফাইর বলেন: “আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবাগণ ঈদের দিন একে অন্যের সাথে সাক্ষাত হলে বলতেন: ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়ামিনক্’।
” [ফাতহুল বারী: ২/৫১৭] তথাপি আঞ্চলিক ভাবে প্রচলিত মোবারকবাদের শব্দাবলী দিয়ে মোবারকবাদ জানানো যেতে পারে, কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে যেন তাতে কোন ইসলামে বর্জনীয় শব্দ বা বিজাতীয় শব্দাবলীর অনুপ্রবেশ না ঘটে। তবে খাস করে ঈদী কোলাকুলি শরীয়ত বিধেয় নয়। যেমনটি ঈদের দিন কবরস্থানে গিয়ে কবর যিয়ারতকে বিদ’আত বলেছেন আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানী। [আহকামুল জানায়েয, আলবানী: পৃ২৫৮, মু‘জামুল বিদা‘: পৃ১৫৪]
ঈদের আনন্দ, খুশী প্রকাশ মুসলিম ঈদ আনন্দের এ স্বতঃস্ফূর্ত অংশ। আর ইসলামও এতে নিষেধ করেনি, তবে শর্ত হলো সেসবের সবগুলোই ইসলামের মৌলিকতা ও বিধি-নিষেধের সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারবে না।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন: “ঈদের দিন হাবশীগণ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদে যুদ্ধাস্ত্র (বর্শা) নিয়ে খেলা করত। কখনো বা আমি তাঁর(আল্লাহর রাসূলের) কাছে ঐ খেলা দেখতে চাইতাম। আর কখনো বা তিনি নিজে বলতেন: তুমি কি দেখতে চাও? আমি বলতাম: হাঁ। তারপর তিনি আমাকে আমার হুজরার দরজায় তাঁর পেছনে দাঁড় করাতেন। আমি (তাঁর আড়াল থেকে) তাঁর কাঁধের উপর দিয়ে ঐ খেলা দেখতাম।
তিনি তাঁর কাঁধকে নিচু করে দিতেন আর আমার গাল তাঁর গালের সাথে লেগে যেতেন। নিজ চাদর দিয়ে আমাকে পর্দা করতেন। আর খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে তিনি বলতেন: সাবাস্! হে বনী আরফিদাহ্! আর ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদের খেলা দেখতাম যতক্ষণ না আমি তা দেখা বন্ধ করতাম এবং দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে পড়তাম। তখন তিনি প্রশ্ন করতেন: যথেষ্ট হয়েছে? আমি বলতাম: হাঁ। তিনি বলতেন: অতএব চলে যাও।
” সুতরাং তোমরা আন্দাজ কর খেলা-প্রিয়া উদীয়মানা নব কিশোরীর খেলার প্রতি আগ্রহ কত। [আহমাদ, বুখারী: ৯৫০, ৫২৩৬, মুসলিম: ৮৯২, নাসায়ী]
আর সেদিন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “মদীনার ইয়াহুদ জেনে নিক যে, আমাদের দ্বীনে উদারতা আছে (এবং সংকীর্ণতা নেই)। নিশ্চয়ই আমি সুদৃঢ় উদার দ্বীনসহ প্রেরিত হয়েছি। ” [আহমাদ: ৬/১১৬, সিলসিলাহ্ সহীহ্, আলবানী: ৬/২/১০২৩]
আমাদের এ দ্বীন অনেক উদার, তবে এত উদারতার পরও যদি কেউ সীমালংঘন করে তবে তার জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তির সংবাদ। আল্লাহ্ আমাদের হেফাযত করুন ঈদের দিনে মুক্তি প্রাপ্ত অশ্লীল সিনেমা, নাটক, অনৈসলামিক গান-বাজনা, নারীপুরুষের অবাধ মেলামেশা ও এ জাতীয় অনুষ্ঠানাদিতে অংশ নেয়ার মত পাপাচার থেকে।
আনন্দ যেন পৃথিবী থেকে নিয়ে আমাদের অনন্ত পর্যন্ত বিরাজিত থাকে।
লেখাটি www.fazleelahi.com থেকেও পড়তে পারেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।