আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেই প্রভাষকের পিএইচডি প্রত্যাহারের সুপারিশ



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. নূর উদ্দিনের পিএইচডি ডিগ্রি প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল। গবেষণায় মনগড়া তথ্য সংযোজনের প্রমাণ পাওয়ায় তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য নাসরিন আহমাদ বলেন, পিএইচডি গবেষণা একটি সংগঠিত প্রক্রিয়া। নূর উদ্দিন যে ‘মেথোডলজি’ ব্যবহার করে গবেষণাটি করেছেন, তা বাস্তবে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। গবেষণাজুড়েই তাঁর মনগড়া কথা রয়েছে, যা খুবই হাস্যকর।

প্রায় ১৩ লাখের মতো মানুষের সাক্ষাত্কার নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। কিন্তু সেই সাক্ষাত্কার প্রক্রিয়ার পক্ষে তিনি তদন্ত কমিটির কাছে কোনো যুক্তি বা প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এমরান হুসাইন, দীল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, ফরিদ উদ্দীন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, সাব্বির আহমেদ ২০১২ সালের ১ জুন উপাচার্যের কাছে নূরউদ্দিনের পিএইচডি অভিসন্দর্ভটি পুনর্মূল্যায়নের জন্য আবেদন করেন। এ বিষয়ে ‘একজন শিক্ষক নিয়েছেন ১৩ লাখ মানুষের সাক্ষাত্কার!’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন ২০১২ সালের ১৭ জুন ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশিত হয়। শিক্ষকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের জুন মাসে নূর উদ্দিন ‘দি প্র্যাকটিসেস অব মার্ক্সসিজম অ্যান্ড দেয়ার ইমপ্যাক্ট অন মডার্ন ওয়ার্ল্ড: দ্য কেস অব অবজেকটিভাইজেশন’ শীর্ষক পিএইচডি অভিসন্দর্ভের গবেষণা শুরু করেন। ২০১১ সালের মে মাসে তিনি তাঁর অভিসন্দর্ভ জমা দেন। ওই বছরের ১০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট তাঁকে পিএইচডি ডিগ্রি দেয়। অভিসন্দর্ভে নূর উদ্দিন দাবি করেছেন, তিনি গবেষণা করতে গিয়ে বিশ্বের ৮০টি দেশের ১২ লাখ ৭৫ হাজার ৪৭ জনের সাক্ষাত্কার নিয়েছেন। সাক্ষাত্কারটি তিনি নিয়েছেন ইয়াহু ও হটমেইলের মাধ্যমে।

তাঁকে সাক্ষাত্কারদাতাদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ২০টি দেশের রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনার। সাক্ষাত্কার নিতে বিভিন্ন দেশে তিনি ২১ জন সহকারীও নিযুক্ত করেছেন বলে দাবি করেছেন। তিন বছরেরও কম সময়ে পিএইচডি গবেষণা সম্পন্ন করেছেন তিনি। অভিসন্দর্ভে উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী প্রতিদিন এক হাজার ১৬৪ জনের সাক্ষাত্কার নিয়েছেন তিনি। নূর উদ্দিনের পিএইচডি অভিসন্দর্ভের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন একই বিভাগের অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন।

অভিসন্দর্ভ মূল্যায়ন কমিটিতে ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবদুল মান্নান এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মকসুদুর রহমান। তত্ত্বাবধায়ক বা মূল্যায়ন কমিটির সদস্যদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাসরিন আহমাদ বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পিএইচডি অভিসন্দর্ভ তত্ত্বাবধায়ন ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, একাডেমিক কাউন্সিল পিএইচডি প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে। এ বিষয়ে সিন্ডিকেট এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

সৌজন্যে: প্রথমআলো

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।