আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাভিশনে শিরক?



বাংলাভিশন অনুষ্ঠান বিবেচনায় অনেক বেশী ডানপন্থী কিংবা ঐসলামিক, অনেক আগে বিটিভিতে কিছু অনুষ্ঠান হতো, কন্যা জায়া জননী, ইসলামের আলোকে নারী কিংবা এমন কিছু কিছু নারীভিত্তিক আলোচনাই হতো সেইসব অনুষ্ঠানে। একটি ইসলামী সমাজে নারীর ভুমিকা কি হওয়া উচিত, নারীর ইসলামি সমাজ গঠনে কি ভুমিকা রাখা প্রয়োজন এ সংক্রান্ত প্রশ্নের মীমাংসা এক অর্থে হয়েই গেছে। স্বামীয় অনুগামিনী হওয়া কিংবা স্বামীর বশ্যতা মূলত ইসলামী নারীর মূল ভুমিকা। ইসলামি আকিদা অনুসারে সন্তান পালন এবং তাকে ইসলামের দীক্ষা দেওয়া, জাগতিক মোহ এড়িয়ে ত্বাকওয়া অর্জন, এইসব বিষয়াদি সম্পর্কে আলোচনা চলছেই। কয়েক দিন আগে বাংলাদেশে হিজাব দিবস পালিত হলো, সেখানে উপস্থিত মহিলা পুরুষের সহাবস্থান প্রসঙ্গে একটা কথাই বলতে হয়, এটা মর্ডানাইজড ইসলাম, ইসলামের প্রকৃতির সাথে এর মিল নেই।

বুখারীর হাদিসের ভাষ্য অন্তত কোরাণের পরে সত্য মনে করা মানুষের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়, সুন্নাহভিত্তিক জীবন যাপন এবং সমাজ প্রতিষ্ঠার বক্তব্য দেওয়া কতিপয় জামাতমনস্ক উচ্চশিক্ষিত মানুষ হিজাব বিষয়ে কিছু বক্তব্য রেখেছেন, তারা বলেছেন হিজাব নারীকে সম্মানিত করে এবং হিজাব নারী নির্যাতন রোধ এবং রদ করতে পারে। তবে সুন্নাহ হিসেবে মেনে নিলেই বুখারী থেকে কুরান সংকলকের বক্তব্য ধার করতে হয়, তিনি বলেছেন আয়েশা সব সময়ই আমাদের সাথে পর্দার আড়াল থেকে কথা বলেছেন। যদিও উম্মুল মুমেনিন ঘোষণা দেওয়ার পরে নবীর স্ত্রীদের সাথে বিবাহিত সম্পর্ক স্থাপন অসম্ভব ছিলো এর পরেও আয়েশা জায়েদের সাথে পর্দার আড়াল রেখেছেন, আড়াল রেখেছেন অন্য সবার সাথেই, শুধুমাত্র পর্দার আড়াল ছিলো না তাদের সাথেই যাদের সাথে আয়েশার বৈবাহিক সম্পর্ক নিষিদ্ধ ছিলো মুহাম্মদের জীবিতকালে। হিজাব মানুষের অধিকার জাতীয় শব্দ যখন সামনে আসে তখন একটা বিষয় প্রতিষ্ঠিত হয়, নারীর এই অধিকার অর্জনে সমাজ কোনো না কোনো ভাবে বাধা সৃষ্টি করছে। মূলত বাংলাদেশের পরিস্থিতি কিংবা পরিবেশ এমন হিজাববিরোধী অবস্থানে পৌঁছে নি বরং অনেকটা হিজাববান্ধব সংস্কৃতি বাংলাদেশে।

প্রতিবছর হিজাবিদের সংখ্যা বাড়ছে। আজও বাংলাভিশনে একটা ইসলামী অনুষ্ঠান দেখলাম, কিশোর মনের কথা। মূলত সেই অনুষ্ঠান দেখেই ভাবনাটা মনে আসলো, যদিও নামে কিশোর তবে উপস্থিত বন্ধুরা প্রায় সবাই অনুর্ধ দশ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনুর্ধ সাতও হতে পারে, সুতরাং কিশোর মনের কথা অনুষ্ঠানে উপস্থিত বন্ধুদের বয়েসের সীমানা আদতে সাত থেকে সতেরো। এই বয়েসের ছোটো মেয়েদের বস্তায় জড়িয়ে টিভিস্টুডিওতে বসিয়ে রাখা অবশ্যই যুক্তিসম্মত, অন্তত টিভিসেটের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে তাদের ঠান্ডা লাগবার সমুহ সম্ভবনা ছিলো, কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো এই শিশুদের অনেকেরই এখনও পর্দার বয়েস হয় নি। সেই শিশু- কিশোরদের মনের কথা নিয়ে আলোচনায় উপস্থিত উপস্থাপক গাইলেন আল্লাহ যেমন সুন্দর তেমন সুন্দর তার পছন্দ- এখানেই আসলে জিজ্ঞাসার জন্ম- প্রথমত এই কথাটি ইসলাম সম্মত কি না? বিশেষণ হিসেবে আল্লাহর সাথে অনেককিছুই যুক্ত করা সম্ভব, তবে নিরাকার আল্লাহকে কোনো আকৃতি প্রদান কিংবা এমন কোনো উপমা দেওয়া যা কোনোভাবে আল্লাহর একটা প্রতিকৃতি তৈরি করে ইসলামি বিবেচনায় শিরক।

সুন্দর বিশেষণ হিসেবে বস্তুবাচক, নির্দিষ্ট কোনো বস্তুকেই আমরা সুন্দর অসুন্দর এমন বস্তুতান্ত্রিক বিবেচনা করি। আল্লাহ যেমন সুন্দর শব্দটার গুণবাচক প্রকৃতি কি রকম জানতে ইচ্ছা করে, মূলত সে জন্যই এই শিরকের বিরোধিতা করছি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।