খুকু ও বাঘের মাসি
খুকুঃ
বাঘের মাসি বাঘের মাসি
এই ধরেছি পা
গেলাশ ভরে দুধ এনেছি
খেয়ে দেখো না।
মাসিঃ
সকাল বেলা তাড়া দিলি
এখন কেন আদর?
তোকে আমি ভালোই চিনি
তুই যে কেমন বাদর!
খুকুঃ
সূর্য তোমায় পোড়ায় বলে
দিলাম তারে ধাওয়া
অমনি তুমি ভয়ের চোটে
হয়ে গেলে হাওয়া।
মাসিঃ
আমি কি আর রাজার রাণী
আছে আমার কম্বল?
এখান সেখান চুলোর পিঠে
রোদটা হলো সম্বল।
খুকুঃ
মাসি তুমি রাগ করনা
এই ধরেছি কান
একটা আমি পণ করেছি
রাখো আমার মান।
মাসিঃ
ক্যান রে বাছা কি হয়েছে
বল না আমায় খুলে
আয় না কাছে আদর করি
দুঃখ গেছি ভুলে।
খুকুঃ
বন ডাকাতে বাঘ মেরেছে
গাছ কেটেছে আজো
এই দেখো তাই রঙ এনেছি
তুমিই বাঘ সাজো।
মাসিঃ
তাই তো বলি ভাগ্নে আমার
দেয় না কেন হাক
জলদি খুকি আমার গায়ে
ডোরাকাটা আঁক।
তারপর কি হলঃ
দুজন মিলে বাঘ সেজে যে
গেল গহীণ বনে
বনের ভেতর রব উঠেছে
খুকুই বাঘের কনে।
মুরগী ও হাসের ছানা
মুরগী ছানাঃ
জগৎবাসী শোন কথা
এমন আবার হয়েছে নাকি
যে তোমারে কোল দিয়েছে
তারেই দিলে মস্ত ফাঁকি?
হাসের ছানাঃ
খোলস ভেঙে বাইরে এসে
যেই বলেছি মা
মাথা ঠুঁকে বললো আমায়
এখান থেকে যা।
মুরগী ছানাঃ
মা কি তখন বুঝতো ওরে
হবিরে তুই হাসের ছেলে?
তাহলে কি অমনি করে
নিজ বাছারে দেয় রে ফেলে!
হাসের ছানাঃ
মুরগী আমার ওমের মাতা
আমি হাসের পেটের ছা
দু’দিকেই টানছে আমায়
কোত্থাও তাই আর যাচ্ছি না।
মুরগী ছানাঃ
কোথায় তুমি ঘর বেধেঁছ
কোথায় তোমার গা?
ঘরের ছেলে ঘরে আসো
দূর গাঙেতে না।
হাসের ছানাঃ
মেঘনা পাড়ে এক ঝোপেতে
খড় বিচালির ছোট্ট বাসা
সারাবেলা ঢেউয়ে ঢেউয়ে
রাতের বেলায় দারুণ খাসা!
মুরগী ছানাঃ
খুঁদে কুড়োয় এই জীবনটা
আর তো প্রাণে সয়না
তোমার সাথেই ভাসান দেব
ফেলে সকল গয়না।
হাসের ছানাঃ
পালক আমার দূর ছুঁয়েছে
নিত্য ছাড়ি বাসা
দূরের খোঁজে খুঁজে মরি
পাবোই তারে আশা।
কাক
ও কাক বৃষ্টি ভেজা কাক
আমার এই লাল ছাতাটা রাখ
রেলিং ঘেসে আর দাঁড়াসনে
মায়ের শাড়ি আর মাড়াসনে
সকাল থেকে ভিজলে শেষে
মরবিরে তুই কেশে কেশে
এখন তবে খাবার খোঁজে যা
জ্বরের তাপে পুড়ছে সোনার ছা
বৃষ্টি মাঠে
ঝড় বাতাসে আকাশ থেকে
পড়লো একটা বল
তাইনা দিয়ে বৃষ্টি মাঠে
খেলছে ছেলের দল।
দুপুর বেলাই ছড়িয়ে গেল
কী অন্ধকার
সাপের ফণায় জ্বললো আলো
বাহ্ চমৎকার!
সবাই তো হায় নেংটিপুটু
যাচ্ছে না ঠিক চেনা।
এই খেলা তাই হবে নাকো
পেপসি কোলায় কেনা।
জংলা বাড়ি
জংলা বাড়ি এলাম যখন
তখন সবে সন্ধে
প্রাচীরগুলো ভেঙে গেল
বেলী ফুলের গন্ধে!
পকেট থেকে উড়াল দিল
সাদা রঙের পাখি
মাথার উপর ঘুরতে থাকে
যখন তারে ডাকি।
পায়ের ফাঁকে হিস্ হিস্ করে
গেল একটা সাপ
গোখরা ওটা হতে পারে
হলুদ রঙের ছাপ।
যেতে যেতে মস্ত দীঘি
জলে ভাসে চাঁদ
ও মা ডুবে গেলাম তলে
কে পাতালো ফাঁদ!
হঠাৎ করে ভেঙে গেল
দারুণ একটা ঘুম
দিদি বলে জলদি ওঠো
লাগলো পুঁজোর ধুম।
রকের সাথে লড়তে যাবো
হাতের ভেতর হাত থাকে না
পায়ের ভেতর পা
কোন এক দস্যি নাড়ায়-চাড়ায়
নিষেধ শোনে না!
হাঁটতে গেলে লম্ফ দিলো
পড়তে বসলে ঘুম
সুযোগ পেলে পাখনা গজায়
লাগলো ওড়ার ধুম!
এই করোনা সেই করোনা
সব খানেতে মানা
গিঁটে আমার বাত ধরেছে
হয়ে গেছি নানা?
এবার আমি যাবোই যাব
ধরতে একটা হাতি
শক্তি পেতে চুলোর ভেতর
হাতখানি তাই পাতি!
লক্ষ্মি সোনা ছানা পোনা
আর বলোনা আর
রকের সাথে লড়তে যাবো
ফুলিয়ে নিই ঘাড়!
অনিল বাবু
অনিল বাবু অলস দিনে
হাট খোলাতে যায়
পথের মাঝে পিছল খেয়ে
ভূতের মুতু খায়।
ভূতেরা সব হল্লা করে
কাদায় ঠুসে মাথা
ফিরতি পথে সবাই দেখে
পায়ের 'পড়ে ছাতা।
অনিল বাবু অমন ক্যানো
এদিক উঠে আসো
তোমার গিন্ন সিন্নি রাধে
নকল দাঁতে হাসো।
অনিল বাবু আর ওঠে না
ছাতা ধরেই থাকে
সুযোগ পেলে নাকি সুরে
কাকে যেন ডাকে।
ইমির লোভ
ইমির এতো তোয়াজ কেন
কি হলো রে তার
চাইছে যখন দাও না খেতে
বাচ্চা ভূতের ঘাড়।
মাছের মাথা মোষের মাথা
সব কিছুতেই না
দিনের বেলা ভূত পাবো কই
খাতায় এঁকে খা।
খাতার কথা শোনা মাত্র
ইরা নিয়ে পালালো
চাচা ব্যাটা জামা খুলে
পিঠটা শেষে বাড়ালো।
পিঠে কত ভূতের ছানা
দৈত্য দানো আঁকে
ধুত্তুরি ছাই হয়না খাওয়া
রাতের লোভে থাকে।
হাবু কাকা
রাতের বেলা হাবু কাকা
কাশে খক্ খক্
ভয়ের চোটে ইটগুলো সব
কাঁপে ঠক্ ঠক্।
র্দজা খুলে বাইরে দেখি
মস্ত একটা চাঁদ
আম্মু বলে যাসনে সোনা
ওরা ছোট জাত।
ঘুমের আশায় ভেড়া ছাগল
উল্টে পাল্টে গুনি
রাত্রি জেগে কাশির দমক
একলা একলা শুনি।
মেঘের খোঁজে
একটা নাকি আকাশ ছিল
মেঘের মতো ভাসতে পারে
নদীর পাড়ে কাশের বনে
ইচ্ছে মতো ফুটতে জানে
নৌকো গুলো জানতো সবই
চুপি চুপি আসলে আমি
চোখে মুখে জড়িয়ে যেতো
আম্মা বলেন শীত লেগেছে
লেপের ভেতর মুড়ে থাকো
আমার কেমন কাঁপন লাগে
শিমুল তুলো? মেঘের ধুলো?
বুনো বেড়াল বললো আমায়
মেঘ কোথা পাও? গত রাতে
আমিই ছিলাম কুয়োর ভেতর
মাছের আঁশে ফুটলো আকাশ
মোষের ঘাড়ে মেঘ পালালো
মেঘ কোথা পাই? মেঘ কোথা পাই?
আঁচড় খেয়ে আকাশ শেষে
নদীর ধারে ঘুরতে গেল
রাঙা বউটার আলতা ছুঁলো
দুয়োরাণীর দুঃখ বয়ে
মনটা তার কালো হলো
শুন্য ফুঁড়ে মেঘে মেঘে
আমার একটা আকাশ হলো।
মেঘ কোথা পাও? মেঘে কোথা পাও?
শিমুল তুলো? মেঘের ধূলো?
ইচ্ছে মতো মেঘ বানানো
কেউ জানেনা কেউ জানেনা
খালি পায়ে হয় যে শেষে
একা একা মেঘ মাড়ানো।
বনভোজন
মীম সীন রাধতে বসে
মাছটা কাটে সব্জি কোটে
আর রাধে ঝোল।
লাবিব ব্যাটা ঘুরে ঘুরে
লবণ চাখে ভেংচি কাটে
আর বাজায় ঢোল।
সারা দুপুর রান্না হলো
বাঘ শিয়ালও দাওয়াত পেল
আর এলো ভোল।
থালা চেটে বাসন চেটে
যে যার মাথায় ঢাললো শেষে
মিঠা পানির ঘোল।
বড় আম্মা
বড় আম্মার ঝুলে পড়া চামরা
ঘুমের ভেতর নেড়ে দিতাম আমরা
ফেকলা দাঁতে
দিনে রাতে
খোলা মুখে ঘুমে হতো খুন
মজা করে ঢেলে দিতাম নুন
বড় আম্মার বড়া পিঠা মজা
আচল থেকে লুকিয়ে দিত গজা
শোলোক কেটে
মশলা বেটে
পুকুর পাড়ে দিল গভীর ঘুম
উঠো মাগো দেব অনেক চুম
অনিতা
অনিতা রে অনিতা
চলে গেলি কই?
উঠোন ভেসে গেল রে
হাটু খানেক দই!
ডেকো না গো ডেকো না
তোমার ডাকে খুন।
আঁধার ঘরে দিলে হায়
মুঠো মুঠো নুন!
যুদ্ধ
একাত্তরে জয়ী হলেও
হলো ভীষণ হার
দিন দুপুরে ডাকছে শিয়াল
মটকে দিচ্ছে ঘাড়।
বড় বড় কথায় ব্যস্ত
উপর তলার লোক
চেটেপুটে খেয়ে শেষে
তুলছে বাঘের ঢোক।
আমরা যারা ুধায় মরি
অনাহারির দল
দিনে দিনে যাচ্ছি চলে
অমানিষার তল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।