'হেই মারো মারো টান হেইও', 'কোন মেস্তরি নাও বানাইল এমন দেখা যায়...' জনপ্রিয় এ রকম নানা গানের সুর, করতালের ঝনঝনানি আর দর্শকের করতালিতে মুখর হয়ে উঠেছিল সিলেটের ক্বীনব্রিজ-সংলগ্ন সুরমা নদীর তীর। নদীর দুই পাড়ের দর্শকদের মুহুর্মুহু করতালির সঙ্গে হেলেদুলে এগিয়ে চলছিল নানা রংয়ের নৌকা। গতকাল বিকাল ৪টায় নৌকাবাইচের এমনই দৃশ্য উপভোগ করল নগরবাসী। ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ দেখতে সুরমার দুই তীরে নেমেছিল মানুষের ঢল। রংবেরংয়ের বাহারি নৌকা, বাদ্যযন্ত্র, নাচ-গান আর মাঝিমাল্লাদের শোর-চিৎকার সব মিলিয়ে সুরমায় বইছিল উৎসবের আমেজ।
ইট-পাথরের যান্ত্রিক শহরে গ্রামীণ ঐতিহ্য নৌকাবাইচ দেখতে বেলা ১টা থেকে নগরীর প্রবেশপথ হিসেবে পরিচিত ক্বীনব্রিজে জড়ো হতে থাকে লোকজন। বেলা ২টার দিকেই সুরমার উভয় তীর লোকারণ্য হয়ে ওঠে। নৌকাবাইচ দেখতে ক্বীনব্রিজের ওপরও ভিড় করে উৎসুক জনতা। এ সময় ক্বীনব্রিজ দিয়ে যান চলাচল দূরের কথা পায়ে হাঁটাও দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে। বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার ব্যবস্থাপনায় ও বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশনের তত্ত্বাবধানে বিকালে আয়োজন করা হয় 'বাংলালিংক ষষ্ঠ সিলেট বিভাগীয় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা'।
ক্বীনব্রিজ-সংলগ্ন চাঁদনী ঘাটে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন সিলেট-১ আসনের এমপি, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, সিলেট সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র মোহাম্মদ শাহজাহান, বাংলালিংকের আঞ্চলিক কর্মকর্তা এস কে নূরে আলম। প্রতিযোগিতায় তিন ক্যাটাগরিতে ২০টি নৌকা সুরমার বুকে গতিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। এর মধ্যে কোষা নৌকা বিভাগে কোম্পানীগঞ্জের পুটামারা গ্রামের হানিফ মেম্বারের নৌকা, ময়ূরপঙ্খি ক্যাটাগরিতে গোলাপগঞ্জের ফকিরপাড়া কঠালপুরের পংকী মিয়ার নৌকা ও পূবালী ক্যাটাগরিতে বাংলালিংকের পক্ষে আফাজ উদ্দিনের নৌকা চ্যাম্পিয়ন হয়। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে রঙিন টেলিভিশন তুলে দেন অর্থমন্ত্রী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।