বাংলাদেশ ব্লগারস এসোসিয়েশন সদস্য নং: ১০ । facebook.com/milton3d
গতকাল অফিস থেকে বেরিয়েছি সন্ধ্যা ছয়টা দশের দিকে। কিছুদুর হেঁটে রিক্সায় উঠতে হবে। ভাবলাম আজ একটু তাড়াতাড়ি যেতে হবে কারণ বাসায় একটা জরুরী কাজ আছে। দাঁড়িয়েছি রোড ডিভাইডারের উপর।
ট্রাফিক সিগন্যালের অপেক্ষায়। ট্রাফিকের বাঁশির সাথে থেমে গেল গাড়ীগুলো। আমার সামনেই মটরসাইকেল দুজন আরোহী এসে থামলো। তার ডান পাশে আরেকটি মোটরসাইকেল থামলো। বাম দিকে তাকিয়ে দেখলাম, মোটা সাইলেন্সার পাইপের গর্জন তুলে একটা গাড়ী আসছে দ্রুত গতিতে।
এসেই গাড়ীর সামনের ডানপাশের বাম্পার দিয়ে সজোরে ধাক্কা দিলো প্রথম মোটরসাইকেলকে। ফলাফল, সেটির মাটিতে পতন দুজন আরোহীসহ, তার ধাক্কায় পড়লো পাশের একটি মোটরসাইকেল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ঘটনা। বড়জোড় ৭/৮ সেকেন্ডের মধ্যের পুরো ব্যাপারটি।
পড়ে যাওয়া মোটরসাইকেল আরোহীরা রাস্তা থেকে উঠে বাইকটি স্ট্যাড করে গাড়ীর ড্রাইভিং সিটে বাসা লোকটির কাছে কারণ জানতে চাইলো।
কালো পাওয়ারউইন্ডো গ্লাসটি খুলে একটি ২২/২৩ বছরের ছেলে চিৎকার করে উঠলো "মেরেছি তো কি হয়েছে? রাস্তার সাইডে খাড়াইতে পার না?" সাথে সাথে বাইক আরোহী তিন যুবক এর প্রতিবাদ করে উঠলো। কিছুক্ষণ তর্কাতর্কির পর যে যার স্থানে গিয়ে মোটরসাইকেলটির কি হয়েছে তা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো। প্রথম বাইকটির বামপাশের চেইনের জায়গাটি বাঁকা হয়ে গেছে। আর ঐ গাড়ীর ছেলেটি তখনও গালাগালি করে যাচ্ছে। বাইক আরোহীরা ঘুরে দাঁড়াতেই ড্রাইভিং সিটের ডিজুস মার্কা ছেলেটা ওদের একজনকে ধরে ঘাড়ের উপর কয়েকটা চড় দিলো এবং বিশ্রি ভাষায় গালাগালি করতে লাগলো।
এর ঘটনার আকষ্মিকতায় পুরো রাস্তার লোকজন স্তম্ভিত হয়ে গেল। আমরা সবাই থেমে গেলাম যে যার স্থানে। কারণ এত ছোট বয়সের ছেলে তার চেয়ে বড় বয়সের মানুষের গায়ে হাত তুলেছে। আর ঐ বাইক ওয়ালাদের আচরন যথেষ্ট মার্জিত ছিল।
এইবার আর যায় কোথায়? "পড়েছো মোঘলের হাতে খানা খেতে হবে সাথে।
" সাবার মনের মাঝে কয়েক সেকেন্ডের পুঞ্জিভুত রাগ গুলো একহয়ে রূপ নিলো একবিশাল ক্রোধে। ফলশ্রুতিতে বিশাল মার খেল গাড়ীর ভিতর বসে থাকা চার ধনীর দুলাল। দুর থেকে পুলিশও তাদের সমর্থন দিচ্ছে অঙ্গভঙ্গি করে। ট্রাফিক সার্জেন্ট এলো। সবাইকে নেয়া হলো রাস্তার পাশে খোলা জায়গায়।
তারপর হয়ত যা হবার তাই হবে।
কিন্তু একটা জিনিস খুবই দুঃখজনক ভাবে লক্ষ্য করা গেল, ঐ গাড়ীওয়ালা চারটি ছেলের আচরন এত খারাপ কেন? দোষ কিন্তু তারাই করেছে। এবং দোষটিও অনেক বড়। এক. বাজে ড্রাইভিং, দুই. মোটরসাইকেল ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া এবং তার ক্ষতিসাধন করা, তিন. গালিগালাজ করা বাজে ভাষায়, চার. বয়সে বড় লোকদের গায়ে হাত তোলা কোন কারণ ছাড়াই।
এই চারটি অপরাধ কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেনি নিশ্চই ওখানকার লোকজন।
মুহুর্তে জবাব দিয়েছে। প্রতিবাদ করেছে। অভিজাত এলাকার বাবা মায়ের বখে যাওয়া এইসব সন্তানরা ধরাকে সরা জ্ঞান করে সবসময়। এরা কখনই শাস্তি পায়না। রাস্তায় এবং সব জায়গায় এরা ক্ষমতার অপব্যবহার করতে চায়।
মূলত: এসব দেখছিলাম আমি রিক্সা ভাড়া ঠিক করতে করতে। রিক্সায় চড়ে বসলেও রিক্সাওয়ালা কিছুতেই রিক্সা ছাড়ছে না। ঐসব দেখছে। আমি তাকে বললাম, "আরে যান, এইসব দেখে টাইম নষ্ট করবেন নাকি? যা সাইজ করার দরকার পাবলিকই করেছে। "
রিক্সাওয়ালা ভাই আমার দিকে পিছনে ফিরে তাদের দিকে ভেংচি কেটে বলল, "বার বার ঘুঘু তুমি খাইয়া যাও ধান..............."
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।