"ব্লগকে সিরিয়াসলি নেবার কিছু নেই"...গরীব স্ক্রীপ্ট রাইটার
যেদিন ভার্সিটিতে আমাদের ওরিয়েন্টেশন হল অনেককে দেখলাম বাবামাকে সাথে করে নিয়ে গেছে। আমি একাই গেলাম। বোরিং প্রোগ্রামের পর মামুন স্যার আমাদের একটা ক্লাসে ডেকে কিভাবে কোর্স রেজিস্ট্রেশন করতে হয় তা বলে দিচ্ছিলেন। অনেক ঝামেলা মনে হয়েছিল। এরপর আমাদের আড়াইটায় একটা ক্লাস ছিল কিছু ছেলে মেয়ে ভাবল প্রথম দিন মনে হয় ক্লাস হবে না।
তাই বাসায় চলে গেল এবং যথারীতি এ্যাটেনডেন্স মিস করলো। ক্লাসটা ছিল কিংকু স্যারের। কিংকু স্যারের সাথে আমাদের ব্যাচের একটা অন্য ধরনের সম্পর্ক, আমাদের ব্যাচের আমরা যা কিছু জানি বা শিখেছি তার অধিকাংশই কিংকু স্যারের অবদান।
স্যারের ক্লাসে ঢোকার নিয়ম ছিল খুবই কঠিন। ক্লাসটাইম শুরুর ৫ মিনিটের মধ্যে ঢুকতে হবে না হলে না।
স্যার সবসময়ই টাইমে আসতেন। একদিন এক ছেলে ষষ্ঠ মিনিটে নক করলো দরজা, স্যার অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে দরজা খুলে বললেন, কয়টা বাজে? ও বলল, স্যার বাস আসতে দেরি করেছে আমি ঠিক টাইমেই আসছিলাম। স্যার বললেন, তাহলে কি আমি এখন বাস ডাইভার হবো তোমার জন্য?!!
আমরা মনে হয় ভার্সিটি লাইফের প্রথম rag কিংকু স্যারের কাছে থেকেই খেয়েছি। স্যার ফার্স্ট টার্মে কোন বইয়ের নাম বলেন নি, কোন শিটপত্রও দিলেন না। একে তো ফার্স্ট টার্ম সবাই খুবই সিরিয়াস তার মাঝখানে আমরা তেমন কিছুই বুঝি না।
আমরা খেয়ে না খেয়ে ক্লাস লেকচার লিখতাম। স্যারের অত্যাচারে আমাদের রাতের ঘুম হারাম থাকতো। স্যারের একটা কোর্সেই আমরা পুরা টার্ম হন্তদন্ত হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছি। রিপোর্ট জমার আগ মুহূর্তে উনি বিকালে ক্লাস ফেলতেন যাতে আমরা আরো একটু ডলা খাই। ফার্স্ট ইয়ারে থাকতে সেশোন্যাল ক্লাসে ৩০ মিনিটে একটা কেস দিয়ে বলতেন, সলভ করে প্রেজেন্টেশন দাও।
তখন আবার খেয়াল করতেন কোন গ্রুপ বেশি অগোছালো আছে, সেইটাকে প্রথমে প্রেজেন্টেশান দিতে বলতেন।
ভাইভাতে ডেকে স্যার অকথ্য ঝাড়ি দিতেন প্রথমে তারপর শেষের দিকে খুব সুন্দর সুন্দর ভাল উৎসাহমূলক উপদেশ দিতেন। সেন্ট্রাল ভাইভাতে স্যার পাকা রাসেলকে সব স্যার ম্যাডামদের সামনে প্যারট বলল। রাসেল বোকা না বুঝিয়া গর্ব করিতে লাগিল এবং বাহিরে আসিয়া আনন্দ করিতে লাগিল। আমাকে বললেন, RAB মানে কি? তাও রাবেয়া ম্যামের সামনে (রাবেয়া ম্যামকে আড়ালে সবাই RAB ডাকে এইটা স্যার জানতেন।
) আমাকে সিএসসি ডিসিপ্লিনের বাইনারী মাসুদ স্যার, জিজ্ঞেস করলেন, মেগা হলে ১০ এর পাওয়ার কত হয়? আমি বললাম, ৬। কিংকু স্যারের হাসি কি!! এর থেকে মজা তিনি জীবনে পান নি মনে হয় আমি ভাবলাম ঘটনা কি আমি তো ঠিকই বলেছি। পরে বুঝেছি এটাও rag
একাউন্টিং কে আমি গত ৪ বছর ভয়ই পেয়েছি । আমরা ফার্স্ট ইয়ারে একাউন্টিং পড়তাম ’০০ ব্যাচের নাসির ভাইয়ার কাছে। ভাইয়া বলতেন, তিনি নাকি আমাদের মত এত সিরিয়াস ফার্স্ট ইয়ার দেখেন নাই যারা ভার্সিটিতে উঠেও মডেল টেস্ট দেয়!!
ইংরেজি শিখে যদিও ভার্সিটিতে চান্স পেতে হয়েছিল আমাদের তবে আসল ইংরেজীর দৌড়ানি দিয়েছিল ইংরেজি ডিসিপ্লিনের ২ স্যার সরোওয়ার জাহান আরেকজন বায়োলজি স্যার (উনার আসল নাম খেয়াল নাই মাথা থেকে গলা পর্যন্ত এঁকে উনি যে কি বোঝাতেন আমরা তা বুঝতাম না ) এই ২জন অনেক ফাকি দিয়েছেন এবং পরীক্ষার সময় মেজাজ খারাপ করা প্রশ্ন খালি রাইটিংস ।
সেশোন্যাল এ অনেককে অনেক প্রশ্ন করার পর দিছে সি গ্রেড আর অনেককে ২/১ টা প্রশ্ন করে দিছে সি+
রাবেয়া ম্যামও বহুত জ্বালিয়েছেন সবাইকে। ম্যানেজমেন্টে সেবার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রিটেক খেয়েছিল এবং পরে তারা আবার ম্যামের কল্যানে রি-রিটেকও পেয়েছিল। ম্যাম ফাকিবাজ ছিলেন কিন্তু অনেক সুন্দর করে কথা বলতেন। এখন আর নাই ম্যাম।
ভাবছিলাম আমাদের rag নিয়ে লিখবো লিখলাম কি!!
এইটা আমার ১৫০ তম পোস্ট।
অনেক ভাল লাগছে আজ আমি সত্যিই আনন্দিত এবং আভিভূত প্রায় দেড় বছরও হতে চলেছে আমার এই ব্লগে। যদিও এটাকে ১৫০ তম করার জন্য আমাকে ২টা পোস্টকে ড্রাফট করতে হয়েছে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।